• বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৫ ১৪৩১

  • || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ইতিহাসে অনন্য: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিরা হস্ত‌ক্ষেপ করবে না: ওবায়দুল কাদের লালমনিরহাটে যুবলীগ কর্মীর পায়ের রগ কাটলেন যুবদল নেতা বাসার ছাদ থেকে পড়ে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদ-নববর্ষে ১০ জন নিহত, আহত ২ শতাধিক

বিরামপুর সীমান্তে ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দি

প্রকাশিত: ২৪ জুন ২০২১  

ভারত সীমান্তঘেঁষা দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকাসহ উপজেলার ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে জ্বর-সর্দি। এতে করে হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে করোনা রোগীর সংখ্যা। জ্বর, সর্দিসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিনই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হচ্ছেন রোগী। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সীমান্তঘেঁষা এই উপজেলার মানুষ করোনা পরীক্ষা করাতে আগ্রহী নন। সঠিক সময়ে করোনা পরীক্ষা করানো গেলে আক্রান্তের হার আরও বাড়বে। পরীক্ষা না করার কারণে প্রচণ্ড ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ওই এলাকার মানুষ। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সীমান্ত ঘেঁষা বেশ কিছু গ্রাম রয়েছে যে গ্রামের প্রায় ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে জ্বর ও সর্দির রোগী। গ্রামের মানুষের মধ্যে করোনা পরীক্ষা করার প্রবণতা কম। যার ফলে তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে করোনা পরীক্ষা করাচ্ছে না। ফলে দিন দিন বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। 

গ্রামগুলোর মধ্যে দক্ষিণ দাউদপুর, গোবিন্দপুর, কাজিপাড়া, দক্ষিণ দামোদরপুর, খিয়ারমামুদপুর, উত্তর দাউদপুর, দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর এলাকা অন্যতম। এসব এলাকার মানুষ স্থানীয় বাজারের পল্লী চিকিৎসকদের কাছ থেকে ওষুধ নিয়ে খাচ্ছেন। অনেকের শরীরের তাপমাত্রা একশর বেশি। গত কয়েক দিন আগে এই এলাকায় করোনা আক্রান্ত হয়ে দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ইতোমধ্যে ওই দুই পরিবারের প্রায় ৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
                                                          
এদিকে, বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় এক দিনেই ৪২ জন মানুষের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছে। যা করোনাকালীন শনাক্তের হারে সর্বোচ্চ। এনিয়ে উপজেলায় বর্তমান রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১২৮ জনে। উপজেলায় শনাক্তের হারে শতকরা ৫০ শতাংশ।

আজ বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সকালে দিনাজপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রেরিত জেলার কভিড-১৯ সংক্রমণ সংক্রান্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা সিভিল সার্জন আব্দুল কুদ্দস।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত মাস পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ছিল চারজনে। কিন্তু হঠাৎ করে চলতি মাসের কয়েক দিনেই আক্রান্ত হয়েছেন ১২৮ জন। একই সময়ে ৪ জন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে প্রতিদিনই জ্বর, সর্দি নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। 

এদিকে করোনাভাইরাসের লাগাম টেরে ধরতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ৮ জন ব্যক্তিকে মাস্ক না পরার অপরাধে জরিমানা করেছেন।  

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবাবর পরিকল্পনা অফিসার শ্যামল কুমার রায় বলেন, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আরটি পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষার জন্য ৮২টি নমুনা পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় ২ জন এবং পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষায় ৪০ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে এক দিনেই উপজেলায় ৪২ জনের শরীরে করোনাভাইরাস উপস্থিতি পাওয়া গেছে। যা গত করোনাভাইরাসের শুরু থেকে সর্বোচ্চ।

তিনি বলেন, আমাদের উপজেলায় প্রায় ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দি ছড়িয়ে পড়ছে। সেই মানুষগুলো সঠিক সময়ে করোনা পরীক্ষা করাচ্ছেন না। ফলে করোনা ছড়িয়ে পড়ছে। যেহেতু বিরামপুরে কোনো করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল নেই তাই অধিক ঝুঁকি না নিয়ে তাদের দিনাজপুর কিংবা রংপুরে পাঠানো হচ্ছে।          
                           
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিমল কুমার সরকার বলেন, বিরামপুর উপজেলাটি সীমান্তবর্তী হওয়ায় আমরা বেশ ঝুঁকিতে রয়েছি। দিন দিন বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। অজ একদিনেই আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ জন। যা একটি উপজেলার মানুষের জন্য বেশ আতঙ্কের বিষয়। 

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রতিদিন আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একদিনেই ১০ হাজার মাস্ক বিতরণ করেছি। সংক্রমণ রোধে এলাকার মানুষকে বেশি করে সচেতন হতে হবে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –