• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

দিনাজপুরে বউমেলায় উপচে পড়া ভিড়

প্রকাশিত: ১১ অক্টোবর ২০২২  

শুরু হয়েছে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর বউমেলা। যেখানে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই নারী। মেলায় ঢুকতে পারেন না পুরুষরা। ৬৩ বছরের অধিক সময় ধরে প্রতিবছর লক্ষ্মী পূজার পরদিন বসে এই ঐতিহ্যবাহী বউমেলা।

এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে ফুলবাড়ী পৌর এলাকার সুজাপুর গ্রামে সার্বজনীন পূজা মন্দির চত্বরে বসেছিল এই ঐতিহ্যবাহী বউমেলা। মেলায় ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই ছিলেন নারী। তবে মেলায় কোনো পুরুষকে ঢুকতে দেওয়া হয় না। এমন কি এলাকার জামাইদেরও মেলায় ঢুকতে দেওয়া হয় না। তবে মেলা চত্বরের আশপাশে বিপুলসংখ্যক উৎসুক দর্শনার্থী পুরুষদের ভিড় জমালেও থাকে না তাদের মেলায় প্রবেশাধিকার।

শিশু ও নারী ক্রেতাদের নিয়ে জমে উঠেছিল দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী এই বউমেলাটি। তবে মেলা থেকে নারীরা বেরিয়ে আসার পর সন্ধ্যায় ভাঙা মেলায় প্রবেশের অনুমতি পান পুরুষরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই ত্রিপল ও শামিয়ানা টানিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন দোকানীরা। নারীদের প্রসাধন সামগ্রীই মেলার প্রধান উপজীব্য হলেও ছোটদের খেলনা সামগ্রী, গৃহস্থালির নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীসহ রকমারি মুখরোচক খাবারও ছিল। বিকেল গড়িয়ে এলে সেখানে ভিড় জমতে শুরু করেন বিভিন্ন বয়সী নারী ও শিশুদের।

বউমেলায় কেনাকাটা করতে আসা কলেজ শিক্ষক রীতা রানী কানু, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী অলংকার গুপ্তা, সুমিত্রা রানীসহ মেলায় আগত একাধিক নারী বলেন, লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে প্রতিবছর এই ঐতিহ্যবাহী বউমেলার হয়ে থাকে। মেলায় শুধু নারীরাই ক্রেতা-বিক্রেতা হওয়ায় নির্বিঘ্নে চলাফেরা ও কেনাকাটা করা যায়। তবে মেলায় আসলে খুব আনন্দ লাগে। অনেক পরিচিত নারী ও আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ হয়। জমিয়ে আড্ডা দেওয়া যায়। বউমেলাকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর অনেক আত্মীয়-স্বজন বাড়িতে আসেন। সবাই মিলে মেলার আনন্দ উপভোগ করা যায়।

প্রসাধন সামগ্রী বিক্রেতা অনামিকা বলেন, বউমেলার আগত ক্রেতা সব নারী হওয়ায় মেলায় প্রসাধনী সামগ্রীই বেশি বিক্রি হয়। নারীদের প্রসাধনীর পাশাপাশি শিশুদের খেলনা সামগ্রীও বিক্রি ভালো হয়।

মেলার আয়োজক সুজাপুর সর্বজনীন দুর্গামন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি অশেষ রঞ্জন দাস ও সাধারণ সম্পাদক গৌচন্দ্র সরকার বলেন, ‘লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে প্রতিবছর পূজার পরদিন বউমেলার আয়োজন করা হয়। এটি জমিদার বিমল বাবু শুরু করেন। জমিদার স্বপরিবারে ভারতে চলে গেলেও তার রেখে যাওয়া দীর্ঘ ৬৩ বছরের বেশি সময়ের পুরনো ঐতিহ্যবাহী বউমেলাটি সুজাপুর সর্বজনীন দুর্গামন্দির পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে প্রতি বছর হয়ে আসছে। তবে মেলাটি জমিদারের আমল থেকেই শুধুমাত্র নারীদের জন্যই। এ কারণে মেলায় কোনো পুরুষকে ঢুকতে দেওয়া হয় না। মেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশের পাশাপাশি মন্দিরের স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করেন।

ফুলবাড়ী থানার অফিসার ওসি আশরাফুল ইসলাম বলেন, ঐতিহ্যবাহী বউমেলাটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, বউমেলায় সার্বিক বিষয়ে খোঁজ খবর রাখা হয়েছে। সেখানে কোন প্রকার সমস্যা হয়নি।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –