• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

আজ বীরগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস

প্রকাশিত: ৬ ডিসেম্বর ২০২০  

আজ ৬ ডিসেম্বর বীরগঞ্জ হানাদার মুক্ত দিবস। এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে বীরগঞ্জ এলাকাকে শত্রু মুক্ত করে মুক্তি বাহিনী এবং মিত্র বাহিনীর যোদ্ধারা।

পাশের জেলা ঠাকুরগাঁও ৩ ডিসেম্বর শত্রু মুক্ত হওয়ার পর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী সৈয়দপুর (পাক বিহার) অভিমুখে পালিয়ে যাবার সময় মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীর প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়ে। হানাদার বাহিনী বীরগঞ্জ থেকে পিছু হটে বীরগঞ্জ-কাহারোল উপজেলা সীমান্তের দিনাজপুর-পঞ্চগড় মহাসড়কে ভাতগাঁও ব্রীজের পূর্ব প্রান্তে অবস্থান নেয়। এখানে পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সাথে মুক্তিবাহিনীর তুমুল যুদ্ধে ভাতগাঁও ব্রীজের একাংশ ভেঙ্গে যায়। এ সময় বেশ কিছু মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীর বীর যোদ্ধা শহীদ হন।

স্বাধীনতা যুদ্ধে দিনাজপুর ৬ নম্বর সেক্টরের অধীন হওয়ায় বীরগঞ্জ উপজেলা এর আওয়াতাধীন ছিল। লে. কর্নেল কাজী নুরুজ্জামান এর নেতৃতাধীন সেনাবাহিনীর হাবিলদার মোস্তাফিজুর রহমান বীরগঞ্জ ও খানসামার যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্বে নিয়েজিত ছিলেন।

৫ ডিসেম্বর বিকেল ৪টায় মিত্র বাহিনীর বিমান হামলার মধ্যে দিয়ে বীরগঞ্জ শত্রু মুক্ত হতে থাকে। রাতেই পুরো এলাকা মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী পুরোপুরি দখল করে নেয়। সকালে বীরগঞ্জের অলিগলিতে মুক্ত বাতাসে উড়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।

২০০৮ সালে প্রথম বীরগঞ্জ মুক্ত দিবস আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা হয়। সে সময় স্থানীয় সাংবাদিক মোঃ আবদুর রাজ্জাক এ বিষয়টি পত্রিকায় তুলে ধরেন এবং উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বিজয় দিবস উদযাপন প্রস্তুতি সভায় দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে পালনের দাবি জানান। তার দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ হাসান মারুফ আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সেই সভায় সর্বসম্মতি ক্রমে বীরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরীকে দিবসটি পালনের সার্বিক দায়িত্ব দেওয়া হয়।

২০০৮ সালে বীরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরীর আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার পর প্রথম বারের মত আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা হয় বীরগঞ্জ পাকিস্তান হানাদার মুক্ত দিবস।

করোনাকালীন পরিস্থিতিতে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংগঠনগুলি বীরগঞ্জ পাকিস্তানী হানাদার মুক্ত দিবস ঘরোয়া ভাবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার অধ্যাপক কালিপদ রায়।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ শুরুতে ১৪ এপ্রিল ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান বীরগঞ্জ শাখার গার্ড লক্ষীপুর জেলার লক্ষীপুর থানার দিঘলী গ্রামের মৃত সিকান্দার আলীর পুত্র মোঃ মহসিন আলী এবং বীরগঞ্জ উপজেলার সুজালপুর ইউনিয়নের শীতলাই গ্রামের মোঃ আবদুর রাজ্জাক মদনপুর সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন। বীরগঞ্জের বীর সন্তান বুধারু বর্মন, রমেন সেন ও মতিলাল বর্মনসহ ৩জন স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশের বিভিন্ন রণাঙ্গনে শহীদ হন।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –