প্রাচীন ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য
প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০২১
বিংশ শতাব্দীর অন্যতম ইসলামী চিন্তাবিদ সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভি (রহ.) প্রাচীন ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে লেখেন, ‘প্রাচীন শিক্ষাব্যবস্থা ত্রুটি ও দুর্বলতামুক্ত ছিল না। শাস্ত্রীয় দৃষ্টিকোণ থেকে তার বিভিন্ন দিক সমালোচনা ও সংস্কারের যোগ্য ছিল। কিন্তু যেসব মানুষ এসব শিক্ষাব্যবস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও ধারক ছিলেন তাঁদের চরিত্র, বৈশিষ্ট্য ও ধর্মীয় প্রাণশক্তি তাঁকে গ্রহণযোগ্যতা এনে দিয়েছিল। যেসব বৈশিষ্ট্য ইতিহাসের পরম্পরায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতবদল হচ্ছে। আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় সেসব বৈশিষ্ট্য অনুপস্থিত।’ (হিন্দুস্তানি মুসলমান : এক তারিখি জায়েঝাহ, পৃষ্ঠা ১১৭-১১৮)
প্রাচীন ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য
ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থার প্রাচীন ধারাগুলোতে যেসব বৈশিষ্ট্য সাধারণভাবে খুঁজে পাওয়া যায় এবং যেসব বৈশিষ্ট্য তাকে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা ও ফলপ্রসূ করে তুলেছিল তা নিম্নরূপ—
১. নিষ্ঠা : প্রাচীনকালের শিক্ষকদের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল তাদের ইখলাস বা নিষ্ঠা। তারা দ্বিনি শিক্ষা কার্যক্রমকে অন্য সব কিছুর ওপর অগ্রাধিকার দিতেন। অধ্যয়ন ও অধ্যাপনার পরকালীন প্রতিদান এবং শিক্ষকের ধর্মীয় মর্যাদা তাঁদের মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে অঙ্কিত ছিল। তাঁরা তাতে গভীরভাবে বিশ্বাস করতেন। তাঁদের বেশির ভাগই আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালীন পুরস্কারের জন্য শিক্ষকতা করতেন। তাঁরা অল্পে তুষ্ট ও সংগ্রামী জীবনযাপন করতেন। তাদের জীবন ছিল দরিদ্র্যক্লিষ্ট, অথচ জীবনের প্রতি তাঁদের কোনো অভিযোগ ছিল না। ভারতীয় আলেমদের জীবনেই দ্বিনি শিক্ষার জন্য আত্মত্যাগের বহু দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া যায়। মাওলানা আবদুর রহিম (রহ.) রামপুরের একটি মাদরাসায় পড়াতেন। রোহিলাখণ্ডের ইংরেজ গভর্নর মি. হ্যাকিংস তাঁকে রায়ব্রেলি কলেজে কয়েক শ রুপি (বর্তমান মূল্যে দেড় থেকে দুই লাখ) বেতনে অধ্যাপনা করার আমন্ত্রণ জানান এবং অঙ্গীকার করেন ভবিষ্যতে বেতনের পরিমাণ আরো বাড়াবেন। কিন্তু তিনি এই চাকরি গ্রহণে অপারগতা প্রকাশ করলেন এবং বললেন, ‘শিক্ষাদানের বিনিময়ে অর্থ গ্রহণ করলে আমি আল্লাহর কাছে কী জবাব দেব?’
২. পাঠে মনোযোগ : মোল্লা আবদুল কাদের বাদায়ুনি (রহ.) স্বীয় শিক্ষক মাওলানা আবদুল্লাহ বাদায়ুনি সম্পর্কে লেখেন, তিনি পারিবারিক প্রয়োজনে সদায় করতে হাটে যেতেন। শিক্ষার্থীরা তার সঙ্গে যেত এবং তারা তাঁর কাছ থেকে পাঠ বুঝে নিত। (মুন্তাখাবুত তাওয়ারিখ, পৃষ্ঠা ৫৬)
এই ঘটনা থেকে ছাত্র-শিক্ষকের সম্পর্কের গভীরতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। তাদের সম্পর্ক এমন দৃঢ় ও গভীর হতো যার দৃষ্টান্ত বর্তমান যুগে ও আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় খুঁজে পাওয়া ভার। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সন্তানের মতো স্নেহ করতেন, বেশির ভাগ সময় তাঁদের সার্বিক দায়িত্ব গ্রহণ করতেন, তাঁদের সুখ-দুঃখের অংশিদার হতেন। বাদশাহ আকবরের শাসনামলের রাজকীয় চিকিৎসক হাকিম আলী গিলানি সম্পর্কে ‘তাজকিরায়ে উলামায়ে হিন্দ’ গ্রন্থে লেখা হয়েছে, ‘তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদান করতেন এবং তাদেরকে ছাড়া খাবার গ্রহণ করতেন না।’
৩. শিক্ষকের সঙ্গে শিক্ষার্থীর সম্পর্ক : শিক্ষার্থীদেরও শিক্ষকের সঙ্গে এমন সম্পর্ক ছিল যা সৌভাগ্য, আত্মিক সম্পর্ক ও বন্ধনের অনন্য দৃষ্টান্ত। একটি ঘটনা এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে। একবার মোল্লা নিজামুদ্দিন ফিরিঙ্গি মহল্লি (রহ.)-এর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ল। মৃত্যু সংবাদ শুনে তাঁর ছাত্র সাইয়েদ শরিফ আজিমাবাদী কাঁদতে কাঁদতে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন। তাঁর অপর ছাত্র সাইয়েদ কামালুদ্দিন আজিমাবাদী শিক্ষকের মৃত্যু শোক সহ্য করতে না পেরে ইন্তেকাল করেন। বর্তমান সময়ে এমন দৃশ্য কল্পনা করা যায়?
৪. শাসকদের মূল্যায়ন : প্রাচীন শিক্ষাব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল শাসকদের মূল্যায়ন। সমকালীন শাসক ও অভিজাত ব্যক্তিরা শিক্ষক ও সময়ের প্রধান প্রধান আলেমদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা এবং তাদের সেবা করাকে নিজেদের জন্য সৌভাগ্য মনে করতেন। ভারতবর্ষে ইসলামী শাসনামলে শিক্ষক মূল্যায়নের লাখো দৃষ্টান্ত রয়েছে। যেমন আমির ফাতহুল্লাহ সিরাজির ইন্তেকালের পর বাদশাহ আকবর অত্যন্ত ব্যথা ও আক্ষেপ নিয়ে বলেন, ‘যদি কোনো বিদেশি শক্তি তাঁকে বন্দি করত এবং তাঁর মুক্তিপণ হিসেবে আমার ভাণ্ডারের সব সম্পদ ও রাজত্ব দাবি করত, তবে তা মেনে নেওয়ায় বেশি কল্যাণকর প্রমাণিত হতো। কেননা এই সম্পদের মূল্য আরো অনেক বেশি।’
‘আগসানে আরবায়া’ গ্রন্থকার মাওলানা ওয়ালিউল্লাহ ফিরিঙ্গি মহল্লি মাওলানা বাহরুল উলুমের রাজকীয় সংবর্ধনার চিত্র এভাবে তুলে ধরেছেন—পালকি রাজপ্রাসাদের কাছে পৌঁছানোর পর তিনি নেমে যেতে চাইলেন। নবাব ওয়ালাজাহ ইঙ্গিত করলেন যেন তিনি পালকিতেই থাকেন। নবাব নিজেই পালকি কাঁধে তুলে নিলেন। সিংহাসনে নিজের স্থানে বসালেন এবং বললেন, আমার সৌভাগ্য যে আপনি আমার ঘরে পা রেখেছেন, আমার ঘর আলোকিত করেছেন।
৫. আত্মিক পরিশুদ্ধি : আত্মিক পরিশুদ্ধি ও আল্লাহওয়ালাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতেন প্রাচীনকালে ইসলামী ধারার ধারক ও বাহক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তাদের বৈশিষ্ট্য ছিল তারা জ্ঞানগত পাণ্ডিত্ব, দক্ষতা, খ্যাতি ও মর্যাদা অর্জনের পাশাপাশি নিজের আত্মিক পরিশুদ্ধি ও আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নেও পূর্ণ মনোযোগী ছিলেন। তাঁরা যেমন আক্ষরিক জ্ঞান অর্জনের অভিজ্ঞ ও পণ্ডিত শিক্ষকের কাছে উপস্থিত হওয়া আবশ্যক মনে করতেন, একইভাবে তাঁরা বুজুর্গ ও আল্লাহওয়ালাদের সান্নিধ্যকেও আবশ্যক মনে করতেন। সে সময়ের বেশির ভাগ আলেম ও শিক্ষক সময়ের আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শকদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতেন। শ্রেণিকক্ষেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জ্ঞানগত দক্ষতা অর্জনের মতো আত্মিক উন্নয়নে মনোযোগী হতে বলতেন। ফলে একদিকে যেমন জনসাধারণের ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক রাহবার হয়ে উঠত, অন্যদিকে তেমন তারা সময়ের ফেতনা, বিশৃঙ্খলা ও ক্ষমতাসীনদের অন্যায় প্রলোভন থেকে আত্মরক্ষা করতে পারত।
– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –- ট্রান্সফরমার চোর চক্রের পাঁচ সদস্য গ্রেফতার
- বাংলাদেশ স্কাউটস দিনাজপুর অঞ্চলের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল
- দিনাজপুরে ফুটেছে নানা রঙের ফুল
- হিলি বন্দর দিয়ে ১০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি
- সৌন্দর্য ধরে রাখতে নজর দিন সঠিক খাদ্যাভ্যাসে
- রংপুরে র্যাবের অভিযানে ফেন্সিডিলসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
- স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির দাবি বেরোবি ছাত্রলীগের
- রাফাহতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২১ ফিলিস্তিনি নিহত
- দ্রব্যমূল্য নিয়ে চাপের মধ্যে আছি: ওবায়দুল কাদের
- প্রয়োজনে শুক্রবারও ক্লাস: শিক্ষামন্ত্রী
- জনগণের কথা চিন্তা করে আইন তৈরি করতে হবে: আইনমন্ত্রী
- তৃণমূল মানুষের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার
- হাওরের ৯৭ শতাংশ বোরো ধান কাটা শেষ
- ৩০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার আবাসন সুবিধা পাবে
- চাকরিতে প্রবেশে বয়সের বিষয়ে যা জানালেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
- ‘অভিবাসন নিয়ে অপতথ্য রোধে কাজ করবে বাংলাদেশ-ইতালি’
- ঢাকায় আসছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব
- অবৈধ জাল ব্যবহার বন্ধ করা হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
- ১৪ দিনে হিটস্ট্রোকে ১৫ মৃত্যু: স্বাস্থ্য অধিদফতর
- উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে তীব্র ঝড়
- ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করেছে’
- হিলিতে ভুর্তুকি মূল্যে কৃষক পেল হারভেস্টার মেশিন
- হাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
- দিনাজপুরে নাশকতা মামলায় ছাত্রদল ও যুবদলের দুই নেতা কারাগারে
- ধূমপান বা তামাক স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর
- সত্যি কী আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা পাচ্ছেন শাকিব খান?
- হজের জন্য মাহরাম না পেলে নারীদের করণীয় কী?
- রাশিয়ার সাথে সম্ভাব্য সংঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে ন্যাটো: মস্কো
- অপসাংবাদিকতা মূল সাংবাদিকতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- ট্রেন সুবিধায় আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল দক্ষিণবঙ্গ: রেলমন্ত্রী
- সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ: অর্থমন্ত্রী
- দিনাজপুরের হাকিমপুরের হিলিতে শিক্ষক-কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট
- ৬ শতাধিক পটল গাছ উপড়ে ফেলল দুর্বৃত্তরা, দিশেহারা কৃষক
- রাণীশংকৈলে ভুট্টাক্ষেত থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- বীরগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
- বীরগঞ্জে হবিবর রহমান স্মৃতি রোগ প্রতিরোধ গবেষণা কেন্দ্র উদ্বোধন
- ইস্তিসকার নামাজের সময় ও বিধি-বিধান
- ঈদের দিন বন্ধ থাকবে আন্তঃনগর ট্রেন
- গোর-এ-শহীদ ময়দানে ৬ লাখ মুসল্লির নামাজ আদায়
- টানা ৬ দিন বন্ধের পর হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানি শুরু
- দিনাজপুর জেলা ছাত্রলীগের ৫০০ বৃক্ষের চারা বিতরণ-রোপণ
- হজের জন্য মাহরাম না পেলে নারীদের করণীয় কী?
- জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান
- দিনাজপুরে হলিল্যান্ড কলেজে ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
- রাইমা সেন কেনো হুমকি!
- দিনাজপুরে অনাবৃষ্টি আর দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে লিচুর মুকুল
- দাঁতের যন্ত্রণায় আইসক্রিম খেতে পারছেন না?
- হাবিপ্রবিতে কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন
- ঘোড়াঘাটে ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবস পালিত
- রূপপুরে নতুন বিদ্যুৎ লাইন চালু মঙ্গলবার