• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

কথা রাখলেন চিলমারীর ইউএনও, ঘর পেলেন দুই অসহায় নারী

প্রকাশিত: ২৫ জুলাই ২০২২  

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান কথা রাখলেন, চরাঞ্চলের সেই প্রতিবন্ধী লতিফা বেগম ও আগুনে পুড়ে নিঃস্ব বিজলী বেগম পেলেন প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহারের ঘর। উপহারের ঘর পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন সেই দুই মহিলা।

প্রতিবন্ধী লতিফা বেগমের আকুতি একটি হুইল চেয়ার’ এই শিরোনামে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর দৃষ্টিগোচর হলে ইউএন মো. মাহবুবুর রহমান (৯ জুন,২০২১) হুইল চেয়ার নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে চিলমারী ইউনিয়নের শাখাহাতী এলাকায় প্রতিবন্ধী সেই মহিলার বাড়িতে গিয়ে হস্তান্তর করেন। এরপর ইউএনও মাহবুবুর রহমানের কাছে দাবি করেন একটি থাকার ঘরের জন্য । সাথে সাথেই ওই মহিলাকে একটি ঘর দেওয়া হবে বলে কথা দেন। পরে ওই বছরে আগুনে পুড়ে নিঃস্ব হয়েছে বিজলী বেগমের পরিবারটি। খবর পেয়ে সেই বাড়িতে গেলেই ইউএনওকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন বিজলী বেগম। বিজলী বেগম বলেন, আগুনে আমার সব পুড়ে গেছে শুধু গায়ের কাপড় ছাড়া কিছুই বাঁচাতে পারি নাই। পরে তাৎক্ষণিকভাবে আর্থিক সহযোগিতা করেন ইউএনও। পরে তাকেও একটি ঘর দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

কথা দেওয়ার এক বছর পর সেই দুই মহিলাকে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘর বরাদ্দ দেন ইউএনও নিজেই। তৃতীয় পর্যায়ে চিলমারীতে বৃহস্পতিবার ১২০টি পরিবারকে জমিসহ ঘর প্রদান করা হয়। এর মধ্যে চর ডিজাইনের ১০টি ঘর ছিল। এখন পর্যন্ত চিলমারীতে মোট ৬৫০টি পরিবারকে ঘর দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

প্রতিবন্ধী লতিফা বেগম (৬০)বলেন, আমার থাকার ঘর ছিলো না । আমি সাংবাদিকদেরকে নিকট কৃতজ্ঞ, নিউজ প্রকাশের পর ইউএনও স্যার নিজে এসে আমাকে হুইল চেয়ার দেন। তখন আমি একটি থাকার ঘরের দাবী করি। এখন আমাকে একটি ঘর দিয়েছেন । আমি খুব খুশি।

তিনি আরও বলেন, এর আগে কোনদিন ইউএনও স্যার কে দেখি নাই। এই প্রথম ইউএনও স্যার আমার কথা শুনতে এবং আমাকে দেখতে এসেছেন। এর চেয়ে বড় পাওয়া কি হতে পারে।

অপরদিকে আগুনে পুড়ে নিঃস্ব বিজলী বেগম (৫০) বলেন, ঘর পেয়ে খুব খুশি হয়েছি। আমি কখনো ভাবি নাই, ইউএনও স্যার আমাকে ঘর দিবেন। এর আগে কখনো কোন ইউএনও স্যার আমাদের এখানে আসে নাই। এই স্যার নিজে এই চরে এসে আমাদের ঘর দিলেন। এর চেয়ে আনন্দের আর কিছ’ নেই। আল্লাহ স্যারের ভালো কবরে।

চিলমারী ইউনিয়নের স্থানীয় এইচ এম মেহেদী বলেন, ওই দুই মহিলা ঘর পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু এর আগে কেউ খোঁজ নেয়নি। গত বছর ইউএনও স্যার এসে ঘর দিতে চেয়েছেন। সেই কথা বাস্তবায়ন করেছেন। আমি নিজেই ব্যক্তিগতভাবে অফিসে যোগাযোগ রেখেছি। এখন এই দুই পরিবার খুব খুশি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, গত বছর আমি শাখাহাতীর চরে গিয়ে প্রতিবন্ধী ও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলাম। কিন্তু ওই সময়ে চরের জন্য ঘর বরাদ্দ ছিল না। পরে নতুন করে চর ডিজাইনের ঘর বরাদ্দ পেতে সময় লেগেছে। যার ফলে তাদের ঘর দিতে দেরি হয়েছে। তবে ৩য় পর্যায়ে তাদের প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, উপজেলার অসহায়, দরিদ্র, প্রতিবন্ধী, বিধবা যাদের থাকার ঘর নেই, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি সবাইকে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর করে দেওয়ার জন্য। যাতে চিলমারীতে কেউ গৃহহীন না থাকে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –