• বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

  • || ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫

খানসামায় আত্রাই নদী যেন ফসলের খেত

প্রকাশিত: ১৩ মার্চ ২০২৪  

দিনাজপুরের খানসামায় আত্রাই নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে ভূমিহীন কৃষকেরা চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চরের এই চাষাবাদ শস্যপ্রধান এই অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। খানসামা উপজেলার গোবিন্দপুর, বেলপুকুর ও কায়েমপুর এলাকায় আত্রাই নদীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নদীতে পানি শুকিয়ে নদীর বুকে জেগে ওঠা চর পলিমাটি মিশ্রিত উর্বর আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। সেখানে চাষাবাদে কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। এসব চরে চাষ হচ্ছে ধান, পেঁয়াজ, গম, ভুট্টা, সরিষা, মিষ্টি কুমড়াসহ নানা ধরনের শাকসবজি।

জানা যায়, নদীতে চর জেগে ওঠার পর ঐ এলাকার ভূমিহীন কৃষকেরা নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে চরে চাষাবাদ করে আসছেন। সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী বীরগঞ্জ উপজেলার কৃষকদের সঙ্গে সীমনা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে পরে সেটি সমাধান করেন খানসামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজ উদ্দিন ও ওসি মোজাহারুল ইসলাম।

খানসামা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে আত্রাই নদীর চরে আলোকঝাড়ী, বাসুলী,  গোবিন্দপুর, বেলপুকুর, কায়েমপুর, জোয়ার, শুড়িগাঁও, আগ্রা ও চাকিনিয়া এলাকায় মোট ৫৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বোরো ধান ৪৫ হেক্টর, পেঁয়াজ ৩ হেক্টর, মিষ্টি কুমড়া ১ হেক্টর, ভুট্টা ৪ হেক্টর ও সরিষা ২ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগের উত্সাহে গত মৌসুমের চেয়ে এবার চাষাবাদ বেড়েছে।

উপজেলার গোবিন্দপুর চরের চাষি ভ্যানচালক ছমির উদ্দিন বলেন, নিজের কোনো আবাদি জমি নেই। নদীতে চর পড়ায় ফসলের আবাদ শুরু করেছি। ধানের পাশাপাশি পিঁয়াজ ও বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি চাষ করেছেন। এসব চাষ করে বাড়তি আয় হবে, যা সংসারে কাজে লাগবে। তিনি জানান, চরের আশপাশের সব ভূমিহীন কৃষক আত্রাই নদীর জেগে ওঠা চরে এখন চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন। 

এনামুল ইসলাম নামে আরেক চাষি বলেন, চরে বিঘাখানেক জমিতে ধান চাষ করেছি। অন্য আবাদি জমির চেয়ে চরের ধান চাষে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বেশি। সেই সঙ্গে ভালো ফলনও পাওয়া যায়। খানসামা উপজেলার খামারপাড়া ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ ম জাহেদুল ইসলাম জানান, চরে ধান ও পেঁয়াজ আবাদ অনেক ভালো হয়। সেই সঙ্গে চরে চাষাবাদ উপযোগী ফসলের ফলন বৃদ্ধিতে কৃষকদের সহায়তা ও পরামর্শ প্রদানে আমরা কাজ করছি।

খানসামা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা হাবিবা আক্তার জানান, আত্রাই নদীর জেগে ওঠা চরে যেসব কৃষক চাষাবাদ করছেন, তারা বেশির ভাগই ভূমিহীন। ভূমিহীন এসব কৃষক অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করলেও এখানে তাদের কোনো বর্গা নিতে হচ্ছে না। এতে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। পাশাপাশি অন্য আবাদি জমির সঙ্গে চরে চাষাবাদে যেমন কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন, তেমনি খাদ্য উত্পাদন বাড়ছে। এর ধারাবাহিকতা ও সফলতা বজায় রাখতে উপজেলা কৃষি বিভাগ সর্বদা কৃষকের পাশে রয়েছে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –