• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

আইনি কাঠামোর আওতায় আসছে গভীর সমুদ্র

প্রকাশিত: ৯ এপ্রিল ২০২৩  

বিভিন্ন দেশের সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিজ্ঞানী, পরিবেশবাদী ও জাহাজ শিল্পসহ সব অংশীজনের মধ্যে প্রায় ২০ বছর ধরে চলা তীব্র বিতর্ক ও আলোচনার পর অবশেষে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো রাষ্ট্রীয় এখতিয়ারের বাইরে থাকা গভীর সমুদ্রাঞ্চলের জন্য একটি আইনি কাঠামোতে সম্মত হয়েছে। গত ৪ মার্চ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিরা জাতিসংঘ সমুদ্রবিষয়ক কনভেনশনের অধীনে একটি নতুন আন্তর্জাতিক চুক্তিতে সম্মত হয়েছেন।

সুবিশাল গভীর সমুদ্রাঞ্চলের পরিবেশগত ভারসাম্য নিশ্চিত করা, জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবহার এবং অন্যান্য মেরিন জেনেটিক রিসোর্সেসের (এমজিআর) যথাযথ নিয়ন্ত্রণ, ব্যবহার ও সুরক্ষা এই চুক্তির লক্ষ্য।

জাতিসংঘ সমুদ্রবিষয়ক কনভেনশন (ইউএনক্লজ-১৯৮২) অনুযায়ী, যেকোনো উপকূলীয় রাষ্ট্রের ভিত্তিরেখা বা বেইজলাইন থেকে ৩৫০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত সমুদ্রের তলদেশসংশ্লিষ্ট সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সংশ্লিষ্ট উপকূলীয় রাষ্ট্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু সমুদ্রের ২০০ নটিক্যাল মাইলের পর গভীর সমুদ্রের (হাই সি) জলস্তম্ভে জাহাজ চলাচল এবং মৎস্য আহরণ সব দেশের জন্য উন্মুক্ত। অর্থাৎ ২০০ নটিক্যাল মাইলের বাইরে গভীর সমুদ্রের জলস্তম্ভে ও সমুদ্র তলদেশের পরিবেশগত ভারসাম্য নিশ্চিত করা, জীববৈচিত্র্যের টেকসই ব্যবহার ও সংরক্ষণ এবং অন্যান্য মেরিন জেনেটিক রিসোর্সেসের (এমজিআর) নিয়ন্ত্রণ উপকূলীয় রাষ্ট্রের এখতিয়ারবহির্ভূত।

গভীর সমুদ্র আমাদের এই পৃথিবীর প্রায় অর্ধেকজুড়ে। এটা বিশাল, মূল্যবান এবং মানবজাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা পৃথিবীকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বৈশ্বিক উষ্ণতা থেকে রক্ষা করে, অক্সিজেন তৈরি করে, কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে, তিন বিলিয়নেরও বেশি মানুষের জন্য প্রাথমিক প্রোটিন সরবরাহ করে এবং ৬০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের জীবিকা নির্বাহে কোনো না কোনোভাবে অবদান রাখে।

চুক্তির শর্তাবলির অধীনে গভীর সমুদ্রে চলাচল করার সময় জাহাজগুলোকে কঠোর প্রবিধান মেনে চলতে হবে। এই প্রবিধানে অতিরিক্ত মৎস্য আহরণ প্রতিরোধ এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষার বিধান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। উপরন্তু চুক্তিটি সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা তৈরি এবং গভীর সমুদ্রে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমিত করার ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানায়।

এই বিশাল এলাকার জন্য একটি আইনি দলিল প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে জাতিসংঘের অধীনে গঠিত প্রিপারেটরি কমিটি বিষয়ক একটি প্রস্তাবনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে পেশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের সময়সীমার মধ্যে এসংক্রান্ত একটি আন্তঃসরকার সম্মেলনের (আইজিসি) মাধ্যমে একটি খসড়া আইনি দলিল তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। 

২০১৮ সালের ৪ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদর দপ্তরে আইজিসির প্রথম অধিবেশনে এ বিষয়ে একটি খসড়া দলিল প্রস্তুত করা হয়। ২০১৯ সালের ২৫ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল দ্বিতীয়, ওই বছরের ১৯ থেকে ৩০ আগস্ট তৃতীয়, ২০২২ সালের ৭ থেকে ১৮ মার্চ চতুর্থ, ওই বছরের ১৫ থেকে ২৬ আগস্ট পঞ্চম এবং এই বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মার্চ মুলতবি থেকে আবার বসা পঞ্চম অধিবেশন জাতিসংঘের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সব অধিবেশনে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল প্রেরণ করে এবং উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে।

যেহেতু নতুন চুক্তির বিষয়ে আলোচনা সফলভাবে শেষ হয়েছে এবং সদস্য দেশগুলো সম্মত হয়েছে, এখন সদস্য দেশগুলোকে এই চুক্তি অনুমোদন ও বাস্তবায়নের কাজ করতে হবে। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে রাষ্ট্রগুলোকে পৃথকভাবে তাদের অভ্যন্তরীণ আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে চুক্তিটি অনুমোদন করাতে হবে। ন্যূনতম ৬০টি রাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরে চুক্তিটি কার্যকর হবে।

চুক্তিটি অনুসমর্থন করা হলে বিদ্যমান আইন, প্রবিধান ও নীতিতে পরিবর্তন সাপেক্ষে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে অবশ্যই তাদের দেশীয় আইনি ব্যবস্থায় এর বিধানগুলো প্রয়োগ করতে হবে। অনুসমর্থন ও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ এবং চুক্তির সাফল্য এখন সদস্য রাষ্ট্রগুলোর এর নীতি ও বিধানগুলো মেনে চলার প্রতিশ্রুতির ওপর নির্ভর করবে।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের জীববৈচিত্র্য সম্মেলনে ২০৩০ সালের মধ্যে সমুদ্রের এক-তৃতীয়াংশ রক্ষা করা সংক্রান্ত দেশগুলোর ৩০দ্ধ৩০ অঙ্গীকার বাস্তবায়নের নিমিত্ত এই ঐতিহাসিক চুক্তিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

সামুদ্রিক জেনেটিক সম্পদ : মেরিন জেনেটিক রিসোর্সেস (এমজিআর) হলো বৈজ্ঞানিক গবেষণা, সংরক্ষণ ও বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য মূল্যবান জৈবিক উপাদান। গভীর সমুদ্রের এই জৈবিক উপাদান যেমন স্পঞ্জ, কিলস, প্রবাল, সামুদ্রিক শৈবাল ও ব্যাকটেরিয়া ওষুধ এবং প্রসাধনীতে ব্যবহারের কারণে এগুলো বৈজ্ঞানিক ও বাণিজ্যিক মনোযোগ আকর্ষণ করছে। জেনেটিক সম্পদের ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণের জন্য যে কাঠামো রয়েছে, তাতে এগুলোকে মানবজাতির অভিন্ন উত্তরাধিকারের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এবং সব রাষ্ট্রের সুবিধার জন্য সমভাবে বণ্টনের কথা বলা হয়।

নতুন চুক্তিতে তথ্য ও প্রযুক্তি ভাগাভাগি করে, সক্ষমতা তৈরি করে এবং তাদের টেকসই ব্যবহারের জন্য সর্বোত্তম অনুশীলনের মাধ্যমে গভীর সমুদ্রে পাওয়া জেনেটিক সম্পদ সংরক্ষণ এবং টেকসইভাবে পরিচালনা করতে রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

চুক্তিতে মানুষের কর্মকাণ্ড সীমিত করার মাধ্যমে সংবেদনশীল সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র এবং আবাসস্থলের ক্ষতি বা ব্যাঘাতের ঝুঁকি কমাতে ও ক্ষয়িষ্ণু প্রজাতির মাছের মজুদ পুনরুদ্ধারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু লভ্যাংশ ভাগাভাগি সংক্রান্ত নিয়ম মৎস্য আহরণ বা সামরিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। সামরিক জাহাজ ও বিমানকে এই চুক্তির বাইরে রাখা হয়েছে। 

সুরক্ষিত সামুদ্রিক অঞ্চল : চুক্তির মূল বিধানগুলোর একটি হলো গভীর সমুদ্রে সংরক্ষিত সামুদ্রিক এলাকা (এমপিএ) তৈরির জন্য একটি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা, যা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বৈজ্ঞানিক ও পরিবেশগত মানদণ্ডের ভিত্তিতে নির্ধারণ করবে। এটা মৎস্য আহরণ, শিপিং, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান, গভীর সমুদ্রে খনন, রাউটিং প্রয়োজনীয়তা বা নির্দিষ্ট প্রযুক্তি ব্যবহার ইত্যাদির মতো মানুষের কর্মকাণ্ড থেকে বাস্তুতন্ত্র এবং প্রজাতিগুলোকে রক্ষা করে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবহারের জন্য একটি হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবে।

চুক্তিতে এমপিএর মধ্যে এবং আশপাশে জাহাজের চলাচলের জন্য আন্তর্জাতিক নির্দেশিকা অনুসরণ ও এর মানোন্নয়নের জন্য তাগাদা দেওয়া হয়েছে, যাতে জাহাজগুলো গভীর সমুদ্রে তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য সতর্কতামূলক এবং পরিবেশগতভাবে দায়িত্বশীল পদ্ধতি গ্রহণ করে। শিপিং কম্পানিগুলোকে বায়ু ও জলদূষণ কমাতে, বর্জ্য কমাতে এবং দুর্ঘটনাজনিত ছিটকে পড়া বা ক্ষতিকারক পদার্থের নিঃসরণ রোধ করার জন্য সর্বোত্তম অনুশীলনগুলো গ্রহণ করতে বলা হয়েছে চুক্তিতে।

এমপিএ ছাড়াও চুক্তিটি দুর্বল সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র বা ভালনারেবল মেরিন ইকোসিস্টেমস (ভিএমই) শনাক্তকরণ এবং সুরক্ষার জন্য একটি প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করে। ভিএমই হলো সমুদ্রের এমন এলাকা যেখানে কিছু প্রজাতি, যেমন—গভীর সমুদ্রের প্রবাল ও স্পঞ্জ, যা মানুষের কার্যকলাপের জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ফলস্বরূপ ভিএমইর মধ্যে বা কাছাকাছি জাহাজগুলোকে এই বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি এড়াতে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, যার মধ্যে রয়েছে এই এলাকায় নোঙর করা বা ট্রলিং এড়ানো এবং সমুদ্রতলের ওপর প্রভাব কমিয়ে দেয় এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করা।

চুক্তিটি গভীর সমুদ্রে শিপিং কার্যক্রমের কারণে পরিবেশগত ক্ষতির জন্য আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা ও ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থার বিকাশকে উৎসাহিত করে এই উদ্বেগগুলোকে মোকাবেলা করার চেষ্টা করবে। সুবিধার ন্যায্য ও ন্যায়সংগত ভাগাভাগির নীতি নিশ্চিত করে যে, এই সম্পদগুলোর যেকোনো বাণিজ্যিক ব্যবহার উৎপত্তি দেশ এবং বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উভয়ের জন্য লাভজনক।

সক্ষমতা বিনির্মাণ ও প্রযুক্তি স্থানান্তর : চুক্তিটি গভীর সমুদ্রের সংরক্ষণ এবং টেকসই ব্যবস্থাপনায় সম্পূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম করার জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর সক্ষমতা বিনির্মাণ ও প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এর জন্য রাষ্ট্রগুলোকে প্রশিক্ষণ, শিক্ষা ও জ্ঞান স্থানান্তর বিষয়ক কর্মসূচিতে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে। গভীর সমুদ্রের ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে শিপিং কম্পানিগুলোকে তথ্য ও জ্ঞান শেয়ার করে নেওয়ার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সক্ষমতা-নির্মাণ এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরে নেওয়া পদক্ষেপগুলোকে সমর্থন করার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

মৎস্য আহরণ : অত্যধিক ও অনিয়ন্ত্রিত মৎস্য আহরণ মহাসাগরের জন্য বড় হুমকি। চুক্তিটি গভীর সমুদ্রের মধ্যে মাছের মজুদ সংরক্ষণ ও পরিচালনার প্রয়োজনীয়তাকে স্বীকৃতি দেয় এবং সর্বোত্তম উপলব্ধ বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে এ সম্পদ সংরক্ষণ ও পরিচালনার জন্য একটি কাঠামো প্রতিষ্ঠা করে টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করতে উৎসাহ দেয়। এ চুক্তি রাষ্ট্রগুলোকে মৎস্যর মজুদের অবস্থা এবং সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের ওপর মৎস্য আহরণ সম্পর্কিত কর্মকাণ্ডের প্রভাব সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ এবং তা পরস্পরকে জানাতে সহযোগিতা করবে।

পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন : চুক্তির গভীর সমুদ্রে কোনো কার্যকলাপে জড়িত হওয়ার আগে পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (ইআইএ) পরিচালনা করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়নের উদ্দেশ্য হলো গভীর সমুদ্রে যেকোনো কর্মকাণ্ড শুরুর আগে সামুদ্রিক পরিবেশের ওপর এর সম্ভাব্য প্রভাব বিবেচনা করা এবং প্রতিকূল পরিবেশগত প্রভাব শনাক্তকরণের মাধ্যমে ক্ষতি প্রশমিত করা। মৎস্য আহরণ, গভীর সমুদ্রে খনি, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান, বৈজ্ঞানিক গবেষণা, শিপিংসহ সমুদ্রে জাহাজ দ্বারা গৃহীত সব কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তার কথাও চুক্তিতে বলা হয়েছে।

পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় স্কোপিং, বেসলাইন অধ্যয়ন, প্রভাব বিশ্লেষণ, প্রশমনব্যবস্থা শনাক্তকরণ এবং পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নসহ একাধিক ধাপ থাকবে। এর জন্য আন্তর্জাতিক নির্দেশিকা ও মান অনুসরণ করতে হবে এবং প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ, সামঞ্জস্যপূর্ণ ও উচ্চমানের তা নিশ্চিত করে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের দ্বারা পর্যালোচনা ও অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে।

যদি পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন ইঙ্গিত করে যে কর্মকাণ্ডটি সামুদ্রিক পরিবেশের ওপর উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, সে ক্ষেত্রে জাহাজটিকে তাদের কর্মকাণ্ড সংশোধন বা বাতিল করতে হবে বা প্রভাব কমাতে প্রশমনের পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমন—মেস্যর জন্য কম ক্ষতিকারক গিয়ার ব্যবহার করা, সংবেদনশীল এলাকাগুলো এড়িয়ে চলা ও শব্দদূষণ হ্রাস করা। এক কথায় সমুদ্রে মাছ ধরায় নিয়োজিত জাহাজগুলোকে অবশ্যই এই সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে, যাতে মাছ ধরার কার্যক্রম টেকসই ও দায়িত্বশীল হয় এবং যাতে মাছের দীর্ঘমেয়াদি মজুদ ও উৎপাদনশীলতা বজায় থাকে।

মো. খুরশেদ আলম : সচিব, ম্যারিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অবসরপ্রাপ্ত রিয়াল অ্যাডমিরাল, বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –