• বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৭ রমজান ১৪৪৫

বদলে গেছে খানসামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান

প্রকাশিত: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০  

মানসম্পন্ন ও মর্যাদাপূর্ণ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে উদ্ভাবনী কর্মপরিকল্পনা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার কারণে বদলে গেছে দিনাজপুরের খানসামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান। এতে সন্তুষ্ট সেবাগ্রহীতা। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কয়েক বছর আগে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা চিকিৎসক সংকটে এবং সেবার মান ভালো না হওয়ায় হাসপাতাল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে বর্তমান সরকারের ‘জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা’ বাস্তবায়নের লক্ষে জনবল সংকট কমানো এবং ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিয়মিত তদারকির কারণে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান উন্নত হয়েছে। দক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থার ফলে এই সরকারি হাসপাতাল দেশের অন্য উপজেলা হাসপাতাল থেকে বেশ কিছুটা আলাদা।

হাসপাতালটি ঝকঝকে পরিষ্কার আর রয়েছে সুসজ্জিত ফুলের বাগান। একদল পরিশ্রমী চিকিৎসক, নার্স-মিডওয়াইফ, ওয়ার্ড বয় ও কর্মচারী কাজ করছেন উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে। যার ফলে স্বাস্থ্য সেবার মানের দিক বিবেচনায় গত বছর রংপুর বিভাগের শ্রেষ্ঠ হয় খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিস থেকে জানা যায়, জরুরি সেবা প্রতিদিন গড়ে আউটডোরে ৪-৫শ রোগী দেখা, ভর্তি রোগীদের সার্বক্ষণিক তদারকি, বিনামূল্যে প্যাথলজি সেবা, কফ ও যক্ষা পরীক্ষা, অভিযোগ বক্স স্থাপন, সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন প্রকার ওষুধ প্রদানে স্বচ্ছতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, অটিজম ও মাদকাসক্ত কর্নারে বিশেষ সেবা প্রদান, স্বাস্থ্য শিক্ষা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো নিয়মিত পরিদর্শন, নির্দেশনার মাধ্যমে সেবা নিশ্চিতকরণ ও ইপিআই কার্যক্রমে রয়েছে সফলতা। 

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যতিক্রমী উদ্যোগগুলো হল প্রেগন্যান্সি ম্যাপের মাধ্যমে গর্ভবতী মায়েদের ডাটাবেজ তৈরি করে তাদেরকে প্রসব পূর্ববর্তী মানসম্মত এএনসি সেবা, প্রসব পরবর্তী কেএমসি ও পিএনসি সেবা দেয়া হয়। গর্ভবতী মায়েদের পরিবহনের জন্য বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, বিনামূল্যে প্রস্রাব ও রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা, ফ্রি আয়রণ আর ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট প্রদান, প্রতি ইউনিয়নে প্রেগন্যান্সি মাদারস ক্লাবের বৈঠকের মাধ্যমে নরমাল ডেলিভারি কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি করতে উদ্ধুদ্ধকরণ কর্মসূচি পালিত হয়। 

এছাড়াও প্রশংসনীয় ও কার্যকরী উদ্যোগগুলো হল গর্ভবতী মায়েদের যেকোনো প্রয়োজনে ২৪ঘণ্টা হটলাইন সার্ভিস চালু, প্রসবকালীন জটিলতা নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও নিরাপদ প্রসবের জন্য সারাক্ষণ মিডওয়াইফ প্রস্তুত থাকা, সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে নবজাতক শিশুদের উপহার সামগ্রী প্রদান ও শিশুদের জন্মসনদ প্রদান করা হয়। এতে উপজেলায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে রোগীদের আস্থা ও সেবাগ্রহীতার সংখ্যা বেড়েছে যার ফলে খানসামা উপজেলায় প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারির হার শতভাগ।

সেবা নিতে আসা ছাতিয়ানগড় গ্রামের কুলসুমা বেগম জানান, ‘আগোত তো ডাক্তার দেখায় গেইছিলো না এখন সবসময় ডাক্তার আছে এইঠে পরীক্ষাও হয় আর ওষুধ দেয় ফ্রি।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. শামসুদ্দোহা মুকুল জানান, সবার সদিচ্ছার কারণে সেবার মানে পরিবর্তন এসেছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে সবার সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রয়োজন। 

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু রেজা মো. মাহমুদুল হক জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের ঊদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় এমপি আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপির দিকনির্দেশনায় স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতের লক্ষে নিরলসভাবে চেষ্টা করছি। তবে ৫০ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন পেলে এবং জনবল ও বরাদ্দ সংকট কমলে সেবার মান আরো কয়েকগুণ বৃদ্ধি হবে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –