• রোববার ১৯ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৫ ১৪৩১

  • || ১০ জ্বিলকদ ১৪৪৫

সাগরে ধরা পড়ছে ইলিশ, কক্সবাজারে জেলে ও ক্রেতারা স্বস্তিতে

প্রকাশিত: ২ নভেম্বর ২০২২  

অবশেষে সাগরে জেলেদের জালে ইলিশসহ হরেক রকমের মাছ ধরা পড়তে শুরু করেছে। বাজারে ক্রেতাদের হাতেও আসছে ইলিশ মাছ। মাছের দাম কিছুটা বাড়তি হলেও জেলে, মাছ ব্যবসায়ী এবং ক্রেতাদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে। আহরিত মাছ স্থানীয় বাজারে নয়-ব্যবসায়ীরা পাইকারি দরে কিনে নিয়ে যায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য বাজারে।

কক্সবাজার এক সময় দেশের সবচেয়ে বড় মৎস্য আহরণ কেন্দ্র হলেও বর্তমানে সেই অবস্থা নেই। সাগরে মাছের বিচরণ ক্ষেত্রের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আহরণ কেন্দ্রও ছড়িয়ে বরিশাল, খুলনা, পটুয়াখালীসহ অন্যান্য এলাকায় বৃদ্ধি পেয়েছে। তবুও কক্সবাজার উপকূলে এখনো পর্যন্ত কমপক্ষে ৫ সহস্রাধিক ইঞ্জিন নৌকা রয়েছে সামুদ্রিক মাছ আহরণে।

ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের প্রজনন বৃদ্ধির স্বার্থে দুই দফায় প্রায় তিন মাস পর্যন্ত মাছ ধরা বন্ধ থাকে। সেই সঙ্গে সাগরে সৃষ্ট দুর্যোগের কারণে বর্ষার সময় মাছ ধরা ব্যাহত হয়ে থাকে। এসব কারণে জেলেরা যেমনি অনটনের মুখে পড়ে তেমনি মৎস্য ব্যবসায়ী এবং ভোক্তারাও সামুদ্রিক মাছের সংকটে পড়ে। সব মিলিয়ে এ সময়ে জেলে পল্লীতে বিরাজ করে এক দুঃসময়।

সাম্প্রতিক টানা ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধসহ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে মাসখানেক সময় জেলেদের কর্মহীন সময় কাটাতে হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে জেলেরা অনেক আশা নিয়ে নেমে পড়েন সাগরে। তবে খালি হাতে ফিরতে হয়নি তেমন। কিছু কিছু মাছ সবগুলো মাছধরা নৌকার জেলেদের জালে ধরা পড়ছে। জেলেরা জানিয়েছেন, খুব বেশি পরিমাণে ধরা না পড়লেও নৌকার মালিক এবং আহরণে নিয়োজিত জেলেরা কোনো রকমে পোষাতে পারছেন।

মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) কক্সবাজারের বাঁকখালী নদী তীরের সরকারি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে গিয়ে বিপুল পরিমাণ মাছের স্তুপ দেখা গেছে। এসবের মধ্যে ইলিশের পরিমাণই সবচেয়ে বেশি। তবে সাইজ হচ্ছে মাঝারি। ব্যবসায়ী জাকারিয়া সাড়ে তিন শ থেকে সাড়ে চার শ গ্রাম ওজনের প্রতিটি ইলিশ কিনেছেন ১২০-১৩০ টাকা দরে। এসব মাছ তিনি ঢাকায় নিয়ে যাবেন। প্রতিটি এক কেজি ওজনের ইলিশের পরিমাণ কম। এসবের দাম কেজি প্রতি এক হাজার টাকারও বেশি।

কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ ও পাইকারি মৎস্য বাজারের (বিএফডিসি) ব্যবস্থাপক মো. বদরুদ্দৌজা কালের কণ্ঠকে জানান ‘সোমবার এক দিনেই ৪ টন ইলিশ বিক্রি হয়েছে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে। সেই সঙ্গে অন্য প্রজাতির মাছও বিক্রি হয়েছে ১১ টন। ’ তিনি জানান, ২০২০-২০২১ আর্থিক বছরে কক্সবাজারের উক্ত কেন্দ্রে সাগর থেকে আহরিত ইলিশ ২ হাজার ৯৮৮ টন এবং অন্য প্রজাতির মাছ বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ২২৩ টন। পরবর্তী ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের সময়ে ইলিশ বিক্রির পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ হাজার ৭৫ টন ও অন্য প্রজাতির মাছ ৩ হাজার ৫৩৬ টন।

ব্যবস্থাপক বলেন, গত দুই অর্থবছরে মৎস্য কেন্দ্র থেকে সরকারি রাজস্ব আয় হয়েছে ৩ কোটি ২১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে বলেও তিনি জানান। এজন্য কক্সবাজারের বাঁকখালী নদী তীরের সরকারি মাছ অবতরণ ও বিক্রি কেন্দ্রের বাইরে থাকা কয়েকটি ব্যক্তিগত জেটি ও বিক্রি কেন্দ্র বন্ধ করে দিতে হবে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –