• শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৭ ১৪৩১

  • || ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস, আজ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন। বন্যায় দুবাই এবং ওমানে বাংলাদেশীসহ ২১ জনের মৃত্যু। আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও বাড়ল জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম। ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

বিদেশি নাগরিকদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা

প্রকাশিত: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১  

জীবন-জীবিকা, জ্ঞানার্জন, দ্বিন প্রচারসহ নানা প্রয়োজনে দেশ-বিদেশে সফর করতে হয়। নিজের জন্মভূমি ছেড়ে ভিনদেশে দিন কাটাতে হয়। সে দেশের মানুষের সাহায্য-সহযোগিতা প্রবাসজীবনকে নিরাপদ ও সাহসী করে তোলে। এতে একাকিত্বের যাতনা অনেকটা লাঘব হয়। স্বদেশে আগত বিদেশি নাগরিকদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা নিম্নরূপ— 

মক্কাবাসীদের বিদেশ সফর : মক্কাবাসী কুরাইশরা খুব কষ্টে দিনাতিপাত করত। অবশেষে রাসুল (সা.)-এর প্রপিতামহ হাশেম কুরাইশদের ভিনদেশে গিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে উৎসাহিত করেন। তখন থেকে তারা গ্রীষ্মকালে সিরিয়া আর শীতকালে ইয়েমেনে বাণিজ্যিক সফর করতে শুরু করে। সিরিয়ায় শীত আর ইয়েমেনে গরম হওয়ায় গ্রীষ্মকালে সিরিয়া আর শীতকালে ইয়েমেন সফর খুব চমৎকার ছিল। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আসক্তি আছে তাদের শীত ও গ্রীষ্মকালে সফরের।’ (সুরা কুরাইশ, আয়াত : ২)

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর বিদেশ সফর : নবুয়তের আগে রাসুল (সা.) নিজেও একবার  চাচা আবু তালিবের সঙ্গে, আরেকবার খাদিজা (রা.)-এর গোলাম মায়সারার সঙ্গে সিরিয়া অভিমুখে বাণিজ্যিক সফরে রওনা দিয়েছিলেন। অবশ্য শেষ পর্যন্ত নিরাপত্তাজনিত কারণে তাঁর সফর পুরো হয়নি। বসরা থেকে ফিরে এসেছিলেন। (সিরাতে মুস্তফা, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৮৮-১০০)

বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে রাসুল (সা.)-এর আচরণ : রাসুলুল্লাহ (সা.) অনেক সময় মক্কা ও মদিনায় আগত বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং যথার্থ আচরণ করেছেন। তাঁর আচরণে মুগ্ধ হয়ে অনেকে ইসলাম গ্রহণ করেছে। যেমন—মুনকিজ ইবনে হাব্বান নামের জনৈক ব্যক্তি বাহরাইন থেকে ব্যবসার উদ্দেশ্যে মদিনায় আগমন করেছিলেন। একসময় তিনি বাজারে থাকাবস্থায় রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর পাশ দিয়ে যেতে তাঁর ও তাঁর সম্প্রদায়ের সম্মানিত ব্যক্তিদের খোঁজখবর নেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মধুর আচরণে আকৃষ্ট হয়ে তিনি  ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি স্বদেশে ফিরে এক পর্যায়ে তাঁদের নেতাসহ একটি দল নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে ইসলাম সম্পর্কে অবগত হন। তাঁরা ছিলেন আবদুল কায়েস গোত্রের। ‘আবদুল কায়েস গোত্রের প্রতিনিধিদলের আগমন’ শিরোনামে বুখারি ও মুসলিমে হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

বিদেশি নাগরিকরা দেশবাসীর অতিথি : অতিথির আপ্যায়ন প্রত্যেক সত্যবাদী একনিষ্ঠ মুসলমানের ঈমানি ও  নৈতিক দায়িত্ব। কোরআন-সুন্নাহর নানাভাবে আতিথেয়তার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রাসুল (সা.) সব সময় অতিথিদের সমাদর করতেন। কোনো অতিথি এলে ভালো করে যত্ন নিতেন। সাধ্যমতো আতিথেয়তা করতে উদ্বুদ্ধ করতেন। আতিথেয়তাকে তিনি ঈমানের অংশ বলে আখ্যায়িত করেছেন। দেশে আগত বিদেশি নাগরিকরা পুরো দেশবাসীর জন্য অতিথিস্বরূপ। কাজেই তাদের আতিথেয়তার ব্যাপারে সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন অতিথির আপ্যায়ন করে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৬৭২; মুসলিম, হাদিস : ১৮৩)

বিদেশি নাগরিকরা দেশবাসীর প্রতিবেশী : প্রতিবেশীর অধিকার রক্ষায় ইসলামে যথেষ্ট গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সব ধর্মের মানুষ প্রতিবেশীর মধ্যে থাকতে পারে। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আগতরা দেশবাসীর প্রতিবেশী হিসেবে আরো সম্মানী হিসেবে বিবেচিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জিবরাইল (আ.) আমাকে প্রতিবেশী সম্পর্কে এত বেশি তাগিদ দিচ্ছিলেন, যাতে আমার মনে হচ্ছিল যে তাদের আমার উত্তরসূরি বানিয়ে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৬৬৮; মুসলিম, হাদিস : ৫৬৫৪) 

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৬৬৮; মুসলিম, হাদিস : ৫৬৫৪) 

নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা : ইসলামী রাষ্ট্রে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের সব নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রপ্রধানের অন্যতম দায়িত্ব। তাদের জানমালের নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে এবং তাদের ব্যক্তিস্বাধীনতায় কোনো হস্তক্ষেপ করা যাবে না, যেন তারা তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করতে পারে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘মনে রেখো! যে ব্যক্তি কোনো মুয়াহিদ (আনুমতিপ্রাপ্ত বিদেশি) নাগরিকের প্রতি অত্যাচার করে অথবা তাকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে কিংবা সাধ্যাতীত কোনো কাজ চাপিয়ে দেয় বা জোরপূর্বক তার কোনো সম্পদ ছিনিয়ে নেয়, কিয়ামতের দিন আমি তার (অমুসলিম নাগরিকের) পক্ষ অবলম্বন করব।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩০৫৪)

সব মানুষের প্রতি মানবীয় আচরণ : এ ছাড়া সব মানুষের প্রতি উদার মনোভাব পোষণ ও মানবীয় আচরণ প্রদর্শন ইসলামের অন্যতম শিক্ষা। পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা ও অন্যের প্রয়োজনে এগিয়ে আসা ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার অনন্য উপাদান। বিদায় হজের ভাষণে নবী (সা.) বলেন, ‘হে লোকসকল! তোমাদের রক্ত, তোমাদের ইজ্জত, তোমাদের সম্পদ পরস্পরের জন্য চিরস্থায়ীভাবে হারাম করা হলো। যেমন আজকের এই দিন (আরাফাতের দিন), এই মাস (জিলহজ মাস), তোমাদের এই শহর (মক্কা নগরী) সবার জন্য হারাম।’ অর্থাৎ মাস, দিন, স্থান সবই পবিত্র। এ সময় ও স্থানে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করা বৈধ নয়। কোনোভাবেই অন্যের ওপর অত্যাচার-নিপীড়ন করা যাবে না। অন্যের অধিকার নষ্ট করা যাবে না এবং পৃথিবীতে দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা যাবে না। আল্লাহ বলেন, ‘আর যখন তাদের বলা হয় যে দুনিয়ার বুকে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি কোরো না, তখন তারা বলে, আমরা তো মীমাংসার পথ অবলম্বন করছি। মনে রেখো, তারাই হাঙ্গামা সৃষ্টিকারী; কিন্তু তারা তা উপলব্ধি করে না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১২)

আর্থিক লেনদেন, ব্যবসা-বণিজ্য ও সেবার আদান-প্রদান সব দেশের ও সব ধর্মের মানুষের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি উদার ও সহনশীল। তাই ইসলাম ও দেশের স্বার্থে বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক আচরণ একান্ত কাম্য।জীবন-জীবিকা, জ্ঞানার্জন, দ্বিন প্রচারসহ নানা প্রয়োজনে দেশ-বিদেশে সফর করতে হয়। নিজের জন্মভূমি ছেড়ে ভিনদেশে দিন কাটাতে হয়। সে দেশের মানুষের সাহায্য-সহযোগিতা প্রবাসজীবনকে নিরাপদ ও সাহসী করে তোলে। এতে একাকিত্বের যাতনা অনেকটা লাঘব হয়। স্বদেশে আগত বিদেশি নাগরিকদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা নিম্নরূপ— 

মক্কাবাসীদের বিদেশ সফর : মক্কাবাসী কুরাইশরা খুব কষ্টে দিনাতিপাত করত। অবশেষে রাসুল (সা.)-এর প্রপিতামহ হাশেম কুরাইশদের ভিনদেশে গিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে উৎসাহিত করেন। তখন থেকে তারা গ্রীষ্মকালে সিরিয়া আর শীতকালে ইয়েমেনে বাণিজ্যিক সফর করতে শুরু করে। সিরিয়ায় শীত আর ইয়েমেনে গরম হওয়ায় গ্রীষ্মকালে সিরিয়া আর শীতকালে ইয়েমেন সফর খুব চমৎকার ছিল। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আসক্তি আছে তাদের শীত ও গ্রীষ্মকালে সফরের।’ (সুরা কুরাইশ, আয়াত : ২)

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর বিদেশ সফর : নবুয়তের আগে রাসুল (সা.) নিজেও একবার  চাচা আবু তালিবের সঙ্গে, আরেকবার খাদিজা (রা.)-এর গোলাম মায়সারার সঙ্গে সিরিয়া অভিমুখে বাণিজ্যিক সফরে রওনা দিয়েছিলেন। অবশ্য শেষ পর্যন্ত নিরাপত্তাজনিত কারণে তাঁর সফর পুরো হয়নি। বসরা থেকে ফিরে এসেছিলেন। (সিরাতে মুস্তফা, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৮৮-১০০)

বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে রাসুল (সা.)-এর আচরণ : রাসুলুল্লাহ (সা.) অনেক সময় মক্কা ও মদিনায় আগত বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং যথার্থ আচরণ করেছেন। তাঁর আচরণে মুগ্ধ হয়ে অনেকে ইসলাম গ্রহণ করেছে। যেমন—মুনকিজ ইবনে হাব্বান নামের জনৈক ব্যক্তি বাহরাইন থেকে ব্যবসার উদ্দেশ্যে মদিনায় আগমন করেছিলেন। একসময় তিনি বাজারে থাকাবস্থায় রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর পাশ দিয়ে যেতে তাঁর ও তাঁর সম্প্রদায়ের সম্মানিত ব্যক্তিদের খোঁজখবর নেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মধুর আচরণে আকৃষ্ট হয়ে তিনি  ইসলাম গ্রহণ করেন। তিনি স্বদেশে ফিরে এক পর্যায়ে তাঁদের নেতাসহ একটি দল নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে ইসলাম সম্পর্কে অবগত হন। তাঁরা ছিলেন আবদুল কায়েস গোত্রের। ‘আবদুল কায়েস গোত্রের প্রতিনিধিদলের আগমন’ শিরোনামে বুখারি ও মুসলিমে হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

বিদেশি নাগরিকরা দেশবাসীর অতিথি : অতিথির আপ্যায়ন প্রত্যেক সত্যবাদী একনিষ্ঠ মুসলমানের ঈমানি ও  নৈতিক দায়িত্ব। কোরআন-সুন্নাহর নানাভাবে আতিথেয়তার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রাসুল (সা.) সব সময় অতিথিদের সমাদর করতেন। কোনো অতিথি এলে ভালো করে যত্ন নিতেন। সাধ্যমতো আতিথেয়তা করতে উদ্বুদ্ধ করতেন। আতিথেয়তাকে তিনি ঈমানের অংশ বলে আখ্যায়িত করেছেন। দেশে আগত বিদেশি নাগরিকরা পুরো দেশবাসীর জন্য অতিথিস্বরূপ। কাজেই তাদের আতিথেয়তার ব্যাপারে সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন অতিথির আপ্যায়ন করে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৬৭২; মুসলিম, হাদিস : ১৮৩)

বিদেশি নাগরিকরা দেশবাসীর প্রতিবেশী : প্রতিবেশীর অধিকার রক্ষায় ইসলামে যথেষ্ট গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সব ধর্মের মানুষ প্রতিবেশীর মধ্যে থাকতে পারে। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আগতরা দেশবাসীর প্রতিবেশী হিসেবে আরো সম্মানী হিসেবে বিবেচিত। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জিবরাইল (আ.) আমাকে প্রতিবেশী সম্পর্কে এত বেশি তাগিদ দিচ্ছিলেন, যাতে আমার মনে হচ্ছিল যে তাদের আমার উত্তরসূরি বানিয়ে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৬৬৮; মুসলিম, হাদিস : ৫৬৫৪) 

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৬৬৮; মুসলিম, হাদিস : ৫৬৫৪) 

নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা : ইসলামী রাষ্ট্রে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের সব নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করা রাষ্ট্রপ্রধানের অন্যতম দায়িত্ব। তাদের জানমালের নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে এবং তাদের ব্যক্তিস্বাধীনতায় কোনো হস্তক্ষেপ করা যাবে না, যেন তারা তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করতে পারে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘মনে রেখো! যে ব্যক্তি কোনো মুয়াহিদ (আনুমতিপ্রাপ্ত বিদেশি) নাগরিকের প্রতি অত্যাচার করে অথবা তাকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে কিংবা সাধ্যাতীত কোনো কাজ চাপিয়ে দেয় বা জোরপূর্বক তার কোনো সম্পদ ছিনিয়ে নেয়, কিয়ামতের দিন আমি তার (অমুসলিম নাগরিকের) পক্ষ অবলম্বন করব।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৩০৫৪)

সব মানুষের প্রতি মানবীয় আচরণ : এ ছাড়া সব মানুষের প্রতি উদার মনোভাব পোষণ ও মানবীয় আচরণ প্রদর্শন ইসলামের অন্যতম শিক্ষা। পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা ও অন্যের প্রয়োজনে এগিয়ে আসা ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার অনন্য উপাদান। বিদায় হজের ভাষণে নবী (সা.) বলেন, ‘হে লোকসকল! তোমাদের রক্ত, তোমাদের ইজ্জত, তোমাদের সম্পদ পরস্পরের জন্য চিরস্থায়ীভাবে হারাম করা হলো। যেমন আজকের এই দিন (আরাফাতের দিন), এই মাস (জিলহজ মাস), তোমাদের এই শহর (মক্কা নগরী) সবার জন্য হারাম।’ অর্থাৎ মাস, দিন, স্থান সবই পবিত্র। এ সময় ও স্থানে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করা বৈধ নয়। কোনোভাবেই অন্যের ওপর অত্যাচার-নিপীড়ন করা যাবে না। অন্যের অধিকার নষ্ট করা যাবে না এবং পৃথিবীতে দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা যাবে না। আল্লাহ বলেন, ‘আর যখন তাদের বলা হয় যে দুনিয়ার বুকে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি কোরো না, তখন তারা বলে, আমরা তো মীমাংসার পথ অবলম্বন করছি। মনে রেখো, তারাই হাঙ্গামা সৃষ্টিকারী; কিন্তু তারা তা উপলব্ধি করে না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১২)

আর্থিক লেনদেন, ব্যবসা-বণিজ্য ও সেবার আদান-প্রদান সব দেশের ও সব ধর্মের মানুষের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি উদার ও সহনশীল। তাই ইসলাম ও দেশের স্বার্থে বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে সৌজন্যমূলক আচরণ একান্ত কাম্য।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –