• সোমবার ০৬ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২৩ ১৪৩১

  • || ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

‘পানি’ খেতে চেয়েছিল সেই মানব কঙ্কালটি

প্রকাশিত: ২ ডিসেম্বর ২০২৩  

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ধান ক্ষেত থেকে উদ্ধার হওয়া মানব কঙ্কালটি আনোয়ারা বেগমের। তিনি চন্ডিপুর ইউনিয়নের উত্তর শালন্দার কাগজিয়া পাড়া গ্রামের মৃত আজগর আলীর স্ত্রী। এর আগে, শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে পার্বতীপুর উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়ন থেকে মানব কঙ্কালটি উদ্ধার করা হয়।

জানা গেছে, গত ২৭ অক্টোরব আনোয়ারা বেগম ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরে বাড়ির পাশের কবরস্থানে তাকে দাফন করেন পরিবারের সদস্যরা। এরপর সবকিছু ঠিকই ছিল। গত শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে চন্ডিপুর ইউনিয়নের উত্তর শালন্দার শাহ পাড়া গ্রামে রাস্তার পাশে ধান ক্ষেতে পাওয়া যায় একটি মানব কঙ্কাল। খবর পেয়ে পার্বতীপুর মডেল থানার ওসিসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লাশ উদ্ধার করেন। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয়রা শুরু করেন ছায়া তদন্ত। 

পরে জানা যায়, শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি গত বুধবার (২৯ নভেম্বর) গভীর রাতে কবর খুঁড়ে ওই কঙ্কাল তুলে বাড়ি নিয়ে যান। তার মতে, ওই কঙ্কাল পানি খাওয়ার জন্য তার কাছে মিনতি করেন। এ জন্য কবর খুঁড়ে  পানি খাওয়ানোর জন্য তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। তবে, তাতে বাঁধা দেন শফিকুলের স্ত্রী। এরপর বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে কঙ্কালটি অন্যত্র রেখে আসতে স্বামীকে তাগাদ দিলে শফিকুল স্ত্রীর কথা মতো কাজ করেন।

তবে শফিকুল মানসিক ভারসাম্যহীন বলে পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে। 

স্থানীয় খালেকুল জামাল জানান, দীর্ঘদিন ধরে শফিকুল ইসলাম মানসিক রোগে ভুগছেন। এর আগেও তিনি বিভিন্ন কবর খুঁড়তে গিয়েছিলেন। তবে মানুষের কাছে ধরা পড়ায় লাশ বের করতে পারেননি। এবারের ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পরিবার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

আনোয়ারা বেগমের ছেলে দুলাল হোসেন বলেন, কঙ্কাল উদ্ধারের পর এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। কাফনের কাপড় থাকায় প্রথমে ধারণা করা হয়েছে, কোনো প্রাণী এটি করেছে। শফিকুলের বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশ প্রশাসন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আশপাশের বিভিন্ন কবরস্থান পরিদর্শন করেন।

সেই সঙ্গে গত এক মাসে যাদের আত্মীয়-স্বজন মারা গেছেন, তাদের কবর দেখতে বলা হয়। আমার মায়ের মৃত্যুর একমাস হওয়ায় আমরা তালের ডাঙ্গা কবরস্থানে যাই। প্রথমতো কবরের সবকিছু ঠিকঠাক দেখা গেলেও কাছে গিয়ে দেখতে পারি মাটি ও চাটাই সরানো। পরে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় কবরের দেখা যায় মরদেহ নেই। শুধু মাথা পড়ে আছে। তখই বুঝতে পারি এটি আমাদের মায়ের কঙ্কাল। পড়ে সেই কঙ্কালকে পুনরায় কবরস্থ করা হয়েছে।

চন্ডিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবর রহমান সরকার জানান, কঙ্কাল উদ্ধারের ঘটনায় এলাকাবাসী উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। শফিকুল ইসলাম নামে যে ব্যক্তি কবর থেকে কঙ্কাল তুলেছে, সে আসলেই একজন মানসিক রোগী। এর আগেও একাধিক কবর খুঁড়তে গিয়েছিল সে। কিন্তু সফল হতে পারেনি। তার চিকিৎসার জন্য স্থানীয়ভাবে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। 

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –