মদিনা সনদে সম্প্রীতি ও সংহতির অঙ্গীকার
প্রকাশিত: ২৫ নভেম্বর ২০২১
মদিনায় হিজরতের পর বিকাশমান মুসলিম সমাজ ও ইসলামী রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার কথা ভেবে মহানবী (সা.) মদিনাবাসীর কাছ থেকে সংহতি, পারস্পরিক সহযোগিতা ও সম্প্রীতির অঙ্গীকার গ্রহণ করেন, যা মদিনার সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ইতিহাসে যাকে মদিনা সনদ বলা হয়। উপমহাদেশের বরেণ্য সিরাত গবেষক আল্লামা ইদরিস কান্ধলভি (রহ.) এর কারণ অনুসন্ধান করে বলেছেন, ‘এটি মুসলিম ও জিম্মিদের (অমুসলিম দেশের অমুসলিম নাগরিক) মধ্যকার অন্যান্য চুক্তির মতো একটি চুক্তি। তবে পুরোপুরি তেমন ছিল না। কেননা তা সেটা হিজরতের পর ইসলামের উত্থান ও নেতৃত্বের একেবারেই প্রাথমিক সময়ে সংঘটিত হয়েছে।’ (সিরাতে মোস্তফা : ১/৪৪০)
আল্লামা ইবনে হিশাম (রহ.) বলেন, ‘অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সা.) আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে একটি ঘোষণাপত্র সম্পাদন করেন। এই দলিলের মাধ্যমে তিনি ইহুদিদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রতিশ্রুতি প্রদান ও গ্রহণ করেন, তাদের ধর্মপালনের স্বাধীনতা ও ধন-সম্পদে তাদের মালিকানার স্বীকৃতি দেন।’ (সিরাতে ইবনে হিশাম, পৃষ্ঠা ১৪০)
মদিনায় ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্রের বিকাশে প্রধান অন্তরায় ছিল ইহুদিরা। কেননা তারা ছিল অস্ত্রধারী যুদ্ধবাজ, অর্থনীতি এবং জীবন-জীবিকার দিক থেকেও তারা মুসলমানদের চেয়ে সমৃদ্ধ ছিল। হিজরতের আগে মুসলমান ও মক্কার কুরাইশদের মধ্যকার সমস্যার ক্ষেত্রে তাদের কোনো পক্ষপাত ছিল না। কিন্তু নবী (সা.) যখন মদিনায় আসেন, তখন তাদের কায়েমি স্বার্থে কুঠারাঘাত পড়ে। এ ছাড়া মদিনার অধিবাসীদের একটি শ্রেণি মুনাফিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। চাতুর্য, চাটুকারিতা ও ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম ছিল তাদের অবলম্বন। মুনাফিকদের ভেতর আবদুল্লাহ ইবনে উবাই ইবনে সালুলের নাম সর্বাগ্রে উচ্চারিত হয়। মহানবী (সা.) মদিনায় হিজরত করার আগে তাকে মদিনার শাসক মনোনীত করার আলোচনা চলছিল। ফলে সে নবীজি (সা.)-কে তার স্বপ্নভঙ্গের জন্য দায়ী মনে করত এবং প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক কাজে লিপ্ত ছিল। মদিনা সনদ ইহুদি ও মুনাফিকদের শত্রুতা ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি কার্যকর পদক্ষেপ ছিল। (মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস : ২/৩২-৩৩)
সিরাত গ্রন্থগুলোতে মদিনা সনদের বিভিন্নসংখ্যক ধারা উল্লেখ করা হয়েছে। ড. আলী মুহাম্মদ সাল্লাবি মদিনা সনদের ৪৬টি ধারা উল্লেখ করেছেন। আল্লামা শফিউর রহমান মোবারকপুরী মুসলমান ও ইহুদিদের পৃথক পৃথক অঙ্গীকারের ধারা উল্লেখ করেছেন। তাঁর বর্ণনামতে মুসলিমরা পরস্পরের প্রতি ১৬টি অঙ্গীকার এবং মুসলিম ও ইহুদিরা পরস্পরের প্রতি ১২টি অঙ্গীকার করেন। মুসলিমরা যেসব বিষয়ে অঙ্গীকার করেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো—
১. মুসলিমরা একটি স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে বিবেচিত হবে।
২. কোরাইশরা মুহাজিররা এবং মদিনার আনসাররা তাদের পূর্ব নিয়ম অনুযায়ী পারস্পরিক মুক্তিপণ আদায় করবে। উভয় শ্রেণি মুমিনদের মধ্যে সুবিচারমূলকভাবে বন্দিদের ফিরিয়ে দেবে।
৩. প্রচলিত রীতি অনুযায়ী মুমিনরা ফিদিয়া ও মুক্তিপণের ক্ষেত্রে পরস্পরকে দান ও উপহার থেকে বঞ্চিত করবে না।
৪. যারা বাড়াবাড়ি, অবিচার, হাঙ্গামা ও পাপে লিপ্ত হবে, সব মুমিন তার বিরোধিতা করবে।
৫. মুমিনরা পরস্পরকে কোনো কাফিরকে হত্যার অভিযোগে হত্যা করবে না।
৬. যেসব ইহুদি আমাদের আদর্শে দীক্ষিত হবে, তাদের সাহায্য করা হবে এবং তারা অন্য মুসলমানের মতোই ব্যবহার পাবে।
৭. কোনো মুসলমানই কাফের কুরাইশদের কারো জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা দিতে পারবে না। কোনো কুরাইশ কাফের মুসলমানের কাছে জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা চাইতে পারবে না।
৮. মুমিনরা পরস্পরের বিরোধিতায় লিপ্ত হবে না। তোমাদের মধ্যে কোনো বিষয়ে মতবিরোধ হলে সে বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশ অনুযায়ী মীমাংসা করা হবে।
একইভাবে ইহুদি ও মুসলিমদের মধ্যে একটি অঙ্গীকারনামা ও চুক্তি সংঘটিত হয়। সে চুক্তির অন্যতম ধারাগুলো হলো—
১. বনু আউফের ইহুদিরা মুসলমানদের সঙ্গে মিলিত হয়ে একই উম্মত বিবেচিত হবে। ইহুদি ও মুসলমানরা নিজ নিজ দ্বিনের ওপর আমল করবে। বনু আউফ ছাড়া অন্য ইহুদিরাও একই রকম অধিকার ভোগ করবে।
২. ইহুদিরা নিজেদের সমুদয় ব্যয়ের জন্য দায়ী হবে এবং মুসলিমরা নিজেদের ব্যয়ের জন্য পৃথক পৃথকভাবে দায়ী হবে।
৩. এই চুক্তির আওতাভুক্তদের কোনো অংশের সঙ্গে যারা যুদ্ধ করবে সবাই সম্মিলিতভাবে তাদের প্রতিহত করবে।
৪. এই চুক্তির অংশীদাররা পরস্পরের কল্যাণ কামনা করবে। তবে সেই কল্যাণ কামনা ও সহযোগিতা ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত হতে হবে, অন্যায়ের ওপর নয়।
৫. কোনো ব্যক্তি তার মিত্রের কারণে অপরাধী বিবেচিত হবে না।
৬. যত দিন ধরে যুদ্ধ চলবে, তত দিন ইহুদিরাও মুসলিমদের সঙ্গে যুদ্ধের ব্যয়ভার বহন করবে।
৭. এই চুক্তির অংশীদারদের জন্য মদিনায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও রক্তপাত নিষিদ্ধ থাকবে।
৯. এই চুক্তির অংশীদারদের মধ্যে কোনো নতুন সমস্যা দেখা দিলে বা ঝগড়া-বিবাদ হলে আল্লাহর আইন অনুযায়ী রাসুলুল্লাহ (সা.) তার মীমাংসা করবেন। (আর-রাহিকুল মাখতুম, পৃষ্ঠা ১৯৬ ও ২০০; আস-সিরাতুন নাবাবিয়্যা, পৃষ্ঠা ৩২৪)
ইমাম আবু জাহরা (রহ.) মদিনা সনদের চারটি বৈশিষ্ট্য ও উপকার উল্লেখ করেছেন। তা হলো—
এক. রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর একক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা : মদিনার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নবী কারিম (সা.) মদিনার সব গোত্র ও পক্ষকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে একত্র করতে পেরেছিলেন।
দুই. ইহুদি কর্তৃত্বের অবসান : এই অঙ্গীকারের মাধ্যমে মদিনায় যুগ যুগ ধরে চলে আসা ইহুদি কর্তৃত্বের অবসান ঘটে। তাদের বিষয়ে আল্লাহ তাআলা মহানবী (সা.)-কে পূর্ণাঙ্গ ইচ্ছাধিকার দিয়েছিলেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যদি তারা আপনার কাছে আসে তবে তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দিন অথবা তাদের উপেক্ষা করুন। যদি তাদের উপেক্ষা করেন, তবে তারা আপনার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। আর যদি আপনি তাদের মধ্যে ফায়সালা করেন তবে ন্যায়বিচার করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়বিচারকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত : ৪৬)
তিন. সামাজিক মৈত্রী প্রতিষ্ঠা : এই চুক্তি ও অঙ্গীকারের ভিত্তি ছিল পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতার ওপর। যেন মদিনার সব অধিবাসী একই পরিবারভুক্ত।
চার. সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা : এই চুক্তি ছিল অন্যায় প্রতিরোধ করে একটি ন্যায়ভিত্তিক শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার। (খাতামুন নাবিয়্যিন, পৃষ্ঠা ৪৯৯)
– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –- ভ্রু ম্যাজিক
- জয়সওয়ালের শতকে সপ্তম জয় রাজস্থানের
- প্রথমবার সালমানের বিপরীতে কিয়ারা
- ইস্তিসকার নামাজের সময় ও বিধি-বিধান
- লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে
- ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’
- ট্রেনের টিকিট এবার ভেন্ডিং মেশিনে, দাঁড়াতে হবে না লাইনে
- মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
- পাকিস্তান-ইরানের সম্পর্কের নতুন মাত্রা
- ‘জলবায়ু অভিযোজনে সফলতার জন্য সবার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস জরুরি’
- পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত সচিব হলেন ১৩০ জন
- আমিরাতে পৌঁছেছে জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ, সুস্থ আছেন নাবিকরা
- ঢিলেঢালা পোশাক ও যথাসম্ভব ছায়ায় থাকুন: চিফ হিট অফিসার
- দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড
- দুপুরের মধ্যে ৬০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে ঝড়
- ‘যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত’
- হিলি সীমান্ত পরিদর্শনে সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর প্রতিনিধি দল
- দিনাজপুরে হলিল্যান্ড কলেজে ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
- ঘোড়াঘাটে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন সভা
- দিনাজপুর জেলা ছাত্রলীগের ৫০০ বৃক্ষের চারা বিতরণ-রোপণ
- দিনাজপুরে ‘বাঁশের চালে’ রান্না হচ্ছে ভাত-পায়েস
- গরমকালে বাড়ি ঠান্ডা রাখার চীনা প্রাচীন কৌশল
- দেশজুড়ে আরো ৩ দিন হিট অ্যালার্ট জারি
- শেষ বলে ১ রানের নাটকীয় জয় পেল কলকাতা
- জনপ্রিয় অভিনেতা রুমি মারা গেছেন
- তীব্র গরমে যেসব আমলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়
- সৌদিতে ভারী বৃষ্টিতে ডুবে গেছে রাস্তাঘাট, ভেসে গেছে গাড়ি
- বোরো মৌসুমের ধান-চালের মূল্য নির্ধারণ করল সরকার
- তীব্র দাবদাহে হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশ
- শাস্তির মুখোমুখি হবেন ‘ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা’
- সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ: অর্থমন্ত্রী
- দিনাজপুরের হাকিমপুরের হিলিতে শিক্ষক-কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট
- দিল্লী হাইকমিশনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত
- ৬ শতাধিক পটল গাছ উপড়ে ফেলল দুর্বৃত্তরা, দিশেহারা কৃষক
- চুমু খেতে চাওয়া সেই পীরজাদা হারুনকে দলে নিলেন নিপুণ!
- ঈদে পার্বতীপুর- জয়দেবপুর রুটে চলবে ৩টি বিশেষ ট্রেন
- আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এডিবির আরো সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
- ইস্তিসকার নামাজের সময় ও বিধি-বিধান
- ঈদের দিন বন্ধ থাকবে আন্তঃনগর ট্রেন
- রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সহিংসতা বাড়ছে
- বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি
- বুয়েটে অপরাজনীতি হচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে: সেতুমন্ত্রী
- ‘ডানপন্থী রাজনৈতিক দল নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাস করে না’
- গোর-এ-শহীদ ময়দানে ৬ লাখ মুসল্লির নামাজ আদায়
- পরীক্ষামূলক জিরা চাষে কৃষকের বাজিমাত
- টানা ৬ দিন বন্ধের পর হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানি শুরু
- আইপিএলের মাঝপথে হঠাৎ দেশে ফিরলেন মুস্তাফিজ
- দিনাজপুরে হলিল্যান্ড কলেজে ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
- মস্কো হামলায় ইউক্রেনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই: হোয়াইট হাউজ
- রাইমা সেন কেনো হুমকি!