• শনিবার ১৮ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৪ ১৪৩১

  • || ০৯ জ্বিলকদ ১৪৪৫

নিম্নবিত্তের পুরনো কাপড়ই ভরসা

প্রকাশিত: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯  

দিনাজপুরে কয়েকদিন ধরে জেঁকে বসেছে শীত। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেই শীত নিবারণের জন্য উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা ছুটছেন বিভিন্ন কমপ্লেক্স বা শপিং সেন্টারে। তবে নিম্নবিত্ত, গরিব মানুষের ভরসা পুরনো কাপড়। জেলার গোর শহীদ বড় ময়দানের ভাসমান বাজারে সেই পুরনো কাপড় কেনার ধুম পড়েছে।

বাজারে কোট, জ্যাকেট, সোয়েটার, ট্রাউজার, ওভারকোট, হাফ ও ফুল হাতা গেঞ্জি, কম্বল, মেয়েদের কার্টিগান, হাতমোজা ও পা মোজার ক্রেতা বেশি দেখা গেছে। প্রতিদিন শত শত মানুষ শীতের কাপড় কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন।

ক্রেতা কলেজছাত্রী আসমা আক্তার জানান, পুরনো কাপড়ের মধ্যে অনেক ভালো কাপড় পাওয়া যায়। তবে বেছে কিনতে হয়। গতবারের চেয়ে এবার প্রতিটি কাপড়ের দাম দ্বিগুণ।

অপর ক্রেতা আব্দুর রহমান বলেন, এ মার্কেটে নিম্ম আয়ের মানুষেরা শীতের কাপড় কিনতে ভিড় করছেন। এখানে ১০ টাকা থেকে ৫০০ টাকায় ভাল মানের শীতের কাপড় কেনা যায়।

পুরনো কাপড় ব্যবসায়ী আকবর আলী জানান, প্রতি বছর শীতের সময় মহাজনদের কাছ থেকে শীতের কাপড়ের বেল কিনে খোলা বাজারে খুচরা বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। গত বছর সাত থেকে আট হাজার টাকায় একটি কাপড়ের বেল কেনা যেতো। এ বছর একটি শীতের কাপড়ের বেল কিনতে ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকা লাগছে।

খুচরা ব্যবসায়ী রফিক জানান, একটি বেলে ১০ টাকা থেকে শুরু করে ৬০০ টাকার কাপড় থাকে। দামাদামি করে সব দাম ঠিক করতে হয়। তবে প্রতিদিন সাড়ে চার হাজার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার উপরে শীতের কাপড় বিক্রি হচ্ছে।

পুরনো কাপড়ের পাইকারি ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বার বলেন, শীত উপলক্ষে চীন, তাইওয়ান, জাপান, কোরিয়া ও রাশিয়া থেকে পুরনো শীতের কাপড় আসছে। পরিবহন খরচ, ব্যাংক ঋণের কারণে কাপড়ের বেলের দাম বেড়ে গেছে। আমরা পাইকারি বিক্রির জন্য চট্টগ্রাম, ঢাকা ও রংপুর থেকে কাপড়ের বেল ট্রাকে করে আনি। পরে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করি। সবকিছুর দাম বেড়েছে, ফলে কাপড়ে দামও বেড়েছে।

তিনি বলেন, আমরা খুচরা ব্যবসায়ীদের বাকিতে কাপড় দেই। তারা বিক্রি করে টাকা পরিশোধ করেন। আমরা ব্যাংক লোন নিয়ে ব্যবসা চালাই। কিন্ত ব্যাংকগুলো বেশি লোন দিতে চায় না। আবার অনেক কিছু ম্যানেজ করতে আমাদের খরচ বেশি পড়ে।

আরেক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বলেন, চট্টগ্রাম মোকামে ১০০ কেজি ওজনের এক বেল ছোটদের পুরনো শীতের পোশাক সাড়ে আট হাজার থেকে ১০ হাজার হাজার টাকা। বড়দের ১০০ কেজি ওজনের এক বেল পোশাকের দাম ছয় হাজার থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকা। ৮০ থেকে ১০০ কেজি ওজনের জ্যাকেট ও সোয়েটারের এক বেলের দাম পড়ে ১০ হাজার টাকা। এখানে এনে পরিবহন খরচ ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে দাম বেশি পড়ছে। ফলে খুচরা বাজারেও দাম বাড়ছে।

দিনাজপুর কাচারি মার্কের দফতর সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন জানান, শীতের মৌসুমের ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি মোটা কাপড়ের চাহিদা থাকে। বেচাকেনাও বেড়ে যায়। তাই কাচারি মার্কেটটি শীত নিবারণের কাপড়ের জন্য নিম্ন আয়ের মানুষের ভরসা।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –