• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

বিদ্যালয় যেন এক টুকরো বাগান

প্রকাশিত: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২  

বিদ্যালয় যেন এক টুকরো বাগান                           
বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে কাটা মেহেদী গাছ দিয়ে তৈরি বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে ৬৫ নম্বর সাবেক গুলিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ ফটক দিয়েই স্কুল ড্রেস পড়ে কোমলমতি শিশুরা ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। এছাড়া কাটা মেহেদী গাছের ঢোগা মোড়ানো ফটক যা দৃষ্টিনন্দন বাগানের ফটক।

প্রবেশ করেই চোখে পড়বে কাটা মেহেদী গাছ দিয়ে তৈরি সুসজ্জিত শহীদ মিনার, জাতীয় পতাকা, শাপলা ফুল, নৌকা, কুঁড়েঘর, ফুলের টপ, আয়না, সোফা সেট, টেবিল, হেলিকপ্টার, ফুটন্ত লাল টকটকে জবাফুল. গোলাপি জবা ফল, সাদা জবাফুল, কাটা মেহেদী গাছের বিভিন্ন জিনিসপত্র আর ফুলন্ত ফুলের বাগানটি যেন ছাত্রছাত্রীদের ডাকছে ইশারায়। এমন দৃশ্যে মুগ্ধ দর্শনার্থীরাও। 

এই সুসজ্জিত কাটা মেহেদী গাছের গাছের বাগানের নেশায় ছুটে আসছে শিক্ষার্থীরা। সবুজের ঘেরা বিদ্যালয়ের অপরূপ দৃশ্য আর মনোরম পরিবেশ ও লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে বাগানে সময় কাটানো শিক্ষকের সঙ্গে নিজেরাই বাগান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও পানি ঢালার কাজটি করে থাকে শিক্ষার্থীরা। বলছিলাম দিনাজপুরের খানসামার ভাবকি ইউপির সাবেক গুলিয়াড়া গ্রামের ৬৫ নম্বর সাবেক গুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কথা।

নিয়মিত পাঠদান, খেলাধুলা ও শিক্ষকদের আন্তরিকতায় বিদ্যালয়টি জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হিসেবে সুনাম অর্জন করতে শুরু করেছে। বিশেষ করে এই বিদ্যালয়ের ব্যতিক্রমী কাটা মেহেদী গাছ দিয়েই বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক মনোমুগ্ধ বাগান যেন আলাদাভাবে দৃষ্টিনন্দন বৃদ্ধি করেছে। অনেক দূর-দূরান্ত থেকেও দর্শনার্থীরা এই বিদ্যালয়ে আসতে শুরু করেছেন। এক সময় এই অজপাড়া গ্রামকে অনেকেই চিনতেন না। এখন সাবেক গুলিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাগানের সৌন্দর্যতার দেখার জন্যই এখন গ্রামটি পরিচিত হয়ে উঠছে । 

১৯৮৯ সালে এই গ্রামের কিছু শিক্ষানুরাগী নিজস্ব প্রচেষ্টায় গ্রামের নাম অনুসারে সাবেক গুলিয়াড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপন করেন। ২০১৩ সালে এ বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। তখন থেকেই এই বিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয়েছে ৬৫ নম্বর সাবেক গুলিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। করোনাকালে  বিদ্যালয়টিও বন্ধ থাকার সময়ে বিদ্যালয়ের শোভা বর্ধনের কাজটি করেছেন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস। 

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুক্ত খাতুন, সুমন দাস ও তানিয়া বলে, আব্দুল কুদ্দুস স্যারের প্রচেষ্ঠায় আমাদের বিদ্যালয়ের সুনাম ছড়াচ্ছে। আমরাও স্যারের সঙ্গে বাগান পরিচর্চা করি। 

সহকারী শিক্ষক সুধা রানী রায় বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস স্যার এই বাগানটি বেশি পরির্চচা করেন থাকেন। এই স্কুলের বাগানটি আলাদাভাবে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। 
   
স্থানীয় তহিদুল ইসলাম বলেন, এই ভিন্ন রকমের বাগানের অনুভূতি ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও  গ্রামবাসিদেও কাছে টানে। খাদ্য মানুষের বেঁচে থাকার চাহিদা পূরণ করে আর বাগান মানুষের মনের চাহিদা পূরণ করে ।

প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, প্রকৃতির প্রতি ভালবাসা থেকেই বিদ্যালয়ের মাঠে নিজ উদ্যোগে এই কাটা মেহেদী গাছের লতা দিয়েই বিদ্যালটিকে সাজানো চেষ্ঠা করেছি। এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসাবে যতটুকু পরিচিতি হয়েছে তার চেয়ে বেশি পরিচিতি লাভ করেছি এই বিদ্যালয়ে গাছের বাগান তৈরি করে। কাটা মেহেদি গাছ দিয়ে তৈরি করা শাপলা, পতাকা, শহীদ মিনার, হেলিকাপ্টার আমাদের স্বাধীনতা চিহ্ন বহন করে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –