মানবাধিকারে ইউরোপকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ
প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারি ২০২১

আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোর শরণার্থী বিষয়ক একটি খবর সারা বিশ্বের মানুষের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। চারদিকে বরফ, ঠান্ডায় জমে যাওয়ার অবস্থা, তার মধ্যেই বসনিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর বিহাকের পরিত্যক্ত বিভিন্ন ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন শত শত শরণার্থী। তারা অপেক্ষায় আছেন হয়ত কোনো এক সময় সীমান্ত পেরিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ ক্রোয়েশিয়ায় ঢুকে পড়ার সুযোগ মিলে যাবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশের দেশ মেক্সিকোর সীমান্তেও একই আবস্থা। শত শত শরণার্থী ওই দেশে প্রবেশের জন্য দিনের পর দিন সীমান্ত এলাকার বন জঙ্গলে লুকিয়ে থাকেন। কারণ আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলো মুখে মানবাধিকারের কথা বললেও বাস্তবে বিপন্ন শরণার্থীদের আশ্রয় দেন না। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বে মানবাধিকারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
মিয়ানমারের সেনাদের পরিকল্পিত আক্রমণে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ৭ লক্ষ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু প্রাণভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। এর আগেও এসেছেন আরো কয়েক লাখ। সব মিলিয়ে ১১ লাখ শরণার্থী বাংলাদেশে রয়েছে। শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে কক্সবাজারে জেলার হাজার হাজার কোটি টাকার বন-পাহাড় নষ্ট করে রোহিঙ্গাদের থাকার ব্যবস্থা করেছে। ভাসানচরে শত কোটি টাকা খরচ করে রোহিঙ্গাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। অথচ জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ইউরোপের দেশগুলো ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেয়ার বিরোধিতা করছেন। নিজেরা শরণার্থীদের নিজ দেশে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না অথচ বাংলাদেশের শরণার্থীদের নিয়ে মায়াকান্না করছে।
আয়নালের কথা মনে আছে? শিশু আয়নাল সিরিয়ার যুদ্ধের সময় বাবার সঙ্গে জীবন বাঁচাতে ইউরোপ যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। সাগরের তীরে মুখথুবড়ে পড়েছিল লালজামা পরা আয়নারের নিথর দেহ। আয়নালের সাগরে মারা যাওয়ার দৃশ্য আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রচার হওয়ায় তোলপাড় শুরু হয়। কিন্তু মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের তেমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি। বাংলাদেশের সরকার ও সাধারণ মানুষ বিপন্ন রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
জানতে চাইলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. নুরুল আমিন ব্যাপারী বলেন, বাংলাদেশে আইনের শাসন দুর্বল, জনগণের ভোটের অধিকার নেই এটা সত্য। কিন্তু মানবাধিকার রক্ষা ও মানবিকতায় বাংলাদেশ ইউরোপেকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। জানা যায়, এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য আর উত্তর আফ্রিকার শরণার্থীদের বড় অংশ ইউরোপে গিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছে। ইউরোপের ধনী দেশগুলোতে পৌঁছানোর চেষ্টায় তারা ২০১৮ সালের পর থেকে বসনিয়া হয়ে সীমান্ত পার হওয়ার ‘ট্রানজিট রুট’ ব্যবহার করছে। ইউরোপের দেশগুলো বিপন্ন মানুষকে যায়গা দিতে চাচ্ছে না। ফলে ইউরোপের সীমান্ত পার হওয়া ক্রমশ কঠিন হয়ে উঠেছে শরণার্থীদের জন্য। আর জাতিগত দ্বন্দ্বে বিভক্ত দারিদ্র্যপীড়িত বসনিয়া সরকারের এই সঙ্কট সামাল দেয়ার মতো অবস্থা নেই। ফলে বহু মানুষের জন্য সেখানে আশ্রয়ের ব্যবস্থাও করা যায়নি। রয়টার্সের খবরে শরণার্থীরা বলেছেন, ৬ মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে কেউ বাসের মধ্যে বসবাস করছি। এখানে আমাদের দেখার কেউ নেই। এ জায়গা মোটেও নিরাপদ না। যারা সাহায্য করার নাম করে আমাদের এখানে আসে, তারা আমাদের জিনিসপত্র নিয়ে যায়, তারপর সেসব জিনিস বিহাকের শরণার্থী ক্যাম্পে, নয়ত অন্য কোথাও বিক্রি করে দেয়। এখানে আমাদের আর কিছুই নেই, প্লিজ, আমাদের সাহায্য করুন।
খবরে বলা হয়, এ মুহূর্তে বিভিন্ন দেশের আট হাজারের মতো শরণার্থী বসনিয়ায় আশ্রয় নিয়ে আছেন। তাদের মধ্যে সাড়ে ছয় হাজারের ঠাঁই হয়েছে রাজধানী সারাজেভো এবং ক্রোয়েশিয়া সীমান্ত লাগোয়া বসনিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বিভিন্ন ক্যাম্পে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল গত সোমবার বসনিয়ার প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকা সার্ব নেতা মিলোরাদ দোদিকের সঙ্গে টেলিফোনে এ চিত্র তুলে ধরেন। তিনি শরণার্থীদের আরো বেশি মানবিক সহায়তা দিতে আরো বেশি আশ্রয়কেন্দ্র খোলার কথা বলেন। তিনি জানান, শরণার্থীদের একটি বড় অংশ এসেছে বিভিন্ন মুসলমান প্রধান দেশ থেকে। বসনিয়ার সার্ব ও ক্রোয়েট অধ্যুষিত এলাকা তাদের আশ্রয় দিতে রাজি নয়। বোরেলের অফিসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই শরণার্থীদের মানবিক সহায়তা দিতে ব্যর্থ হলে তা বসনিয়া-হার্জেগোভিনার ভাবমূর্তির জন্য ভালো কিছু হবে না।
বাইরে তুষারপাত হচ্ছে, অথচ তাদের অনেকের পায়ে দেখা গেল কেবল প্লাস্টিকের সিপার। পরিত্যক্ত ওই ভবনের নোঙরা কংক্রিটের মেঝের ওপরই তাদের ঘুমাতে হয়। শাহবাজ খান নামে আফগানিস্তানের এক নাগরিক (শরণার্থী) বললেন, জীবন এখানে বড়ই কঠিন।
বসনিয়ার শরণার্থী ক্যাম্পগুলো পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) বলেছে, তাদের ভ্রাম্যমাণ টিম বিহাক সীমান্তের কাছে নব্বইয়ের দশকের যুদ্ধে বিধ্বস্ত ও পরিত্যক্ত বিভিন্ন ভবনে আশ্রয় নিয়ে থাকা হাজার খানেক শরণার্থীকে সাহায্য দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তবে তাদের নিয়মিত খাবার দেয়া যাচ্ছে না। সেখানে চিকিৎসা সেবারও সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন আইওএম এর ক্যাম্প ম্যানেজার ও সমন্বয়ক নাতাশা ওমেরোভিক। মূলত গত সপ্তাহে ২৬ কিলোমিটার দূরে লিপা সামার ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে দেয়া হলে প্রায় ৯০০ শরণার্থী এই শীতের মধ্যে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন।
বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিত্র অন্যরকম। ১৯৬২ সালে বার্মাতে সেনা শাসনের শুরুর পর থেকেই রোহিঙ্গাদের ওপর নানা প্রকার অত্যাচার অব্যাহত থাকে। ১৯৭৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে রোহিঙ্গাদেরকে ভোটাধিকার দেয়া হয়নি। ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় ২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন বর্মী সেনাদের বর্বর হামলার কারণে। তাদের বাংলাদেশ আশ্রয় দেয়। ১৯৮২ সালে মিয়ানমারের সরকারিভাবে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব হরণ করা হয় এবং রোহিঙ্গারা একটি রাষ্ট্রহীন গোষ্ঠীতে পরিণত হন। তখন থেকেই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনায়াসে প্রবেশ করে জীবন যাপন করছে বিনা বাধায়।
‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ অত্যাধুনিক স্যাটেলাইট তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে যে ২০১৭ সালে রাখাইনে মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে প্রায় ৩০০ রোহিঙ্গা গ্রাম আগুনে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। যা আধুনিক যুগের সংঘঠিত সংখ্যালঘু আক্রমণ এবং জাতিগত নিধনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। প্রাণে বাঁচিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে গিয়ে শত শত রোহিঙ্গা শিশু এবং নারী নাফ নদীতে ডুবে মারা গিয়েছেন। শুধুমাত্র মিয়ানমারেই প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছেন।
জাতিগতভাবে মুসলিম হওয়াতে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী শুধুমাত্র যে মিয়ানমার- সেনা বাহিনীর হাতে নিগৃহীত হয়েছে তাই নয়; বরং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সমাজের একটি শ্রেণী থেকেও রোহিঙ্গারা গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন এবং আক্রমণের শিকার হয়েছেন। সেই রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের ধনীদেশগুলো মুখে মানবাধিকারের কথা বলে থাকেন। বাংলাদেশ ও ইউরোপের মধ্যে এই পার্থক্য পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।
– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –- ত্যাগী নেতাকর্মীদের দলে মূল্যায়ন করতে হবে: ড. হাছান মাহমুদ
- করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়ল ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত
- মির্জা ফখরুলেই অবিশ্বাস বিএনপির
- পৌর নির্বাচন: নাগেশ্বরীর কেন্দ্রে যাচ্ছে ভোট গ্রহণ সরাঞ্জামাদি
- কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে শীতবস্ত্র বিতরণ
- ‘দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই প্রধানমন্ত্রীর একমাত্র লক্ষ্য’
- নীলফামারীতে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে কম্বল বিতরণ
- উলিপুর পৌর নির্বাচন: ‘উন্নয়নের স্বার্থে নৌকায় ভোট দেয়ার আহ্বান’
- ডোমারে অসহায়দের পাশে দাঁড়িয়েছে ব্লাড ব্যাংক নিমোজখানা
- মুজিববর্ষ উপলক্ষে বাড়ী পাচ্ছে কিশোরগঞ্জের ১৪০টি পরিবার
- পৌর নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী পাচ্ছে না বিএনপি!
- জঙ্গি দমনে অনেকখানি এগিয়েছে বাংলাদেশ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- নুরুল হক নুর ‘পেইড এজেন্ট’
- জো বাইডেনের টিমে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ পেয়েছেন বাংলাদেশি জায়ান
- জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে আরো সেবা দেওয়ার উদ্যোগ
- পদ্মাসেতু ঘিরে তৈরি হয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা
- বিএসএফের আমন্ত্রণে মুজিবর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে বিজিবি
- ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ আরো পরিচ্ছন্ন-স্মার্ট হবে’
- মেয়ের বিয়ে দিতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে গলায় ফাঁস দিলেন বাবা!
- করোনা আপডেট: গত ২৪ ঘন্টায় দেশে আরও ১৩ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৭৬২
- দেশে আতঙ্কের নাম জামায়াত-শিবির -
- বাংলাদেশ থেকে পলিমাটি নিতে চায় মালদ্বীপ
- লালমনিরহাটে প্লেন তৈরি করবো, কোনো চিন্তা নেই- প্রধানমন্ত্রী
- `শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে`
- বাংলাদেশ সফরে আসা উইন্ডিজ ক্রিকেটার করোনায় আক্রান্ত
- কাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলেন শ্রীলেখা?
- ঘর থেকে বের হওয়ার দোয়া
- আমার সরকার মানুষের সেবক- প্রধানমন্ত্রী
- মার্কিন কবুতর অস্ট্রেলিয়ায়, ধরে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত
- রংপুরে ট্রেনে কাটা পড়ে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর মৃত্যু
- করোনা: দিনাজপুরে নতুন আরো ১৬ জন আক্রান্ত
- তুরাগ পাড়ে তৈরি হবে নতুন শহর
- পঞ্চগড়ে জাবিয়ান এর উদ্যােগে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ
- নীলফামারীতে ‘খাদ্যের নিরাপত্তা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত
- মুজিববর্ষ উপলক্ষে বাড়ী পাচ্ছে কিশোরগঞ্জের ১৪০টি পরিবার
- রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান কাদেরের
- মাথার চুল দিয়ে পিকআপ টেনে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলেন রবিউল
- প্রধানমন্ত্রীর উপহার ‘স্বপ্নের নীড়’ পাচ্ছে ১০৮৬ পরিবার
- বিশ্বের অন্যতম বর্ধনশীল অর্থনীতি বাংলাদেশের: বিশ্বব্যাংক
- বিএনপি আন্দোলনেও ফেল, নির্বাচনেও ফেল
- রংপুরে দালাল চক্রের ছয় সদস্য গ্রেফতার
- যারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবে তারা স্বাধীনতার পক্ষে- নানক
- আয়শা খানম’র অকাল প্রয়াণে কুড়িগ্রামে স্মরণসভা
- জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ৮.৫১ শতাংশ, বৈদেশিক কর্মসংস্থান হবে ৩৫ লাখ
- নতুন বছরে নতুন সুখবর: রফতানি হবে বিদ্যুত
- ছোট পাপের বড় ক্ষতি
- ট্রাম্প সমর্থকদের সশস্ত্র হামলার শঙ্কা
- ঠাকুরগাঁওয়ে সীমান্তে চোরাচালান বন্ধে জনসচেতনামূলক সভা
- পঞ্চগড় পৌরসভায় আ.লীগের প্রার্থী জয়ী
- শিশুদের চিকিৎসায় ১০ কোটি টাকা দিলেন প্রধানমন্ত্রী