• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

খানসামায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সংরক্ষিত হয়নি গণকবর

প্রকাশিত: ২৫ মার্চ ২০২২  

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পেরিয়ে গেলেও সংরক্ষণ করা হয়নি গণকবর। ফলে অস্থায়ী বাঁশের বেড়ায় মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছে শহীদ পরিবার, খানসামা ডিগ্রি কলেজ ও খানসামা উপজেলা শাখা ছাত্রলীগ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধ চলার সময়ে খানসামা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সংগ্রাম কমিটির সদস্য ও মুক্তিবাহিনীর অন্যতম সদস্য বাবু অমিয় কুমার গুহ। তাকে ১৯৭১ সালের ১ জুন গভীর রাতে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাড. জহির উদ্দিনের বাড়ি থেকে আটক করে পাকিস্তানি দালালরা ২ জুন খানসামা থানায় বন্দি করে রাখে। তার পরের দিন পাকবাহিনীকে খবর দিয়ে রাজাকাররা বাবু অমিয় কুমার গুহকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। এরপর সাইকেলে রশি দিয়ে বেঁধে নিয়ে পার্শ্ববর্তী নীলফামারী ও খানসামা উপজেলার সংযোগস্থল পুলহাট নামক স্থানে ইছামতী নদীর তীরে গুলি করে ও বেয়োনেট দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে রেখে যায়। একই স্থানে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া টেডি ডাক্তার ও মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগী খ্ট্টু মিয়াকে হত্যা করে পাকবাহিনী। পরে স্থানীয় তরনী কান্ত, নজরুল ইসলামসহ অনেকে তাদের লাশ নদী থেকে তুলে কবর দেন।

কিন্তু স্বাধীনতা ও শহীদদের মৃত্যুর ৫০ বছরেও এসব পরিবার শহীদ পরিবার হিসেবে সরকারিভাবে স্বীকৃতি পায়নি। শুধু অমিয় কুমার গুহয়ের নামে একটি রাস্তার নামকরণ ও উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বিভিন্ন দিবসে খেলাধুলার নামকরণ ছাড়া আজ পর্যন্ত কোন সাহায্য-সহানভূতি পায়নি পরিবারগুলো। আর স্বাধীনতার সুর্বণজয়ন্তীতেও গণকবরের তালিকা ও সংরক্ষণ, শহীদ পরিবারের তালিকা তৈরি ও রাজাকারের তালিকা প্রকাশ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সুধীজনরা।

তবে গত ৮ বছরের ধারাবাহিকতায় ২৫ মার্চ খানসামা ডিগ্রি কলেজের আয়োজনে ইছামতী নদীর তীরে অসংরক্ষিত বধ্যভূমিতে গণহত্যা দিবসে শহীদের স্মরণ করা হয়। এর আলোকে শুক্রবার সকালে অস্থায়ী বাঁশের বেড়ার স্মৃতিস্তম্ভে খানসামা ডিগ্রি কলেজ ও উপজেলা ছাত্রলীগ শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে।

এরপরে খানসামা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক রশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় বক্তব্য দেন- খানসামা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম, শহীদ অমিয় কুমার গুহের দৌহিত্র ও উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রাকেশ গুহ, এই গণকবরের প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় নজরুল ইসলাম এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এরশাদ জামানসহ অনেকে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –