• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

নুর নবীর বানানো লঞ্চ দেখতে ভিড় করছে মানুষ

প্রকাশিত: ১২ আগস্ট ২০২২  

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরদিঘী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নুর নবী ইসলাম। পেশায় তিনি ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। বরিশালে কাজের সুবাদে সদর ঘাট থেকে লঞ্চে যাতায়াত করতেন। সেখানে বড় বড় লঞ্চ দেখে তার মনে লঞ্চ বানানোর ইচ্ছা জাগে। বাড়িতে ফিরে তিনি বহুতল লঞ্চের আদলে একটি খেলনা লঞ্চ বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। লঞ্চটি পুকুরে চালানো হচ্ছে। প্রতিদিন তার খেলনা লঞ্চটি দেখতে ভিড় করছে বিভিন্ন বয়সী মানুষ। ভিড় করছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও।

নুর নবী ইসলাম জানান, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন। তবে মাধ্যমিকে পড়ার সুযোগ হয়নি তার। কাজের সুবাদে তিনি দীর্ঘদিন বরিশালে ছিলেন। সেখান থেকে লঞ্চে সদরঘাট আসার সময় তিনি আশ্চর্য হয়ে দেখতেন বহুতল লঞ্চ। ঘাটে ঘুরে ঘুরে লঞ্চের নির্মাণশৈলী দেখতেন। পরিকল্পনা করলেন লঞ্চ বানাবেন। তাই বাড়িতে এসে শুরু করলেন লঞ্চ বানানোর কাজ। লঞ্চ নির্মাণের উপকরণ হিসেবে মোটর, ককসিট, লাইটিং ও ব্যাটারি সংগ্রহ করলেন। তিন মাসের মধ্যে বানিয়ে ফেললেন আস্ত এক বহুতল লঞ্চ।

লঞ্চটি তৈরি করতে তিনি ব্যবহার করেছেন ককসিট, ব্যাটারিচালিত মোটর, ম্যাজিক লাইট এবং গাম। দিয়েছেন আলোকসজ্জা ও মিউজিক লাইট। অভ্যন্তরে রেখেছেন মাস্টার কেবিন, যাত্রী কেবিন। এ লঞ্চ তৈরি করতে তার ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকা খরচ। সময় লেগেছে তিন মাসের মতো। লঞ্চটির নাম দিয়েছেন ‘মেসার্স পাভেল শিপিং লাইন্স’।

চরপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সুন্দরদিঘীর স্কুলের পাশে পুকুরে চালানো হচ্ছে ব্যাটারিচালিত লঞ্চটি। রিমোট কন্ট্রোলে লঞ্চটি ঘুরে ঘুরে নুরনবীর কাছে এসে থামছে। তা দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

নুর নবী ইসলাম বলেন, এটা খেলনা হিসেবে তৈরি করেছি। এখন দেখছি এটা দেখতে প্রচুর লোকজন ভিড় করছে। ভালো লাগছে, আরও উদ্বুদ্ধ হচ্ছি। আমার তো আর্থিক অবস্থা ভালো নয়, অর্থ হলে আরও ভালো কিছু করতে পারব।

স্থানীয় তরুণ মাজেদুল ইসলাম বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত ও গর্ববোধ করছি যে আমাদের এলাকার ছোট ভাই দুই-তিন মাস পরিশ্রম করে এ রকম একটা লঞ্চ বানিয়ে আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছে। খুব ভালো লাগছে। 

একই কথা বলেন স্থানীয় যুবক শাহ আলমগীর ও মুরব্বি ইমাম হোসেন।

সুন্দরদিঘী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহিদ বলে, এলাকায় নুরনবী আংকেলের তৈরি লঞ্চ দেখে খুব আনন্দ লাগছে। এটা দেখে আমরাও উদ্বুদ্ধ হয়েছি। আমরাও চেষ্টা করব এ রকম কিছু করার।

সুন্দরদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারমান আব্দুল হালিম বলেন, আমার এলাকায় লঞ্চ বানিয়ে দেখানো দেখে মনে হয়েছে আমাদের ছেলেরা অনেক কিছু করতে পারে। এসব মেধাবীদের মেধার মূল্যায়ন করা উচিত। আমার কাছে মনে হচ্ছে তাকে যদি আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে মেধার মূল্যায়ন করা যায়, তাহলে সে দেশ ও জাতির জন্য আরও কিছু করতে পারবে। তার দিকে নজর দেওয়া উচিত। 

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –