• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১০ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

রংপুরে দিনদিন বাড়ছে শীতের তীব্রতা

প্রকাশিত: ১ ডিসেম্বর ২০২১  

রংপুরে দিনদিন বাড়ছে শীতের তীব্রতা। মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত অনুভূত হচ্ছে হাড় কাঁপানো শীত। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে নিম্ন আয়ের মানুষরা কাহিল হয়ে পড়ছে। তাই খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুনের উত্তাপ পেতে ঝুঁকছে শীতার্তরা। আর এতে বাড়ছে অগ্নিদগ্ধের ঘটনা। গত এক সপ্তাহে সাত শিশু অগ্নিদগ্ধ হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছে। তাদের বেশীর ভাগের শরীরের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। বুধবার (১ ডিসেম্বর) বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. আব্দুল হামিদ পলাশ।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, শীতের তীব্রতা বাড়ায় রংপুর অঞ্চলে আগুন পোহাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধের ঘটনা বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে অগ্নিদগ্ধ হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে সাত শিশু। বর্তমানে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছে ১২ জন রোগী। এর মধ্যে চিকিৎসাধীন সাত শিশুর শরীরের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। এদের সকলের বয়স ১৫ বছরের নিচে। গত বছর শীত মৌসুমে আগুনের উত্তাপ নিতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গেছেন ১৭ জন। চলতি শীত মৌসুমে অগ্নিদগ্ধ হয়ে এখনও কোনো রোগীর মৃত্যু না হলেও শৈত্য প্রবাহ শুরু হলে অগ্নিদগ্ধের সংখ্যা ও মৃত্যু বাড়বে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা। তারা বলেছেন, শীতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু রোধে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।

এ বিষয়ে রমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. আব্দুল হামিদ পলাশ জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১২ জনের মধ্যে সাত জনই শিশু। আগুন পোহাতে গিয়ে অসাবধানতাবশত তারা দগ্ধ হয়েছে। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শীত নিবারণে আগুন পোহাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধের ঘটনা থেকে বাঁচতে সচেতনতার কোন বিকল্প নেই।

এদিকে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির কারণে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে সর্দি-কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি। এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে গত এক সপ্তাহে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক হাজার ৩শ রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে বৃদ্ধ ও শিশুর সংখ্যায় বেশি। নগর থেকে একটু দূরে গ্রামে থাকা ছিন্নমূল, অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধদের অবস্থা নাকাল। আগাম শীতের প্রকোপ মোকাবিলায় প্রস্তুতি না থাকায় অনেকেই কষ্টে আছেন। অন্যদিকে শীতের কারণে নগরীর অভিজাত বিপণিবিতান থেকে শুরু করে ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে বাড়ছে শীতার্ত মানুষের ভিড়।

পীরগাছা উপজেলার শিবদেব চরের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, চরাঞ্চলে শীতের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি। কুয়াশার পাশাপাশি হিমেল বাতাশে কাহিল হয়ে পড়েছে অনেকে। শীতবস্ত্রের অভাবে খড় কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন তারা।

রমেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. এস এম নুরুন্নবী বলেন, রংপুর অঞ্চলে শীতের প্রকোপ বেশী। তাই শীতকালে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যায়। শীতজনিত রোগ প্রতিরোধে শিশুদের চিকিৎসার পাশাপাশি গরম কাপড় ও উষ্ণতা জরুরী।

স্থানীয় আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ডিসেম্বর থেকে শুরু করে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত উত্তরাঞ্চলে কয়েকটি শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে রংপুরসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে তাপমাত্রা কমার পাশাপাশি বাড়বে শীতের তীব্রতা। এছাড়াও মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –