• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

‘পানি খাওয়ার বিলে’ শুভ্রতা ছড়াচ্ছে গোলাপি-সাদা পদ্ম

প্রকাশিত: ২ নভেম্বর ২০২২  

‘পানি খাওয়ার বিলে’ শুভ্রতা ছড়াচ্ছে গোলাপি-সাদা পদ্ম                 
বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছি ১০৮ নীলপদ্ম, তবু কথা রাখেনি বরুণা, এখন তার বুকে মাংসের গন্ধ, এখনো সে যে কোনো ভালোবাসা পাওয়ার আকুতি জানিয়ে এভাবেই কবি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তার ‘কেউ কথা রাখে নি’ কবিতায় ১০৮টি নীল পদ্মের কথা বলেছিলেন। শুধু সুনীলই নয়, সাহিত্যের পরতে পরতে পাওয়া যায় পদ্মের উপাখ্যান।

ভালোবাসার জন্য বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে নীল পদ্ম খুঁজে আনার কথা বলেছিলেন সুনীল। দেশের খাল-বিলে অবশ্য তন্ন তন্ন করে পদ্ম খোঁজার প্রয়োজন পড়ে না।

প্রতি বছর বর্ষার শেষে ফুটতে শুরু করে সৌন্দর্য আর শুভ্রতার প্রতীক পদ্ম। জলজ ফুলের রাণীর উপস্থিতিতে জলাভূমি ও বিল-ঝিলে সৌন্দর্য বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

দেশের উত্তরের জনপদ গাইবান্ধায় আছে অসংখ্য বিল। তার মধ্যে অন্যতম জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের ‘পানি খাওয়ার বিল’। এটি চাপড়ার বিল নামেও স্থানীয়দের কাছে বেশ পরিচিত।

উপজেলা সদর থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে সোনারায় বাজারের উত্তর পার্শ্বের এ বিলটিতে প্রাকৃতিকভাবেই জন্মে পদ্মফুল। দূর থেকে বিলটি দেখলে মনে হয়, যেন ফুলের বিছানা পেতে রেখেছে কেউ।

এই বিলের পাশেই সুস্থ বিনোদনের জন্য ব্যক্তি মালিকানাধীনভাবে গড়ে উঠেছে সরোবর পার্ক এণ্ড রিসোর্ট। ফলে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকা থেকে এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিলটিতে আসে দর্শনার্থীরা।

পানি খাওয়ার বিলে গিয়ে দেখা যায়, পানিতে টইটুম্বুর বিলের চারদিকে শুধু পদ্ম আর পদ্ম। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে গোলাপি ও সাদা রঙের পদ্ম। যত দূর চোখ যায় এমন অপরূপ দৃশ্য হাতছানি দিয়ে ডাকে ভ্রমণপিপাসুদের।

সেই ডাকে সাড়া দিয়ে প্রতিদিনই বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেক দর্শনার্থী যান বিলটিতে। তারা ঘুরে ঘুরে সৌন্দর্য উপভোগ করেন।

পানি খাওয়া বিলে ঘুরতে আসা উপজেলার কাপাসিয়া ইউনিয়নের মো. জামিউল ইসলাম বলেন, ‘সাংসারিক কাজে সব সময় ব্যস্ত থাকি। কোথাও তেমন একটা ঘুরতে যাওয়া হয় না। পানি খাওয়ার বিলে পদ্মফুল ফুটেছে শুনে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে এসেছি। খুব ভালো লাগলো এই সৌন্দর্য দেখে।’ সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে এই বিলে ঘুরতে আসা প্রকৃতিপ্রেমী কবি ও ছড়াকার কঙ্কন সরকারের সঙ্গে কথা হয় ।

তিনি বলেন, ‘প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়ানোর অনুভূতি ভিন্ন। এ যুগে ছোটদের নিয়ে ঘুরতে যাওয়া আরও বেশি জরুরি। প্রযুক্তির খোলস থেকে কিছুটা মুক্ততার জন্য প্রকৃতির সৌন্দর্যের স্বাদ গ্রহণ খুবই প্রয়োজন।’

তিনি আরও বলেন, ‘চাপড়ার বিল ও পানি খাওয়ার বিলে যে পদ্মফুলের মেলা তা দেখলেই চোখ মন ভরে যায়। এখানে প্রকৃতি তার আপন সৌন্দর্য মেলে ধরেছে।’

‘এ বিল রক্ষা করা দরকার। যাতে ভ্রমণপিপাসুরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার মতো জায়গা খুঁজে পান ও নতুন প্রজন্মকে প্রকৃতিপ্রেমী করে গড়ে তুলতে পারেন।’
#জাগো নিউজ।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –