• শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ৬ ১৪৩১

  • || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ইসরায়েলের হামলার পর প্রধান দুটি বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল শুরু। ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানে।

সরকারি কোষাগারের ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলায় বাদী গ্রেফতার

প্রকাশিত: ২৫ মার্চ ২০২১  

দিনাজপুরে ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে সরকারি কোষাগার থেকে দুই কোটি ১৯ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গ্রেফতার আসামি হলেন সাইফুল ইসলাম মণ্ডল। এই দুর্নীতির ঘটনায় অপর দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার বাদী। দুদক দিনাজপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের তদন্তে তাকেই গ্রেফতার করল দুদক।

বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা দুদক সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবু হেনা আশিকুর রহমান তাকে গ্রেফতার করেন।

গ্রেফতার সাইফুল ইসলাম দিনাজপুর জেলার সাবেক জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা এবং বর্তমানে হিসাব মহানিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে নিরীক্ষা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা (সদর দফতর সংযুক্ত) পদে কর্মরত। তাকে বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাশ সহকারী পদে থাকা আমিরুল ইসলাম ও জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের অডিটর পদে থাকা মাহাফুজার রহমানকে গ্রেফতার করে দুদক।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি আমিরুল ইসলাম হাসপাতালের ক্যাশ সহকারী পদে কর্মরত থাকার ফলে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন উত্তোলন সংক্রান্ত কাজে হিসাবরক্ষণ অফিসে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। সেই সুবাদে হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের অডিটর মাহাফুজার রহমানের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে পরস্পর যোগসাজশে হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের অনলাইনের বিল ও অন্যান্য কার্যক্রমের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করেন আমিরুল ইসলাম। সেই ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ডিজিটাল ডিভাইসে বেআইনিভাবে প্রবেশ করে ই-ট্রানজেকশনের মাধ্যমে অর্থ জালিয়াতি করে আসছিলেন।

পরবর্তীতে আমিরুল ইসলাম ভুয়া পরিচয়পত্র বানিয়ে হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে কর্মরত দেখিয়ে ভুয়া বিল ভাউচার উপস্থাপন করে বিভিন্ন সময় বিল উত্তোলন করেন। সর্বশেষ হিসাবরক্ষণ অফিস থেকে ৯ লাখ ৮৭ হাজার ৬৮০ টাকার ভাউচার সরিয়ে ফেলেন। হিসাব সংরক্ষণ অফিসের নিরীক্ষা বিভাগ কর্তৃক বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হলে জেলা কার্যালয়কে অবহিত করা হয়।

জেলা কার্যালয় স্থানীয় সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাকে ওই অর্থ ছাড় না করতে অবহিত করা হয়। একই সঙ্গে, সেই বিল ভাউচার খুঁজে না পাওয়ায় জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার সন্দেহের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা বিভিন্ন নথি ঘেঁটে দেখেন, গত ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে প্রতারণার উদ্দেশ্যে জাল বিল ভাউচার প্রস্তুত করে সরকারি কোষাগার থেকে ২ কোটি ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ৪২৮টাকা আত্মসাত করা হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা দুদক সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবু হেনা আশিকুর রহমান জানান, আগে আটক হওয়া দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলার তদন্তে প্রতারণার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। সেই মামলার অধিকতর তদন্তে দেখা যায়, মোট ২১টি চেকের মাধ্যমে এই অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে। যার ২০টিতে জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে চেকে স্বাক্ষর করেন। পূর্বে আটককৃত আসামি জিজ্ঞাসাবাদে এসব কথা স্বীকার করেছেন। তাই সর্বশেষ মামলার আসামি হিসেবে সাইফুল ইসলাম মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

দিনাজপুর আদালত পুলিশ পরিদর্শক ইসরাইল হোসেন বলেন, দুদকের মামলায় দিনাজপুর জেলার সাবেক অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম মণ্ডলকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –