• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

কোরবানির পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণে রাজধানীতে স্বস্তি

প্রকাশিত: ১৩ জুলাই ২০২২  

কোরবানির পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণে রাজধানীতে স্বস্তি                    
ঈদুল আজহার সময় কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণের চিত্রে রাজধানীতে এবার কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। ১২ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণে দুই সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম। সেটা পুরোপুরি বাস্তবায়িত না হলেও বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবারের পরিস্থিতি বেশ ভালো। অবশ্য যেসব এলাকা ঘিঞ্জি, সেসব এলাকায় বর্জ্য অপসারণে বেগ পেতে হয়েছে দুই সিটি করপোরেশনকে। বিশেষ করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) চেয়ে বর্জ্য অপসারণে বেশি বেগ পেতে হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে (ডিএসসিসি)। 

কারণ, ডিএসসিসির অনেকে এলাকা বিশেষ করে পুরান ঢাকায় সরু অলিগলি ও ঘিঞ্জি এলাকার সমাহার। সে কারণে ঈদের দুই দিন পর আজ মঙ্গলবারও ডিএসসিসি এলাকার কয়েকটি স্থানে কোরবানির বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা গেছে। আর যেসব এলাকায় পশুহাট বসার সুযোগ দিয়েছিল দুই সিটি করপোরেশন সেসব হাটের বর্জ্য আজও পুরোপুরি অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। ঈদের পরদিনও কিছু হাটে পশু থাকতে দেখা গেছে।

অবশ্য উভয় সিটি করপোরেশন দাবি করছে, তারা যথাসময়ের মধ্যেই সকল পশুবর্জ্য অপসারণ করতে পেরেছে। ডিএনসিসির দাবি, ঈদের দিন দুপুর ২টা থেকে তারা কোরবানির বর্জ্য অপসারণ শুরু করে। রাতের মধ্যেই সকল কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম হয়। ডিএনসিসি এলাকায় এবার ১২ লাখ ৪৭ হাজার পশু কোরবানি হয়। এ থেকে প্রায় ৯ হাজার টন বর্জ্য তৈরি হয়। ঈদের দিনেই ৫৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫০টি ওয়ার্ডের শতভাগ বর্জ্য অপসারণ সম্ভব হয়। বাকি ৪টি ওয়ার্ডের বর্জ্য রাতের মধ্যেই অপসারণ করে আমিনবাজার ল্যান্ডফিলে ফেলা হয়।

ঈদের দিন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বিভিন্ন ওয়ার্ডের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সরাসরি পরিদর্শন করেন। যেসব স্থানে বর্জ্য দেখতে পান সেগুলো দ্রুত অপসারণের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি হলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হয়। এর ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকিও কমে আসে।

এ বছর ডিএনসিসির তিনটি ওয়ার্ডের ৯টি স্থান নির্দিষ্ট করা হয়েছিল পশু কোরবানির জন্য। ঈদের পর দিন দুপুরে ডিএনসিসি নগর ভবনে সংবাদ সম্মেলন করে আতিকুল ইসলাম বলেন, ১২ ঘণ্টার আগেই শতভাগ কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে।

এ বছর বর্জ্য অপসারণে ৭ নম্বর ওয়ার্ড প্রথম হওয়ায় পুরস্কার হিসেবে ওই ওয়ার্ডে বরাদ্দ বাড়িয়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

ডিএনসিসি জানায়, ঈদের পর দিন বেলা ১১টা পর্যন্ত ১ হাজার ৯৯৫টি ট্রিপের মাধ্যমে ৮ হাজার ৪৮৫ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়। ঈদের পরদিন সোমবারও যেসব পশু কোরবানি হয়, সেগুলোর বর্জ্যও সঙ্গে সঙ্গে অপসারণ করা হয়। ডিএনসিসির ২ হাজার ৪০২ জন নিজস্ব জনবলের পাশাপাশি মোট ৯ হাজার ৯৯০ জন কর্মী এবার বর্জ্য অপসারণে নিয়োজিত ছিল। বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি ও যানবাহন ছিল ৫৮৫টি।

তবে কোরবানির জন্য কোনো স্থান এবার নির্ধারণ করে দেয়নি ডিএসসিসি। ফলে পুরান ঢাকার অলিগলি ও ঘিঞ্জি এলাকায় অনেকেই রাস্তার মধ্যে বা বাড়ির আঙিনায় পশু কোরবানি করেন। এসব এলাকার বর্জ্য অপসারণে ডিএসসিসিকে বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

ডিএসসিসি জানায়, ঈদের দ্বিতীয় দিনের মধ্যেই ৫৮টি ওয়ার্ডের শতভাগ কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হয়। ৯ জুলাই রাত ১১টা হতে ১১ জুলাই সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৪৩ ঘণ্টায় ২ হাজার ৯৯৭টি ট্রিপের মাধ্যমে ১২ হাজার ৬৪২ টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় দিনে যেসব পশু কোরবানি হয় সেগুলোর বর্জ্য রাতের মধ্যেই অপসারণ হয়।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –