• বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১২ ১৪৩১

  • || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

৩২ বছর ধরে চালান ঘোড়ার গাড়ি, ভালো আছেন মতিন

প্রকাশিত: ১২ জানুয়ারি ২০২২  

বত্রিশ বছর ধরে ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে সংসার চালান দিনাজপুরের হিলির হরিহরপুর গ্রামের আব্দুল মতিন মিয়া। ঘোড়া গাড়ি বদলে দিয়েছে তার ভাগ্যের চাকা। এক ছেলে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার হয়েছেন। তিন ছেলে-মেয়েকেই লেখাপড়া শিখিয়েছেন তিনি।

৬৫ বছর বয়সী মতিন মিয়া ৩২ বছর ধরে চালান ঘোড়ার গাড়ি। অন্য কোনো কর্ম জানেন না তিনি। আবাদি কোনো জমি নেই তার, ঘোড়াই তার হালের গরু। সংসারের সকল চাহিদা পূরণ করেও ছেলে-মেয়েদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন এই ঘোড়াওয়ালা মতিন মিয়া। 

এছাড়া ওই এলাকায় আরও ১৮ থেকে ২০ মানুষ ঘোড়ার গাড়ির ওপর নির্ভরশীল। তাদের সবার ঘোড়ার গাড়ি চালানো বাপ-দাদা আমলের পেশা। অনেকেই গাড়ি চালানোর পাশাপাশি ঘোড়া বেচাকেনার ব্যবসাও করেন। 

আমন ধান কাটা-মাড়াই শেষ, আগামী ইরি ধানের জন্য জমি তৈরি করছেন চাষিরা। তাদের জমিতে গোবর সার ফেলার কাজ করছেন ঘোড়ার গাড়িওয়ালারা। একে বলা হয় ঢোলাই করা। সারাদিন ৮ থেকে ৯ গাড়ি গোবর সার মাঠে ফেলছেন তারা। ঢোলাইবাবদ প্রতিগাড়ি নিচ্ছেন ৭০ টাকা। প্রতিদিন কামাই হয় ৫০০ থেকে সাড়ে ৫০০ টাকা। আবার প্রতিদিন ঘোড়া বাবদ খরচ হয় ১০০ টাকা। তবে বছরে দুই বার ইরি ও আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ের সময় তাদের কামাই হয় অনেক বেশি।

হিলির হরিহরপুর গ্রামসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের লোকজন আজও প্রাচীনকালের ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। প্রতিদিন সকাল হলেই ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে তার কর্মের সন্ধানে বেড় হন। পরে রাস্তায় সারিবদ্ধ হয়ে অন্য মালমাল বহন করেন।

হিলির হরিহরপুর গ্রামের আব্দুল গফ্ফার হোসেন বলেন, আমি প্রায় ২২ বছর ধরে এই ঘোড়ার গাড়ি  চালাই। নিজের কিছু আবাদি জমি আছে। চাষাবাদের পাশাপাশি এই ঘোড়ার গাড়ি চালাই। চাল ক্ষেত থেকেই আসে। শুধু তরকারি কিনতে হয়। গাড়ি চালিয়ে যা পাই তাই দিয়ে সংসার ভালোই চলে।

হরিহরপুর আব্দুর মতিন মিয়া বলেন, ঘোড়ার গাড়ি আমার বাপ-দাদারা চালিয়ে আসছেন, আমিও তার প্রতি নির্ভরশীল। ঘোড়া আমার ভাগ্য পরিবর্তন করে দিয়েছে। এক ছেলেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার বানিয়েছি। এক ছেলে অনার্স শেষ করেছে। আর এক মেয়েকে বিএ পাস করিয়ে বিয়ে দিয়েছি। আজও আমার কোনো সমস্যা নেই। ছেলেরা চাকরি পেলে আমার আর কোনো চিন্তা থাকবে না। 

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –