• বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১১ ১৪৩১

  • || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
যুদ্ধের অর্থ জলবায়ু পরিবর্তনে ব্যয় হলে বিশ্ব রক্ষা পেত- প্রধানমন্ত্রী দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড মেডিকেল কলেজের ক্লাস অনলাইনে নেয়ার নির্দেশ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘গণতান্ত্রিক রীতিনীতি না মানলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে’ লালমনিরহাটে হত্যা মামলায় বিএনপির দুই নেতা কারাগারে

লুঙ্গি পরা নিয়ে শিক্ষকের সঙ্গে তর্ক, হাবিপ্রবির ২ ছাত্র বহিষ্কার

প্রকাশিত: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১  

অনলাইনে পরীক্ষা চলাকালে লুঙ্গি পরা নিয়ে শিক্ষকের সঙ্গে তর্কে জড়ানোয় দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি করলে ভাইরাল হয়ে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, করোনা পরিস্থিতিতে সৃষ্ট সেশনজট নিরসনের লক্ষ্যে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে ৪ আগস্ট থেকে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণ শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সময়সূচি অনুযায়ী ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ফুড অ্যান্ড প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের জেনারেল ক্যামিস্ট্রি কোর্সের পরীক্ষা শুরু হয়। ওই পরীক্ষায় সবুজ ইসলাম, বনি আমীন, হুমায়রা সিদ্দিক, ইমরান হোসেন আকাশ ও জুবায়ের আল মামুনকে বহিষ্কার করা হয়। এর মধ্যে দুজনকে লুঙ্গি পরা নিয়ে শিক্ষকের সঙ্গে তর্কে জড়ানোয় বহিষ্কার করা হয়।

ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, পরীক্ষা চলাকালে ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল ঠিক করার সময় জুম পরিদর্শক এক ছাত্রকে লুঙ্গি পরা অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় তিনি বিষয়টি অনলাইন পরীক্ষার ড্রেসকোডবহির্ভূত বলে ছাত্রকে অবহিত করেন এবং জুম থেকে রিমুভ করে দেন। এর কিছুক্ষণ পরে আরেক ছাত্রকে জানালা দিয়ে অধিক আলো প্রবেশ করায় জানালার পর্দা টেনে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এ সময় ওই ছাত্রকেও লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় দেখতে পান। পরে তাকেও জুম থেকে রিমুভ করে বহিষ্কার করা হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বহিষ্কার হওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষা চলাকালে আমার পেছনে জানালা দিয়ে আলো আসছে জানিয়ে পর্দা টেনে দেওয়ার কথা বলে অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণকারী একজন শিক্ষক। এ সময় আমি উঠে জানালা বন্ধ করার সময় ওই শিক্ষক আমার লুঙ্গি দেখতে পান। পরে তিনি আমার ড্রেসকোডের কথা বলে আমাকে জুম থেকে বের করে দেন। আমাকে জুম থেকে বের করে দেওয়ার ব্যাপারে শিক্ষকের মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি বহিষ্কার।

কথা হলে ওই বিভাগের ডিন প্রফেসর ড. সাজ্জাত হোসেন সরকার বলেন, অনলাইনে বেশ কিছু নীতিমালা রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে ড্রেসকোড। ওই পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা চলাকালে লুঙ্গি পরিহিত ছিলো। এ সময় তাদের লুঙ্গির পরিবর্তে ড্রেসকোড অনুযায়ী পোশাক পরতে বললে তারা সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের সঙ্গে বাজেভাবে তর্কে জড়ায়।

তিনি আরও বলেন, একজন শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্র খারাপ ব্যবহার করবে এটি আমরা কোনোভাবেই আশা করি না এবং এটি আমাদের জন্য কষ্টের ব্যাপার। অনলাইন পরীক্ষার নীতিমালা অনুসরণ না করায় এবং খারাপ ব্যবহারের কারণে তাদের জুম থেকে বের করে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাদের বহিষ্কার করা হয়।

প্রফেসর ড. সাজ্জাত হোসেন বলেন, তবে ছাত্ররা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সাংবাদিকদের ওই বিষয়টি ভুল তথ্য দিচ্ছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছি। আমরাও চাই না কোনো শিক্ষার্থীর ক্ষতি হোক। আর এজন্যই রাত-দিন পরিশ্রম করে আমরা অনলাইন পরীক্ষা গ্রহণ করছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর ড. সাইফুর রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে সংশ্লিষ্ট ডিনের সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়েছে। পরীক্ষার হলে সুপারভাইজার কিংবা ডিনরা যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সেটিই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। এভাবেই তাদের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আমরা শুধু তাদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করি। এরপরও আমি বিষয়টি জানার চেষ্টা করবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণ সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের ডিন প্রফেসর ড. মাহবুব হোসাইন বলেন, আমরা আশা করি অনলাইনে পরীক্ষা হলেও যেন মনে হয় তারা ক্যাম্পাসেই সশরীরে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। শিক্ষার্থীরা যদি তর্কে জড়ায় এবং বেয়াদবি করে তাহলে শিক্ষকরা তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –