• শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ৩ ১৪৩১

  • || ০৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

হাতপাখায় চলে আজিজুলের সংসার

প্রকাশিত: ২ মে ২০২৪  

৮৪ বছর বয়সী আজিজুল ইসলাম। প্রায় ৩০ বছর ধরে হাতপাখা বিক্রি করে সংসার চালান তিনি। এই হাতপাখা বিক্রি করে দুই ছেলে ও দুই মেয়ের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে হয় তাকে। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া বৃদ্ধ আজিজুল জীবনের শেষ বয়সে এসেও সংসারের খরচ জোগাতে বিক্রি করছেন হাতপাখা। বৃদ্ধ আজিজুল ইসলাম নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চান্দখানা কেতকীবাড়ী গ্রামে বাসিন্দা। 

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে হাতপাখা বিক্রি করেন বৃদ্ধ আজিজুল। পৌর শহরের উপজেলা মোড়ের পাশের গলিতে কথা হয় তার সঙ্গে ।

হাতপাখা তৈরির অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, সংসারের ঘানি টানার পাশাপাশি মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে ক্লান্ত তিনি। প্রতিদিন কাপড় দিয়ে হাতপাখা তৈরি করে বাজারে বিক্রি করার জন্য নিয়ে আসেন তিনি।

আজিজুল ইসলাম জানান, সংসারের ঘানি টানার পাশাপাশি ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে গিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয় তাকে। পরিবারের সহযোগিতায় কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয় এসব হাতপাখা।

তীব্র তাপপ্রবাহ ও লোডশেডিংয়ের কারণে আজিজুলের হাতপাখার কদর বেড়েছে। গরমের শুরুতে প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ পিস হাতপাখা বিক্রি হতো। এখন হাতপাখার চাহিদা বেড়েছে। প্রতিদিন আগের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি হাতপাখার বিক্রি করছেন ৫০ থেকে ৭০ টাকা। এভাবে ছয়মাস চলে তার ব্যবসা। বাকি সময় বাড়িতে কৃষি কাজ করে চলে সংসার।

আজিজুল ইসলাম জানান, এবার তাপদাহ বেশি থাকার কারণেই বিক্রি বেশ ভালোই হয়েছে। এতে খুব খুশি তিনি। সংসারের ঘানি টানার পাশাপাশি ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে গিয়ে প্রায়ই তাকে হাটবাজারে হাতে করেই হাতপাখা বিক্রি করতে হয়। তিনি লেখাপড়া না জানলেও সন্তানদের শিক্ষিত করতে জীবন যুদ্ধে নেমেছেন।

তিনি আরো বলেন, কাপড়ের হাতপাখা তৈরির পর বিক্রি করেই চলে আমার সংসার। এ থেকে যে অর্থ উপার্জন হয় সেটি দিয়ে সংসার চালাতে হয়। তার ছেলে পরিবার নিয়ে অন্যের বাসায় কাজ করে কোনো রকম নিজের সংসার চালান। তার ছোট মেয়ে নবম শ্রেণি ও আরেক মেয়ে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। 

ক্রেতা শাহিনুর রহমান বলেন, ৪০ থেকে ৪১ ডিগ্রির ওপরে তাপমাত্রা। এরমধ্যে অনেক সময় থাকে না বিদ্যুৎ। আবার বিদ্যুৎ থাকলেও ফ্যানের বাতাস গরম। তবে কষ্ট হলেও হাতপাখার বাতাস অনেক শীতল। চাচার কাছে অনেক রংঙের হাতপাখা পাওয়া যাচ্ছে। দামও খুব বেশি না। তাই একটা নিলাম।

সুজন ইসলাম নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ভ্যাপসা গরমে অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় হাতপাখা কিনতে হলো। ৬০ টাকা দিয়ে একটি হাতপাখা কিনলাম। তালের পাখার চেয়ে কাপড়ের হাতপাখা বেশি দিন থাকে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –