সেদিন বেঁচে ফিরলেও এবার নীরবে বিদায় নিলেন বীরাঙ্গনা ইদু মাস্টারনি
প্রকাশিত: ১৩ মার্চ ২০২৪
জন্মসনদ ও এনআইডি না থাকায় শেষ পর্যন্ত কোনো প্রকার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ছাড়াই চির বিদায় নিলেন পথে পথে ঘুরে বেড়ানো প্রিয় মুখ বীরাঙ্গনা হাসিনা বানু ওরফে ইদু মাস্টারনি (৮৭)।
মানসিক ভারসাম্যহীন এই মানুষটিকে চেনে না দিনাজপুর শহরে এমন মানুষ মেলাভার।
দিনাজপুর শহরের পাক পাহাড়পুর মহল্লার ভাগিনা মনোয়ার আলী মানুর বাসায় দীর্ঘ এক মাস বিছানায় শয্যাশায়ী থাকার পরম মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মঙ্গলবার বাদ আছর জানাজা শেষে শেখ ফরিদপুর গোরস্থানে মরহুমার দাফন কার্য সম্পন্ন করা হয়।
একমাত্র ছেলে মাহাবুব আলী স্বপন (৬৩) ঢাকা থেকে আসতে না পারার কারণে জানাজা ও দাফনে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। তিনি মোবাইল ফোনে জানান,তার মা বেঁচে থাকা অবস্থায় ২০২২ সালে সদর উপজেলায় একটি বাড়ির জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কেউ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। অবহেলায় অযত্নে তার মা এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন।
একাত্তরে সর্বস্ব হারানো এই শিক্ষিকা সবার কাছে ইদু মাস্টারনি বলে পরিচিত। তার পুরো নাম হাসিনা বানু।
হাসিনা বানুর ভাগিনা মনোয়ার আলী মানু বলেন, তৎকালীন মুন্সিপাড়ায় আমার খালা বসবাস করতেন। ইদু মাস্টারনি যেন একাত্তরের বিভীষিকাকে বুকে নিয়েই সদর হাসপাতালের সামনে রোজ যেতেন। বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত লিলি মোড়ে বসে থাকতেন। বাড়ি ফেরার পথে শহরের পাক পাহাড়পুরে শান্তির চা দোকানের পাশে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত বসে থাকতেন। তিনি বেশিরভাগ সময়ই একা একা কখনো বাংলায় আবার কখনও ইংরেজিতে কী যেন বিড়বিড় করে বলতেই থাকেন। তবে কথা বললে তিনি একটি কথা স্পষ্টভাবেই বলেতেন- ‘আমার নামে আপনারা একটা দরখাস্ত লিখে দিবেন তো?’।
ইদু মাস্টারনি বা হাসিনা বানু একজন শিক্ষিত নারী। তিনি স্বাধীনতার আগে চাকরি করতেন বাংলা স্কুলে (তৎকালীন কিন্ডার গার্টেন)। সেখানে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি করতেন। ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন সময়ে হাসিনা বানু দিনাজপুর সদর হাসপাতালে নার্স হিসেবে সেবা দিতেন। এ সময়ই তার জীবনে নেমে আসে চরম বিপর্যয়। ইদু মাস্টারনি ১৯৭১ সালে হারান তার দুই সন্তান স্বপন (১১) এবং কুপনকে (৮)।
১৯৭১ সালের এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহের কোনো এক দিনে বিহারি রজাকাররা ইদু মাস্টারনিকে ধরে নিয়ে যায় খান সেনাদের কাছে। সময়টি ছিল দিনাজপুরের যুদ্ধকালীন ইতিহাসের চরমতম সময়। সবেমাত্র দিনাজপুরকে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে, ফলে পাকিস্তানি হায়েনারা ছিল হায়েনার চেয়েও হিংস্র এবং নিষ্ঠুর। দিনাজপুরে চলে এলাপাতাড়ি হত্যা-নির্যাতন এবং পাশবিক উল্লাস। সেদিন ধরে আনা ইদু মাস্টারনির সঙ্গেই ছিল তার দুই শিশু সন্তান স্বপন (১১) ও কুপন (৮)।
শিক্ষিত নারী হয়ে তিনি স্কুলে এবং পরে হাসপাতালে চাকরি করতেন এটাই ছিল তার অপরাধ। এছাড়া বাসায় বাসায় গিয়ে তিনি টিউশনিও করাতেন। সেসময় বাচ্চা দুটি বাধার কারণ হওয়ায় খান সেনারা তাদেরকে জোর করে ইদু মাস্টারনির বুক থেকে ছিনিয়ে নিয়ে তার চোখের সামনেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে কয়েক টুকরা করে ফেলে। ইদু মাস্টারনি তার সন্তানদের বাঁচাতে এগিয়ে এলে খান সেনারা তাকেও রাইফেলের বায়োনেট ও বাট দিয়ে মাথাসহ সমস্ত শরীরে উপর্যুপরি আঘাত করে। এতে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এক সময় পাকিন্তানি হায়েনারা ইদু মাস্টারনিকে মৃত ভেবে ট্রাকে করে দিনাজপুরের বধ্যভূমি কাঞ্চন নদীর পাড়ে ফেলে দেয়।
কিন্তু জ্ঞান ফিরে অনেকটা বিবস্ত্র ও রক্তাক্ত শরীর নিয়েই ইদু মাস্টারনি হামাগুড়ি দিয়ে শেষরাতের দিকে তার পাহাড়পুরের বাসায় পৌঁছে গোঙ্গাতে থাকেন। এ সময় তার বোন তাকে ঘরে নিয়ে শরীরের জমাটবাঁধা রক্ত, বালু ও কাদা পরিষ্কার করে তাকে অতি গোপনে পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাট হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান। হাসপাতালে ভর্তির পর ইদু মাস্টারনির খোঁজ আর কেউ রাখেনি। পরিবারের লোকজন ভারতের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়ে প্রাণে রক্ষা পেয়েছিলেন বলে জানা যায়।
সেসময় তার স্বামী বড় সন্তান তপনকে নিয়ে ভারতের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। পরে তিনি ফিরে এলেও ছেলে তপনের আর কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।
স্বাধীনতার পর ইদু মাস্টারনি দেশে ফেরেন। এরপর তার কোলজুড়ে আসে চতুর্থ সন্তান মাহাবুব আলী। দীর্ঘ জীবনে অনেকটা সংগ্রাম করেই বেঁচে ছিলেন এ মহিয়সী শিক্ষক। পাকিস্তাানি সেনাদের নির্যাতনে সেদিন হাসিনা বানু ওরফে ইদু মাস্টারনি প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন সত্য, কিন্তু তিনি মৃত্যু অবধি কোনো ভাতা কিংবা রাষ্ট্রীয় কোনো সুবিধা পাননি।
দিনাজপুর শহরের পাক পাহাড়পুর মহল্লার মরহুম মো. লালুর স্ত্রী বীরঙ্গনা হাসিনা বানু ওরফে ইদু মাস্টারনি। স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যান। কোথায় আছেন কেউ জানে না। আর বেঁচে থাকা একমাত্র সন্তান মাহাবুব আলী ঢাকায় দিনমজুরের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –- সৌন্দর্য ধরে রাখতে নজর দিন সঠিক খাদ্যাভ্যাসে
- রংপুরে র্যাবের অভিযানে ফেন্সিডিলসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার
- স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির দাবি বেরোবি ছাত্রলীগের
- রাফাহতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২১ ফিলিস্তিনি নিহত
- দ্রব্যমূল্য নিয়ে চাপের মধ্যে আছি: ওবায়দুল কাদের
- প্রয়োজনে শুক্রবারও ক্লাস: শিক্ষামন্ত্রী
- জনগণের কথা চিন্তা করে আইন তৈরি করতে হবে: আইনমন্ত্রী
- তৃণমূল মানুষের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার
- হাওরের ৯৭ শতাংশ বোরো ধান কাটা শেষ
- ৩০ হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার আবাসন সুবিধা পাবে
- চাকরিতে প্রবেশে বয়সের বিষয়ে যা জানালেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী
- ‘অভিবাসন নিয়ে অপতথ্য রোধে কাজ করবে বাংলাদেশ-ইতালি’
- ঢাকায় আসছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব
- অবৈধ জাল ব্যবহার বন্ধ করা হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
- ১৪ দিনে হিটস্ট্রোকে ১৫ মৃত্যু: স্বাস্থ্য অধিদফতর
- উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে তীব্র ঝড়
- ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করেছে’
- হিলিতে ভুর্তুকি মূল্যে কৃষক পেল হারভেস্টার মেশিন
- হাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
- দিনাজপুরে নাশকতা মামলায় ছাত্রদল ও যুবদলের দুই নেতা কারাগারে
- ধূমপান বা তামাক স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ক্ষতিকর
- সত্যি কী আমিরাতের গোল্ডেন ভিসা পাচ্ছেন শাকিব খান?
- হজের জন্য মাহরাম না পেলে নারীদের করণীয় কী?
- রাশিয়ার সাথে সম্ভাব্য সংঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে ন্যাটো: মস্কো
- অপসাংবাদিকতা মূল সাংবাদিকতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- ট্রেন সুবিধায় আরো এক ধাপ এগিয়ে গেল দক্ষিণবঙ্গ: রেলমন্ত্রী
- ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে আমরা পাপমুক্ত হয়েছি’
- ‘মৎস্যসম্পদ রক্ষার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে হবে’
- উপজেলা নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে যে নির্দেশনা দিল ইসি
- টেনিস খেলাকে জনপ্রিয় করতে কাজ করা হচ্ছে: নৌপ্রতিমন্ত্রী
- সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ: অর্থমন্ত্রী
- দিনাজপুরের হাকিমপুরের হিলিতে শিক্ষক-কর্মচারী কো-অপারেটিভ ক্রেডিট
- ৬ শতাধিক পটল গাছ উপড়ে ফেলল দুর্বৃত্তরা, দিশেহারা কৃষক
- রাণীশংকৈলে ভুট্টাক্ষেত থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- বীরগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
- বীরগঞ্জে হবিবর রহমান স্মৃতি রোগ প্রতিরোধ গবেষণা কেন্দ্র উদ্বোধন
- ইস্তিসকার নামাজের সময় ও বিধি-বিধান
- ঈদের দিন বন্ধ থাকবে আন্তঃনগর ট্রেন
- গোর-এ-শহীদ ময়দানে ৬ লাখ মুসল্লির নামাজ আদায়
- টানা ৬ দিন বন্ধের পর হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানি শুরু
- দিনাজপুর জেলা ছাত্রলীগের ৫০০ বৃক্ষের চারা বিতরণ-রোপণ
- হজের জন্য মাহরাম না পেলে নারীদের করণীয় কী?
- জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান
- দিনাজপুরে হলিল্যান্ড কলেজে ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
- রাইমা সেন কেনো হুমকি!
- দিনাজপুরে অনাবৃষ্টি আর দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে লিচুর মুকুল
- দাঁতের যন্ত্রণায় আইসক্রিম খেতে পারছেন না?
- ঘোড়াঘাটে ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবস পালিত
- রূপপুরে নতুন বিদ্যুৎ লাইন চালু মঙ্গলবার
- দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, পথেই ঝরল ২ প্রাণ