ফুলবাড়ীতে তীব্র তাপপ্রবাহে ৭০০ মুরগির মৃত্যু

 
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কয়েকদিনের অব্যাহত তাপপ্রবাহে এক মুরগির খামারে একদিনে ৭০০ ব্রয়লার মুরগির মৃত্যু হয়েছে। একসঙ্গে এত মুরগি মরে যাওয়ায় লোকসানের দুশ্চিন্তায় ভুক্তভোগী খামারিরা। এরপর থেকে অন্য খামারিদের মধ্যেও আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেক খামারি লোকসান হলেও দ্রুত মুরগি বিক্রির চেষ্টা করছেন বলেও জানা যায়। মঙ্গলবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে ফুলবাড়ীর শিবনগর ইউপির শমশেরনগর গ্রামের ‘বুসরা এগ্রো ফার্ম’ নামের খামারে এসব মুরগি মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে। 

এদিকে, দিনাজপুর আবহাওয়া অফিস জানায়, বুধবার জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

ভুক্তভোগী খামারটির মালিক মো. বাবু ইসলাম জানান, তার খামারে মোট ১৬০০ মুরগি ছিল। প্রতিটি মুরগির বয়স ২৯ দিন এবং ওজন প্রায় দুই কেজি। এর মধ্যে মঙ্গলবার বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টার মধ্যে অতিরিক্ত গরমে ৭০০ মুরগি মারা যায়। গরম থেকে মুরগি বাঁচানোর জন্য খামারের ভেতরে পানি ও বড় ফ্যানের ব্যবস্থা ছিল। এর পরেও মুরগিগুলো রক্ষা করতে পারেননি। আর কয়েকদিন থাকলেই প্রতিটি মুরগির ওজন তিন কেজি পরিমাণ হতো বলেও জানান তিনি।
খামারি বাবু ইসলাম আরও বলেন, এই গরমে আর মুরগি রাখব না। যতটুকু আছে সব মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছি। মারা যাওয়া ৭০০ মুরগির দাম আনুমানিক সোয়া ২ লাখ টাকা হতো। ঈদে বিক্রির জন্য রেখেছিলাম। 

একই এলাকার খামার মালিক হাবিবুর রহমান রতন বলেন, খাদ্যের যে দাম, তারপরও অনেক কষ্ট করে মুরগিগুলো পালন করেছি। এ এলাকায় এক খামারে গরমে মুরগি মারা গেছে। গরমে এভাবে মুরগি মারা গেলে, মুরগি রাখা যাবে না। লোকসান হলেও মুরগি বিক্রি করে দিতে হবে।

এ বিষয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, এ ধরনের আবহাওয়ায় মুরগির খামারে বড় সমস্যা তাপমাত্রা। অতিরিক্ত গরমে মুরগির হিট স্ট্রোক হচ্ছে। তাপমাত্রা বাড়লে এবং তা যদি নিয়ন্ত্রণে না আনা যায়, তাহলে খামারের ক্ষতি হবে এটাই স্বাভাবিক। টিনশেডের খামারের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ছায়াযুক্ত স্থানে শেড করতে হবে। এ ছাড়া টিনের চালার ওপরে চট, খড়, পাতা ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে শেড কিছুটা শীতল থাকবে।
তিনি আরও জানান, ফুলবাড়ী উপজেলায় মোট মুরগির খামার রয়েছে ১৭৬টি। এর মধ্যে ব্রয়লার মুরগির খামার ১৫০টি এবং লেয়ার মুরগির খামার ২৬টি।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –