• রোববার ০৬ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ২১ ১৪৩১

  • || ০১ রবিউস সানি ১৪৪৬

বীরগঞ্জে দিনব্যাপী ব্যতিক্রমী মেলা

প্রকাশিত: ২৫ অক্টোবর ২০২৩  

 
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ব্যতিক্রমী মেলা হয়ে উঠে মিলন মেলায়। সমাগম হয় দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী, রাজশাহী ও নওগাঁও জেলার আদিবাসীদের অংশগ্রহণে। প্রায় দুশো বছরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে মেলার আয়োজন করেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সদস্যরা। স্থানীয়ভাবে এরা আদিবাসী বলে পরিচিত।

শারদীয় দূর্গাপুজার বিজয়া দশমীর একদিন পরে বুধবার দিনব্যাপী বীরগঞ্জ উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মিলন মেলায় উৎসবে মেতে উঠে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর তরুন-তরুনীরা। তবে মেলার আকর্ষণ হলো, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ছেলে-মেয়েরা এখান থেকে পছন্দের জীবনসঙ্গী খুঁজে নিতে পারেন। এখানে কোনো পাত্র বা পাত্রী পছন্দ হলে পরিবারের মাধ্যমে ধুমধামে বিয়ে দেওয়া হয়। 

এছাড়াও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন বয়সের মানুষের পাশাপাশি মেলায় বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় এই ব্যতিধমী মেলা। এটি অনেকের কাছে ‘বাসিয়া হাটি’ নামে পরিচিত। 

সরেজমিনে দেখা যায়, মেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সব বয়সী নারী-পুরুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বাহারি সব কাঁচের চুড়ি, রঙিন ফিতা, লিপস্টিক, কানের দুল, ঝিনুকের ও মাটির তৈরি তৈজসপত্র খেলনা, গৃহস্তালিকাজে ব্যবহৃত দা কুড়াল,হাড়ি পাতিলসহ বিভিন্ন খাবারের দোকানে পসরা সাজিয়ে রেখেছেন বিক্রেতারা। 

এ ব্যাপারে নওগাঁও হতে আসা তরুন সরু মার্ডি বলেন, একটা সময় এ মেলায় জীবনসঙ্গী খুঁজে নেওয়ার প্রচলন ছিল। তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় সব বদলে গেছে। এখন এই রীতিতে ভাটা পড়েছে।

একই কথা জানিয়ে পঞ্চগড় জেলার রীতা হেমরম বলেন, সময়ের সাথে আদিবাসীদের জীবন যাত্রায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। বেশির ভাগ আদিবাসী ছেলে মেয়েরা এখন বিদ্যালয়মুখী হয়েছে। তাই পুরনো ঐতিহ্যগুলি অনেকটাই মুছে যেতে বসেছে।  

মেলা আয়োজক কমিটি বীরগঞ্জ থানা আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সমিতির সদস্য শ্যামলাল মুরমু বলেন, পূর্বপুরুষরা এই মেলা শুরু করে। শুধু ধারাবাহিকতা রক্ষা করে যাচ্ছি। তবে কবে থেকে এ মেলার প্রচলন শুরু হয়েছে সেটি সঠিকভাবে বলা যাবে না। দু’শ বছর পুর্ব থেকে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বাপ-দাদার কাছে শুনেছি। মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে এলাকার সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। 

মরিচা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আতাহারুল ইসলাম চৌধুরী হেলাল বলেন, এই মেলা আমার পুর্ব পুরুষের আমল হতে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তবে আমি নির্বাচিত হওয়ার পর মেলাকে আরও আনন্দমুখর এবং বর্ণিল করার জন্য প্রয়োজনী সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –