• শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৫ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
বাংলাদেশকে হুমকির মুখে ফেলেছে ক্রমবর্ধমান জলরাশি: গবেষণা উত্তরবঙ্গের মহাসড়কে চার লেন চালু, ঈদযাত্রা হবে স্বস্তির সব উন্নয়ন সহযোগীদের এক প্ল্যাটফর্মে আসা প্রয়োজন: পরিবেশমন্ত্রী বিডিএস ভূমি ব্যবস্থাপনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে: ভূমিমন্ত্রী বিএনপির নিগৃহীত নেতাকর্মীদের তালিকা দিতে হবে: ওবায়দুল কাদের

সবুজে ঘেরা দৃষ্টিনন্দন বিদ্যালয়ে মুগ্ধ শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ১৫ আগস্ট ২০২২  

মেহেদী গাছ দিয়ে তৈরি হয়েছে বিদ্যালয়ে প্রবেশের প্রধান ফটক। নানারকম সবুজ গাছ ও লতাপাতা দিয়ে তৈরি হয়েছে শহীদ মিনার, হেলিকপ্টার, জাতীয় ফুল শাপলা, অবসর কাটানোর বেঞ্চ, ঘরের ছাউনি। গাছ দিয়ে তৈরি নান্দনিক এসব কারুকাজ দেখে মুগ্ধ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। নান্দনিক এসব কারুকাজ দেখতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরাও।

বলছি দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সাবেক গুলিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কথা। ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বিদ্যালয়টি। বর্তমানে বিদ্যালয়ে পাঁচজন শিক্ষক এবং প্রায় ১০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয় চত্বরে নান্দনিক এসব স্থাপনা দেখতে এসে ছবি তুলে স্মৃতি ধরে রাখছেন কেউ কেউ। আপলোড করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। 

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে- প্রায় দুই বছরেরও অধিক সময় ধরে এই সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করেছেন তারা। এতে করে বিদ্যালয়ে সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ গড়ে উঠেছে। আগ্রহের সঙ্গে বিদ্যালয়ে এসে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কাটা মেহেদী গাছ দিয়ে তৈরি প্রবেশ গেট দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়ে নান্দনিক বাগান। বাগানে রয়েছে গাছ দিয়ে তৈরি সুসজ্জিত গেট, বেড়া ও বিভিন্ন স্থাপনা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য স্থাপনাগুলো হল শহীদ মিনার, জাতীয় পতাকা, হেলিকপ্টার, বসার স্থান, শাপলা ফুল, ঘরের ছাউনি প্রভৃতি। সব কিছুর সবুজ রঙে তৈরি হয়েছে অপরূপ দৃশ্য। এতে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে পাচ্ছে মনোরম পরিবেশ। ফলে পড়াশোনার ফাঁকে তারা বাগানে সময়ে কাটাতে পারছে। সঙ্গে দর্শনার্থীরাও ঘুরতে আসছে এ স্কুলে

সাবেক গুলিয়াড়া গ্রামের সামাদ হোসেন বলেন, আমাদের গ্রামের এমন একটা দৃষ্টিনন্দন স্কুলে আছে এটা দেখতে দুর দুরান্ত থেকে আমদের গ্রামের মানুষ আসে এটা দেখে আমাদের ভালো লাগে। শিক্ষার্থীরাও আগ্রহ নিয়ে প্রতিদিন স্কুলে আসে। সুন্দর পরিবেশ হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে আসার কথা বলতে হয় না। স্কুলের পড়াশোনার মানও অনেক ভালো। 

চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দর থেকে স্কুলের বাগান দেখতে আসা দর্শনার্থী লতা রানি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি দেখে আজ দেখতে আসছি। স্কুলের মাঠ পার্কের মতো সুন্দর করে সাজানো। সব কিছু দেখে খুব ভালো লাগল।

স্কুলশিক্ষার্থী আলামিন হোসেন বলেন, আমাদের স্কুল মাঠে সুন্দর বাগানটি আমাদের ভালো লাগে। অনেকে এখন আমাদের স্কুলের বাগান দেখতে আসে। আমরা ক্লাস ছুটির পর সবাই মিলে খেলাধুলা করি বাগানের ভেতরে।

বাগানের রূপকার বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বিদ্যালয়ে আগে বাগান থাকলেও ২০১৭ সালে পরিকল্পিতভাবে নিজ অর্থায়নে বাগান গড়ে তুলি। এর মধ্যে বিগত বছরে স্থানীয় এমপি ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বাগানের পরিধি বৃদ্ধি করি এবং গ্রিলের মাধ্যমে বাগানটি সুরক্ষিত করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্কুলের বাগানটি ছবি প্রকাশ হলে অনেকেই প্রতিদিন দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে আসছে। আমার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগকে অনেকেই সাধুবাদ জানাচ্ছে। স্কুলের সৌন্দর্যের প্রশংসা করছে সবাই। 

তিনি আরও বলেন, ছোটবেলা থেকেই বাগানের প্রতি আগ্রহ ছিল। সেই আগ্রহ থেকেই স্কুল চত্বরে বাগান তৈরি করেছি। এই বাগানে বিভিন্ন প্রতীক ও স্তম্ভ তৈরি করা হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন এই বাগান এক দিকে যেমন শিক্ষার্থীদের ক্লাসের পাশাপাশি বিনোদন দেবে, তেমনি স্বাধীনতার ইতিহাস সম্পর্কে জানাবে। এখন এই বাগানের পরিধি ও মান বৃদ্ধি করতে আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজন। 

খানসামা উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা এসএমএ মান্নান বলেন, উপজেলার দৃষ্টিনন্দন সাবেক গুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাগানের দৃশ্য ও ডিজাইন সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। যা সত্যিই প্রশংসনীয়। স্কুলের সুন্দর বাগান দেখে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা নিজেরাও এখন বাসাবাড়িতে ফুলের বাগান তৈরি করছে।  

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –