‘আ মরি বাংলা ভাষা’
প্রকাশিত: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
বাংলাদেশ মানে বাঙালি, বাঙালি মানে বাংলা ভাষা, বাংলা ভাষা মানে ‘একুশ’ আর একুশ মানেই ‘মাথা নত না করা’। মূলত অমর ‘একুশ’-এর সূত্র ধরেই বাংলাদেশ নামক স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে বীর বাঙালি। এই বীরের জাতির প্রকৃত ভিত্তিসূত্র হলো ‘বাংলা ভাষা’।
ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যে অমিল থাকার পরও কেবলমাত্র ধর্মের দোহাই দিয়ে ১২০০ মাইল ব্যবধানের দুইটি পৃথক ভূখণ্ডকে এক করে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়। সমগ্র পাকিস্তানে ৫৬ শতাংশ মানুষের ভাষা ছিল বাংলা; অন্যদিকে ৭.২ শতাংশ মানুষ কথা বলতো উর্দুতে। সেই উর্দুকেই রাষ্ট্রভাষা করার জন্য নীলনকশা শুরু করে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী! কিন্তু বাঙালি জাতি তা হতে দেয়নি। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে শুরু হয় মিছিল-মিটিং-বিক্ষোভ-সংগ্রাম।
১৯৪৮ সালের ১৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ভাষা আন্দোলনকে বেগবান করার লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এক সাধারণ ছাত্রসভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলা ভাষার আন্দোলন একটি গণ-আন্দোলন হিসাবে ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র পূর্ববাংলায়। জনসভা, মিছিল আর স্লোগানে সমগ্র বাংলার মাটি প্রকম্পিত হয়ে ওঠে! রাস্তায়, দেওয়ালে দেওয়ালে পোস্টারে ছেয়ে যায়—‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’। ২১ মার্চ মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ রেসকোর্স ময়দানের সমাবেশে ঘোষণা করেন, ‘Let me make it very clear to you that the state language of Pakistan is going to be Urdu and no other language. Anyone who tries to mislead you is really the enemy of Pakistan….Therefore, so far as the state language is concerned, Pakistan’s shall be Urdu.’ শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর নেতৃত্বে উপস্থিত ছাত্র-জনতা এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানান। আন্দোলন দানা বাঁধে। ক্ষোভ-বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলার জমিন।
বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার প্রশ্নে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অনড় সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে বাংলায় আন্দোলন-সংগ্রাম চলতেই থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আন্দোলন দমনে ১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা জারি করে পাকিস্তান সরকার। রাতভর বিভিন্ন হল ও ছাত্রাবাসে চলে ১৪৪ ধারা ভাঙার প্রস্তুতিমূলক সভা। ২১ ফেব্রুয়ারি ছাত্ররা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় সমবেত হয়ে মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। ২১ ফেব্রুয়ারি ও ২২ ফেব্রুয়ারি পুলিশের গুলিতে শহিদ হন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর, আব্দুস সালাম, অলিউল্লাহ প্রমুখ। বহু নেতাকর্মী পুলিশি নির্যাতনের শিকার হন। প্রতিবাদে সারা বাংলায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বাধ্য হয়ে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দেয় পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী।
উল্লেখ করতেই হয়, বাঙালির রক্তে মুক্তির চেতনা জাগিয়ে তোলে ‘বাংলা ভাষার বিজয়’। পরবর্তী সময়গুলোতে পাকিস্তানি শোষকরা যখনই বাঙালির ওপর দমনপীড়ন চালিয়েছে, তার জবাবে রুখে দাঁড়িয়েছে বাঙালিরা। ৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে বিজয় লাভ, ৫৮-এর সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন করে রুখে দাঁড়ানো, ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলনে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা কিংবা ৬৬-এর ‘মুক্তির সনদ’, ৬৯-এর রক্তলাল সংগ্রাম ও ৭০-এর নির্বাচনে ভূমিধস বিজয়—চূড়ান্ত মুক্তিলাভের এই সিঁড়িগুলো পার হতে বাঙালিকে শক্তি জুগিয়েছে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনে সফলতা এবং এই ৫২-এর শক্তিতে বলীয়ান বাঙালি জাতি অস্ত্র হাতে তুলে নেয় ’৭১-এর রণাঙ্গনে। যে জাতি মায়ের ভাষাকে রক্ষার জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতে পারে হাসতে হাসতে, দেশমাতৃকাকে রক্ষার প্রশ্নে সে জাতি কতটা বুক চিতিয়ে লড়াই করে যেতে পারে, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তা দেখেছে গোটা বিশ্ব। এরপর আর ‘বাঙালি জাতি’কে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার দরকার পড়েনি বিশ্বমঞ্চে। বিশ্ব অঙ্গন বাঙালি ও বাংলাদেশকে আজ চেনে খুব ভালোমতো।
স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর সংবিধান প্রণীত হয়। এটি ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম বাংলা ভাষায় প্রণীত সংবিধান। বাংলা ভাষার পরিচয়-আখ্যানে নতুন পালক যুক্ত হয় ১৯৭৪ সালে। সে বছর ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়ে এক অনন্য নজির স্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু। জাতিসংঘের তথা, বিশ্বমঞ্চের মাইক্রোফোনে বাংলার সেই উচ্চারণ ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়ে যায়। বিশ্বসভায় বাংলাকে এর আগে কেউ এভাবে তুলে ধরেননি। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলার মর্যাদা বিশ্বে সুপ্রতিষ্ঠিত, সমুন্নত করেন তাঁরই সুযোগ্যকন্যা আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে ১৯৯৬ সালের ২৪ অক্টোবর জাতিসংঘের ৫১তম অধিবেশনে প্রথম বাংলায় বক্তব্য দেন। এরপর থেকে তিনি প্রতি বছর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সভা-কর্মসূচিতে বাংলায় বক্তব্য প্রদান করে আসছেন। বিশ্বে বাংলা ভাষার এই মহিমা নজর কাড়ে বিশ্ব নেতৃত্বের। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেসকো ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণা করে। এই মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষার কপোত খুঁটি প্রথিত হয় মহাবিশ্বের মাটিতে।
বর্তমানে ২১ ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে জাতিসংঘ সদস্যভুক্ত রাষ্ট্রে পালিত হয়—চাট্টিখানি কথা! বিশ্বের প্রায় ৩০ কোটি মানুষের প্রথম ভাষা বা মাতৃভাষা বাংলাকে জাতিসংঘের দাপ্তরিক ভাষামাধ্যম হিসেবেও বিবেচনা করা হচ্ছে। এই সংবাদ আমাদের পথচলায় সাহস দেয়, জোগায় অফুরাণ প্রেরণা। আজ পৃথিবীর বহু দেশে বাংলা ভাষার অনুশীলন হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তিতেও বাংলার ব্যবহার বেড়ছে ব্যাপকভাবে। বাংলা ভাষায় তৈরি হয়েছে, হচ্ছে নানা রকম অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়ার, অ্যাপস। সত্যিই, প্রাণের বাংলা ভাষার দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলার এই দৃশ্য আমাদেরকে গর্বিত, আপ্লুত করে।
১০ জানুয়ারি ১৯৭২ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘...ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার সময় আমি বলব, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা। জয় বাংলা।’ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলতে হয়—আহ! আ মরি বাংলা ভাষা।
লেখক: আব্দুল্লাহ্ আল-মামুন
পুলিশ সুপার, চুয়াডাঙ্গা
- হাবিপ্রবিতে কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন
- ফুলবাড়ীতে শিক্ষার্থীদের শরবত বিতরণ
- হাকিমপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই
- গ্রীষ্মকালে শীতল ত্বক : শসার মাস্ক
- মুসলিম উম্মাহর একাত্মতা ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে
- বাংলাদেশ-গাম্বিয়া জয়েন্ট বিজনেস টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব
- ডর্টমুন্ডের সঙ্গে এক যুগের সম্পর্ক ছিন্ন করছেন এই ফুটবলার
- ব্যাভিচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে পুরস্কার পেলেন ‘অভাগী’ মিথিলা
- হজের ক্ষেত্রে শয়তান যেসব ওয়াসওয়াসা দেয়
- মার্কিন বাহিনীর ওপর হামলার পরিকল্পনা ভেস্তে দিলো কুয়েত
- যেসব জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শনিবার বন্ধ থাকবে
- আমাদের কাছে সব প্রার্থী সমান: ইসি রাশেদা
- খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণের আহ্বান প্রধান বিচারপতির
- রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি চায় বাংলাদেশ-গাম্বিয়া
- সাত জেলায় দুপুরের মধ্যেই ঝড়-বৃষ্টির আভাস, নদীবন্দরে সতর্কতা
- ‘নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে হবে’
- বাংলাদেশ-ভারত আজ একই লক্ষ্যে এগোচ্ছে: সেলিম মাহমুদ
- ওরাল ক্যান্সার সম্পর্কে নাগরিকদের সচেতন হতে হব- প্রতিমন্ত্রী রিমি
- তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে মৃত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর
- জানা গেল এসএসসির ফল প্রকাশের তারিখ
- সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করছেন: প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান
- তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবিতে মৃত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর
- ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
- রাণীশংকৈলে ভুট্টাক্ষেত থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সুন্দরগঞ্জে ২৭ জনের মনোনয়ন দাখিল
- সর্বজনীন পেনশন স্কিম মেলা উপলক্ষে রংপুরে সংবাদ সম্মেলন
- বিভিন্ন দেশে নিষেধাজ্ঞার মুখে ভারতীয় খাদ্যপণ্য
- যে কারণে বিশ্বকাপ দল ঘোষণা করেনি বাংলাদেশ
- ৫৩ বছর বয়সে জীবনসঙ্গী খুঁজছেন মনীষা
- ইসলামের দৃষ্টিতে শ্রমিক মালিকের পরিবারভুক্ত
- সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ: অর্থমন্ত্রী
- দিনাজপুরের হাকিমপুরের হিলিতে শিক্ষক-কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট
- ৬ শতাধিক পটল গাছ উপড়ে ফেলল দুর্বৃত্তরা, দিশেহারা কৃষক
- বীরগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
- বীরগঞ্জে হবিবর রহমান স্মৃতি রোগ প্রতিরোধ গবেষণা কেন্দ্র উদ্বোধন
- ইস্তিসকার নামাজের সময় ও বিধি-বিধান
- ঈদের দিন বন্ধ থাকবে আন্তঃনগর ট্রেন
- গোর-এ-শহীদ ময়দানে ৬ লাখ মুসল্লির নামাজ আদায়
- টানা ৬ দিন বন্ধের পর হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানি শুরু
- দিনাজপুর জেলা ছাত্রলীগের ৫০০ বৃক্ষের চারা বিতরণ-রোপণ
- জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান
- দিনাজপুরে হলিল্যান্ড কলেজে ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
- রাইমা সেন কেনো হুমকি!
- দিনাজপুরে অনাবৃষ্টি আর দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে লিচুর মুকুল
- দাঁতের যন্ত্রণায় আইসক্রিম খেতে পারছেন না?
- রূপপুরে নতুন বিদ্যুৎ লাইন চালু মঙ্গলবার
- ঘোড়াঘাটে ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবস পালিত
- দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, পথেই ঝরল ২ প্রাণ
- রংপুরে ইসতিসকার নামাজ আদায়
- হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ৪ নির্দেশনা