• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

খানসামায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে রসুন চাষ

প্রকাশিত: ৮ ডিসেম্বর ২০২০  

রসুন চাষের উপযুক্ত জমি হওয়ায় খাসসামা উপজেলার দিনাজপুর জেলার মধ্যে আলাদা কদর রয়েছে। ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে উপজেলার কাচিনীয়া বাজারের চার দিকের গ্রামগুলোতে নারী পুরুষ একত্রিত হয়ে লাইন ধরে ধরে রসুন রোপণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি রসুনের আবাদ হওয়ায় কৃষি অধিদফতর এই উপজেলাকে টার্গেট করে থাকে। চলতি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণে রসুন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে উপজেলার প্রতিটি মাঠে জুড়ে চলছে রসুনের চাষ। বর্তমানে বাজারে রসুনের দাম ভালো পাওয়া ও ফলন বেশি হওয়ায় এই অঞ্চলে রসুন চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র মতে, চলতি মৌসুমে ২৬শত হেক্টর জমিতে রসুন রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে রসুন রোপণ করা হয় খানসামা উপজেলায়। এখনও ১০-১৫ দিন চলবে এই রসুন রোপণের কার্যক্রম।

সরেজমিনে উপজেলার জুগীরঘোপা, কায়েমপুর, জোয়ার, কাচিনীয়া, রামনগর, গোয়ালডিহি গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, মাঠে মাঠে কৃষক-কৃষাণীরা দল বেঁধে বিনা চাষে রসুন রোপণ করছেন। আবার কেউ কেউ জমি প্রস্তুত করছেন।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি একর জমিতে রসুন চাষে শ্রমিক ও চাষ বাবদ খরচ হয় প্রায় ২০ হাজার টাকা। আর বীজ, রাসায়নিক সার ও সেচ বাবদ খরচ হয় আরো ৩০ হাজার টাকা। এতে করে প্রতি একরে খরচ হয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে একর প্রতি ৫৫ থেকে ৬০ মণ রসুন পাওয়া যায়। গড়ে প্রতি মণ রসুন আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকা করে হলে দাম পাওয়া যায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা থেকে দেড় লাখ টাকার মতো। রসুন ঘরে তোলা, বাছাই ও বাজারজাতকরণে আরো প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ বাদ দিলেও লাভ থাকে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। তবে এই দামে রসুন বিক্রি করতে হলে মৌসুমের শুরুতেই নয়, একটু অপেক্ষা করতে হয়।

কায়েমপুর গ্রামের রসুন চাষি মজিবুর রহমান বলেন, তিনি এ বছর দুই বিঘা জমি ২২ হাজার টাকায় লিজ নিয়ে রসুন চাষ করছেন। স্বল্প সময় ও অন্য ফসলের চেয়ে কম পরিশ্রমে অধিক ফলন হওয়ায় এবং বর্তমানে রসুনের দাম ভালো হওয়ায় তিনি রসুন চাষ করছেন।

কাচিনীয়া গ্রামের কৃষক কাজেম আলী বলেন, তিনি এক বিঘা জমিতে বীজ, সার ও শ্রমিক দিয়ে মোট ২০ হাজার টাকা খরচ করে রসুন রোপণ করেন। রসুন ঘরে তোলা পর্যন্ত আরো ৫-৭ হাজার টাকা খরচ করে বিঘা প্রতি প্রায় ৩০-৩৫ মণ রসুন পাওয়া যাবে। অন্যান্য ফসলের চেয়ে রসুনে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম। কোনো প্রকার জমি চাষ ছাড়া স্বল্প পুঁজি ও কম পরিশ্রমে ফলন ভালো হওয়ায় তিনি রসুন চাষ করছেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার বাসুদেব রায় জানান, রসুন মসলাজাত অর্থকরী ফসল। খরচ কম ও অধিক লাভ হওয়ায় বর্তমানে এই ফসলের ব্যাপক হারে চাষ হচ্ছে। রসুন চাষে কৃষকদের উৎসাহিত ও সহযোগিতা করতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন উপ-সহকারী কর্মকর্তারা। আগামীতে এই ফসলের চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –