• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

দিনাজপুরে ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা ও গ্রামীণ মেলা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০২৩  

 
হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা ও গ্রামীণ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। চড়ক পূজাসহ সেখানে বসেছিল দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলা। চড়ক উৎসবটি দেখতে সেখানে বিভিন্ন বয়সী কয়েক হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটে। ছিল উপচেপড়া ভিড়।

গত রবিবার সন্ধ্যায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর দৌলতপুর ইউপির পলিপাড়া ডাঙ্গা শ্রী শ্রী কালী মন্দির চত্বরে এ চড়ক মেলার আয়োজন করা হয়। 

মেলায় দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষের অপলক চোখ ৩০ফুট উচ্চতার কাঠের দণ্ডের দিকে। একজন মানুষ শূন্যে ঘুরছেন একটি দড়িতে ঝুলে। দড়িটি বাঁধা ওই মানুষটির পিঠের চামড়ায় গাঁথা বড় দুটি বড়শির সাথে। চলছে উলুধ্বনি, শঙ্খধ্বনি। বাজছে ঢাকঢোল। ঘুড়ানো হচ্ছে কাঠের দণ্ডটি। আর তাতেই ঝুলে চারিদিকে গোল চক্কর খেলেন অরবিন্দ চন্দ্র রায় (৪৬) নামের এক ব্যক্তি। তার সঙ্গে থাকা ফুল-জল, আবির, কলা, বাতাসা, নকুলদানা ইত্যাদি ছিটিয়ে দেন অগণিত ভক্ত-দর্শকের দিকে। অরবিন্দ রায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরএলাকার চাঁদপাড়া গ্রামের মতিলালের ছেলে।

আয়োজকরা জানায়, বড়শিতে বিদ্ধ মানুষকে ঘোরানোর আগে সারাদিন ধরে নানা আচার পালন করা হয়। মানুষ ঘূর্ণনের জন্য পোতা কাঠের দণ্ডটি মাঠের মাঝখানে বসানো হয়। অনেকটা লাঙলের জোয়ালের মতো, আরেকটি কাঠ এই কাঠের ওপর লম্বালম্বিভাবে বসানো। কাঠের মাথায় থাকে মাটি পর্যন্ত ঝোলানো কয়েকটি লম্বা দড়ি। কাঠের দণ্ডের ঠিক নিচে একদল মানুষ শক্ত হাত দিয়ে ঘোরান দড়িগুলো। এটাই চড়ক পূজার মূল আকর্ষণ। 

চড়ক পূজার উৎসবে আসা নিরমা রানী রায়, প্লাবন শুভসহ কয়েকজন বলেন, এই চড়ক মেলা উপলক্ষে পুরো গ্রাম উৎসবে মেতে ওঠে। রাতে পূজো হয়। দিনে মেলা হয়। মেলাসহ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ মেলা শেষ পর্যন্ত আর হিন্দু সম্প্রদায়ের মেলা থাকে না। এটা মিলনমেলায় পরিণত হয়।

কাজীহাল ইউনিয়ন থেকে আসা প্রধান শিক্ষক চন্দন কুমার রায় বলেন, প্রতিবছর এখানে চৈত্র মাসের শেষে পূজা উপলক্ষে চড়ক মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবকে ঘিরে সপ্তাহব্যাপী চলে নানা আয়োজন। দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলা বসে, নানা প্রকার খাবারের দোকান বসে। পরিবার-পরিজন নিয়ে উৎসবটি উপভোগসহ মায়ের আরাধনা করতে এসেছি।

বড়শিতে ঝুলে থাকা অরবিন্দ চন্দ্র রায় বলেন, দীর্ঘ ১১বছর থেকে দেশের বিভিন্নস্থানে এই কাজ করছেন তিনি। তার পিঠে অগণিত ছিদ্র রয়েছে। প্রত্যেকবার পিঠের ভিন্ন ভিন্নস্থানে ছিদ্র করে বড়শির কল লাগানো হয়। এটি করতে বেশ সাধনার প্রয়োজন।

উৎসব আয়োজক পলিপাড়া ডাঙ্গা শ্রী শ্রী কালী মন্দিরের সভাপতি সোহেল চন্দ্র রায় বলেন, চৈত্র মাসের শেষে চড়ক কালীপূজোর আয়োজন করা হয়। এই পূজো ও চড়ক উৎসবকে কেন্দ্র করে দিনব্যাপী মেলা বসেছে। এতে কয়েকে হাজারো ভক্ত ও দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –