• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

ইউএনও’র ওপর হামলায় রবিউলের জবানবন্দি: হার মানবে সিনেমার গল্পও

প্রকাশিত: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০  

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবার ওপর হামলার ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন মূলহোতা রবিউল ইমলাম। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি যা বলেছিলেন তা সিনেমার গল্পও হার মানাবে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল জানান, ইউএনও ওয়াহিদা খানমের কার্যালয়ে মালি পদে চাকরি করতেন তিনি। ইউএনওর ১৬ হাজার টাকা চুরির অপরাধে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে অশান্তি দেখা দেয়। সব মিলিয়ে তার মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করে। এ ক্ষোভ থেকেই ইউএনওকে হত্যার পরিকল্পনা করেন রবিউল।

রবিউল বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী ২ সেপ্টেম্বর নিজ বাড়ি দিনাজপুরের বিরল উপজেলার বিজোড়া গ্রামের ধামাহার ভিমরুল পাড়া থেকে বিকেল ৪টার দিকে ঘোড়াঘাটের উদ্দেশে রওনা দেই। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি বাসে উঠে ঘোড়াঘাটে পৌঁছাই। তখন রাত ৯টা হবে। এরপর ঘোড়াঘাট বাজারে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে রাত ১টায় ইউএনও ওয়াহিদা খানমের বাসভবনের দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকি। ইউএনওর বাসভবনের চারদিকে নীরব পরিবেশ ছিল।

জিজ্ঞাসাবাদে রবিউল আরো বলেন, প্রথমে নৈশপ্রহরী নাদিম হাসান পলাশের কক্ষে ঢুকি। কিন্তু তিনি তখন ঘুমিয়ে ছিলেন। তার কক্ষে ইউএনওর বাসভবনের মেইন গেটের চাবি থাকে। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সেই চাবি পাওয়া যায়নি। না পেয়ে পলাশের কক্ষ থেকে বের হয়ে পরিত্যক্ত ঘরের কাছে গিয়ে একটি চেয়ার ও মই নেই। মই দিয়ে দেয়াল বেয়ে ভেন্টিলেটর খুলে ভুলে বাথরুমে ঢুকে পড়ি। তবে বাথরুমের দরজা বাইর থেকে আটকানো ছিল। তখন বাথরুমেই প্রায় দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করি। ইউএনও প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে এলে ধরা হবে। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও তিনি আসেননি। পরে বাথরুম থেকে ফের মই দিয়ে নিচে নামা হয়।

তিনি আরো বলেন, বাথরুম থেকে নেমে ইউএনওর শোয়ার ঘরের ভেন্টিলেটর দিয়ে ঢুকি। ঢোকার পরই ইউএনও ওয়াহিদা খানম টের পেয়ে যান। বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় বলেন বাবা দেখতো কোন বেয়াদব ঢুকেছে। এ কথা বলে ইউএনও ওয়াহিদা খানম বিছানা থেকে উঠলেই গালে ও মাথায় হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকি। একপর্যায়ে তিনি বিছানায় শুয়ে পড়েন। তার চিৎকারে পাশের কক্ষ থেকে বাবা ওমর আলী শেখ এগিয়ে আসেন। এরপর তাকেও ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়া হয়। দরজার চৌকাঠের সঙ্গে ধাক্কা লাগায় তিনিও পড়ে গিয়ে আর উঠতে পারেননি। একপর্যায়ে আলমারির চাবির কথা বললে ওমর আলী শেখ চাবি রাখার স্থান বলে দেন। পরে অনেক চেষ্টা করেও আলমারি খুলতে পারিনি। ভোর হতে লাগলে তাড়াতাড়ি মই বেয়ে নিচে নেমে যাই।

রবিউল বলেন, চেয়ার আর মইটি আগের স্থানে রেখে ফের দেয়াল বেয়ে মহাসড়কে চলে আসি। পরে ঢাকা থেকে দিনাজপুরের উদ্দেশে যাওয়া বাসে উঠে বাড়িতে চলে আসি। এরপর নিজ বাসায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি।   

প্রসঙ্গত, চার মাস আগে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ব্যাগ থেকে ১৬ হাজার টাকা চুরি হয়। ওই সময় রবিউলের বিরুদ্ধে যেন বিভাগীয় বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেয়া হয় সেজন্য ইউএনওকে অনুরোধ করেছিলেন। এরপরও তাকে সাময়িক বরখাস্ত এবং বিভাগীয় মামলা করা হয়।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –