• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

এবার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য বড় প্রণোদনা

প্রকাশিত: ১৯ জানুয়ারি ২০২১  

করোনা মহামারির বিপর্যয় সামাল দিতে সরকার ঘোষিত এক লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা বাস্তবায়নের শুরু থেকেই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ঋণ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ওঠে। এবার তাই প্রান্তিক পর্যায়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মধ্যে ঋণ বিতরণ নিশ্চিত করতে সরকার ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলোকে (এমএফআই) কাজে লাগিয়ে ১০ হাজার কোটি টাকার নতুন প্রণোদনা প্যাকেজ আনতে যাচ্ছে।

নতুন প্রণোদনা প্যাকেজের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ১০ হাজার কোটি টাকার একটি ‘ঋণ সহায়তা তহবিল’ গঠন করবে। কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোক্তারা ৪ শতাংশ সুদে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। ঋণগ্রহীতারা শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র দাখিল করেই ঋণের আবেদন করতে পারবেন। নতুন প্রণোদনা প্যাকেজটি এরই মধ্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অনুমোদন করেছেন। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য গত বৃহস্পতিবার এটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ক্ষুদ্র শিল্প বাঁচাতে এরই মধ্যে এক হাজার ৫০০ কোটি ও এক হাজার ২০০ কোটি টাকার নতুন দুটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এগুলোর সঙ্গে যোগ হচ্ছে এই প্রণোদনা প্যাকেজ। এতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সফলভাবে মোকাবেলা করতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সিএমএসই খাতে বিদ্যমান সমস্যা, চ্যালেঞ্জ ও তা সমাধানের জন্য ‘নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবেলায় কুটির, মাইক্রো ও ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোক্তাদের দ্রুত ঋণ প্রদানে সহায়ক নীতিমালা ২০২১’ শীর্ষক একটি নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে।

নীতিমালাটি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিলটি বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্ব উৎস থেকে গঠন করবে। প্যাকেজে ঋণের বার্ষিক সুদ বা মুনাফা বা সার্ভিস চার্জের হার হবে সর্বোচ্চ সাড়ে ৯ শতাংশ। এর মধ্যে গ্রাহক দেবে ৪ শতাংশ। বাকিটা সরকার ভর্তুকি দেবে। সরকার বাংলাদেশ ব্যাংককে ০.৫ শতাংশ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ১ শতাংশ এবং সংশ্লিষ্ট এমএফআইকে ৪ শতাংশ ভর্তুকি হিসেবে দেবে। এতে সরকারের ব্যয় হবে ৫৫০ কোটি টাকা। তবে ঋণের সুদহার নিয়ে ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলো কিছুটা অখুশি। তারা বলছে, তাদের সঙ্গে যেভাবে কথা হয়েছে তার সঙ্গে নীতিমালার বিষয়বস্তুর তফাত রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এতে এমএফআই কতটুকু ঋণ বিতরণ করতে পারবে, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।

ব্র্যাকের অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর অব ফিন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্ট অসিত বরণ দাস বলেন, ‘আমরা এ প্রণোদনা প্যাকেজের সঙ্গে থাকতে পেরে খুশি। কিন্তু আমাদের পরিচালনা ব্যয় ১৪ শতাংশ। সেখানে সরকার আমাদের সুদহার কমিয়ে দিলে আমরা সমস্যায় পড়ে যাব।’

প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে গ্রাহক (একক বা গ্রুপভিত্তিক) সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। তবে কটেজ সর্বোচ্চ ১০ লাখ, মাইক্রো ৩০ লাখ এবং ক্ষুদ্র উদ্যোগে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ মিলবে। ঋণ পরিশোধে ছয় মাস গ্রেস পিরিয়ড থাকবে। মাসিক ১৮ কিস্তিতে অর্থাৎ দুই বছর মেয়াদে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। গ্রাহক পর্যায়ে এই প্যাকেজের ৪০ শতাংশ ট্রেডিং খাতে এবং ৬০ শতাংশ উৎপাদন ও সেবা খাতে বিতরণ করা হবে। কোনো একক বা গ্রুপভিত্তিক উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ দুই বছর অথবা সরকার নির্ধারিত সময়ের জন্য এই প্যাকেজের আওতায় ভর্তুকি সুবিধা পাবে।

এর আগে সরকার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল, তাতে কাগজপত্রসংক্রান্ত অনেক জটিলতা ছিল। সে কারণে ঋণ বিতরণ কম হয়েছে। এবার জটিলতা এড়াতে শুধু জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদ অথবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের অথবা স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের প্রত্যয়নপত্র হলেই হবে। দুজনের গ্যারান্টি দাখিল করেও ঋণ পাওয়া যাবে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –