• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

কালের সাক্ষী ফুলবাড়ীর ২৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী জমিদারবাড়ি

প্রকাশিত: ২৮ জানুয়ারি ২০২২  

নাওডাঙ্গার আড়াই শ বছরের ঐতিহ্যবাহী জমিদারবাড়িটি এখন কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সংস্কারের অভাবে বিলীনের পথে বাড়িটি। স্থানীয়রা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমিদারবাড়িটি সংস্কারের দাবি করে এলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

অবিভক্ত ভারতবর্ষে অনেক আগে নাওডাঙ্গা পরগনার জমিদার বাহাদুর শ্রীযুক্ত বাবু প্রমদা রঞ্জন বক্সী এটি নির্মাণ করেন। তার শাসনামলে এই পরগনার অধীন বিদ্যাবাগিশ, শিমুলবাড়ী, তালুক শিমুলবাড়ী, রসুন শিমুলবাড়ী ও কবির মামুদ প্রভৃতি জায়গায় শান্তির সুবাতাস ছিল। রাজারহাটের পাঙ্গা এলাকায় বাবু প্রমদা রঞ্জন বক্সীর আর একটি জোত ছিল। এটির দেখাশুনাসহ পূর্ণ পরিচালনার ভার ন্যস্ত ছিল শিব প্রসাদ বক্সীর ওপর। কুমার বাহাদুর বীরেশ্বর প্রসাদ বক্সী, বিশ্বেস্বর প্রসাদ বক্সী ও বিপুলেশ্বর প্রসাদ বক্সী—এই তিন জন জমিদার ছিলেন। শিক্ষার পাশাপাশি শিল্প-সংস্কৃতির প্রতি জমিদার বিশ্বেস্বর প্রসাদ বক্সী ছিলেন সমান অনুরাগী। তার ইচ্ছায় সে সময় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পূর্ণ জন্মতিথি উপলক্ষে প্রতিবছর দোল পূর্ণিমায় জমিদারবাড়ির সামনে বিস্তীর্ণ ফাঁকা মাঠে দোলের মেলা বসত।  মেলায় বিভিন্ন এলাকা থেকে দোল সওয়ারিরা বাহারি সাজে সজ্জিত হয়ে দোলমূর্তি সিংহাসন নিয়ে এই মেলায় অংশগ্রহণ করত, যা এখনো বিদ্যমান।

জমিদারবাড়ির গোমস্তা গঙ্গাধর বর্মণের নাতি শৈলান চন্দ্র বর্মণ ও বিজয় চন্দ্র রায় এসব কথা জানান। তারাই বর্তমানে কালের সাক্ষী। তারা বলেন, তার ঠাকুরদার কাছে তিনি শুনেছিলেন এসব কথা। তথ্যানুযায়ী তার পিতার মৃত্যুর পর জমিদার বিশ্বেস্বর প্রসাদ বক্সী ও তার বংশধররা শ্রাদ্ধানুষ্ঠান উপলক্ষ্যে সর্বশেষ এসেছিলেন নিজের বাড়িটাকে শেষবার দেখতে। সেই শেষ। আর কেউ কখনো নাওডাঙ্গা জমিদারবাড়িতে আসেননি।

উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা সদর থেকে পশ্চিম-উত্তর কোণে ৭ কিলোমিটা দূরে ক্ষয়িষ্ণু অবয়ব নিয়ে কোনো রকমে টিকে আছে নাওডাঙ্গা জমিদারবাড়ি। জমিদার, জমিদারি শাসন, প্রজা, গোমস্তাবিহীন সেটি এখন অরক্ষিত। বেহাত হয়ে গেছে এখানকার অনেক সম্পদ। ইট, চুন, সুরকির নিপুণ গাঁথুনির ভবনগুলো এলাকার অসাধু লোকজন ভেঙে নিয়ে গেছে। পশ্চিম পাশের একটা দোতলা বিল্ডিং তারা ভেঙে দিয়েছে। অবশিষ্ট আছে শুধু সামনের মূল ভবন ও ভেতরের একটা ছোট বিল্ডিং। অনেকে সেখান থেকে বিম ও অনেক ইট খুলে নিয়ে গেছে। বর্তমানে এগুলোকে আশ্রয় করে বেড়ে উঠছে আগাছা। জমিদার চলে যাওয়ার পর কিছু অসাধু ব্যক্তি লুটপাট করলেও বর্তমানে জমিদারবাড়িসহ অনেক জমি অবৈধ দখল করে আছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। তারা দাপট দেখিয়ে বাজার বসিয়েছে জমিদারবাড়ির সামনে দোলের মেলার জন্য নির্ধারিত খোলা মাঠে। দোকান বসিয়ে তারা ভাড়া উত্তোলনও করে। 

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –