• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়ছে বাংলাদেশের মাছের চাহিদা

প্রকাশিত: ২০ মার্চ ২০২২  

যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের সামুদ্রিক মাছ রপ্তানির উজ্জ্বল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি জানান,  বাংলাদেশ থেকে প্রচুর বাগদা ও অন্যান্য চিংড়ি নিতে আগ্রহী উন্নত দেশগুলো। এ জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন, রোগমুক্ত পোনা সরবরাহ, আন্তর্জাতিক পর্যায়ের মাননিয়ন্ত্রণ ল্যাবরেটরি স্থাপন ও পরিচালনা, প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।  

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে অনুষ্ঠিত নর্থ আমেরিকা সি ফুড এক্সপোতে যোগ দেয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল।

গত ১৩ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই এক্সপোতে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি, ক্রেতা, উৎপাদক, কারিগরি বিশেষজ্ঞরা অংশ নেন। গ্লোবাল সি ফুড অ্যালায়েন্স ও দ্য সেন্টার ফর রেসপনসিবল সি ফুডের উদ্যোগে আয়োজিত এই এক্সপোর বাংলাদেশের পার্টনার ছিল বাংলাদেশ শ্রিম্প অ্যান্ড ফিশ ফাউন্ডেশন।  

পরে নিউ ইয়র্কে মেলায় যোগ দেওয়ার অভিজ্ঞতা ও ফলাফলের বিভিন্ন দিক নিয়ে কালের কণ্ঠের সঙ্গে কথা বলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। তিনি বলেন, মৎস্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনন্য এবং বৈপ্লবিক অগ্রগতি অর্জন করলেও, নানা কারণে বিদেশে রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছিল। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রপ্তানীকৃত চিংড়ির ভেতর নানা ধরনের কেমিক্যাল ঢুকিয়ে দেওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে আস্থা হারিয়েছিল বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় মৎস্য খাত।

মন্ত্রী আরো বলেন, আমরা এবার মান নিয়ন্ত্রণের বিষয়গুলো কঠোরভাবে তদারকি করব। সরকারের পক্ষ থেকে এবার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের মাছের বিপুল রপ্তানির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।  

কালের কণ্ঠকে শ ম রেজাউল করিম বলেন, সরকারের বক্তব্যে এবার ক্রেতাদের আস্থা রাখতে দেখেছি। সম্ভাবনা যাচাইয়ের জন্য গ্লোবাল সি ফুড অ্যালায়েন্সের প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ চেম্বারলিনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ভ্রমণ করবে।    

এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, মৎস্য ও মৎস্যপণ্য (পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০২০ শিরোনামে সরকার নতুন আইন প্রণয়ন করেছে। বাগদা চিংড়ির গুণগত মান নিশ্চিতের জন্য রোগমুক্ত চিংড়ি পোনা উৎপাদন ও সরবরাহ, বিজ্ঞানসম্মত উত্তম মৎস্য চাষ পদ্ধতি অনুসরণ ও আইনের কঠোর প্রয়োগসহ নানা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।  

চিংড়ি চাষ ও প্রক্রিয়াকরণে 'ফিশ অ্যান্ড ফিশারি প্রডাক্টস অফিশিয়াল কন্ট্রোল প্রটোকল' ও 'অ্যাকুয়াকালচার মেডিসিন্যাল প্রডাক্টস নিয়ন্ত্রণ নির্দেশিকা' প্রণয়ন ও অনুসরণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এ ছাড়া চিংড়িচাষিদের উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং চিংড়ি চাষে গুচ্ছ চাষ পদ্ধতির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের বাগদা চিংড়ির ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চিংড়ির থার্ড পার্টি সার্টিফিকেশন প্রবর্তনের জন্য গ্লোবাল সি ফুড অ্যালায়েন্সসহ সংশ্লিষ্টদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।   

কালের কণ্ঠকে শ ম রেজাউল করিম বলেন, আমি আশা করছি যেভাবে এবারের এই মেলা থেকে বিদেশি ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা সম্ভব হয়েছে, তাতে মাছ রপ্তানি করে, বাংলাদেশ অচিরেই বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হবে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –