• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

বীরগঞ্জ জাতীয় উদ্যান হারাচ্ছে পুরোনো জৌলুস 

প্রকাশিত: ১০ জুলাই ২০২১  

ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়কের পূর্বদিকে ছোট্ট রাস্তা দিয়ে এগিয়ে গেলেই চোখে পড়ে বীরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শালবনের মনোরম পরিবেশ। এটিকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। তবে নজরদারি ও সংস্কারের অভাবে দর্শনীয় শালবনটি হারাচ্ছে পুরোনো জৌলুস। এখন আর এ জাতীয় উদ্যানে দর্শনার্থী আসে না, বিচরণ করে গরু-ছাগল।

বীরগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাইজুদ্দিন বলেন, শালবনটি বীরগঞ্জ শহরের পার্শ্ববতী মাকড়াই এলাকাজুড়ে অবস্থিত। আমার জন্মের পর থেকেই শালবনটি দেখে আসছি। এখন চারপাশের শাল গাছ কেটে জমি দখল করে বাগানটি ছোট করে ফেলেছে প্রভাবশালীরা। চারা গাছগুলো কেটে ফেলার কারণে এখন আর গাছ বড় হতে পারে না।

তিনি আরো বলেন, অনেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাগানের মাটি-বালু নিয়ে পুকুর বানিয়ে ফেলেছে। এ কারণে অসংখ্য শালগাছ ভেঙে পড়েছে, হেলে গেছে অসংখ্য গাছ, হুমকির মুখে আছে বেশ কিছু শাল গাছ। শত বছরের পুরোনো গাছগুলো দেখলে মনে হয় বনের ওপর দিয়ে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বয়ে গেছে।

বীরগঞ্জ বন বিভাগের কর্মকর্তা গদাধর রায় বলেন, বীরগঞ্জ জাতীয় উদ্যান প্রায় মাকড়াই ও জগদল মৌজার ১৬৯ দশমিক ৬২ একর জমি নিয়ে গঠিত হয়েছে। ২০২০ সালের প্রথমদিকে আমি যোগদান করার পরে জেনেছি বাগানের আশপাশে প্রায় ৫-৬ একর জমি বেদখল হয়ে গেছে। যা আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। বাগান দেখাশোনা করার জন্য আমি ও একজন মালি ছাড়া কোন প্রহরী নেই।

তিনি আরো বলেন, সরকার বীরগঞ্জ শালবনটি জাতীয় উদ্যান ঘোষণার মূল লক্ষ্য ছিল বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ। সীমানা প্রাচীর না থাকা ও আশপাশের মানুষ, গরু-ছাগলের অবাধ বিচরণের কারণে আমাদের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। আমরা বনের পরিবেশ রক্ষা ও বন্যপ্রাণী বিচরণের জন্য ঔষধি গাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগাচ্ছি। এখানে আমাদের বসবাসের বাড়িগুলো অনেক আগেই নষ্ট হয়ে গেছে।

বীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মো. ইয়াসিন আলী বলেন, আওয়ামী লীগ ২০১১ সালের ২৪ ডিসেম্বর বীরগঞ্জ শালবনকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করে। এটি দেশের অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে লাখো মানুষ আসতো এখানে। বর্তমানে এ জাতীয় উদ্যান সংস্কার ও নজরদারির অভাবে চোর ও জুয়াড়িদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। মাঝেমধ্যেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কথা শোনা যায়। পৌর কর্তৃপক্ষ, আইনশৃখলা বাহিনী ও উপজেলা প্রশাসন সুনজর দিলে উদ্যানটি হারানো জৌলুস ফিরে পাবে।

বীরগঞ্জের ইউএনও মো. আব্দুল কাদের বলেন,শালবনের পূর্বপাশ দিয়ে বয়ে গেছে আত্রাই নদীর শাখা ঢেপা নদী, যা বনের সৌন্দর্য দ্বিগুণ করেছে। বীরগঞ্জ জাতীয় উদ্যানে শাল, বতে, বাশ, শিমুল, শিশু, সোনালুসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। শালই এ বনের প্রধান গাছ। এছাড়া এ উদ্যানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, সাপ, স্বরীসৃপ, বানর। আমরা মাঝেমধ্যেই শালবনে ছুটে যাই।

বীরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. মোশারফ হোসেন বাবুল বলেন, প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা বীরগঞ্জ শালবন পৌরবাসীর জন্য বিশাল পাওয়া। এটি এখন পযর্ন্ত বন বিভাগের আওতায় রয়েছে। বন বিভাগের অদূরদর্শিতায় বনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। বীরগঞ্জ জাতীয় উদ্যানের হারানো জৌলুস ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্টদের নিজ নিজ জায়গা থেকে উদ্যোগ নিতে হবে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –