• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

এক পণ্যের ঘোষণা দিয়ে অন্য পণ্য আমদানি, হিলিতে মালামাল জব্দ

প্রকাশিত: ১১ মে ২০২১  

দিনাজপুরের হিলি বন্দর থেকে খাদ্যপণ্যের পরিবর্তে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কাপড় নিয়ে আসায় দুই ট্রাকসহ সেগুলো জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন। এই ট্রাক দুটিতে ঘোষণা দেয়া তালমিছরির সঙ্গে মিস ডিক্লারেশনকৃত বিপুল পরিমাণ কাপড়, ওষুধসহ ফেব্রিকস উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার পর থেকেই ট্রাকের চালক ও সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টসহ কাউকে পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার (১১ মে) প্রেস ব্রিফিংয়ে হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, আটককৃত ভারতীয় অবৈধ এস মালামালের মধ্যে রয়েছে- ২২০৪ পিস শাড়ি, ওড়না ৪০৩৩ পিস, লুঙ্গি ১৮১২ পিস, ১৮৪টি থ্রিপিস পিস, পাঞ্জাবি ১২২ পিস, ব্রা ১৮২৪ পিস, শার্ট ৫১ পিস ও জিলেট ১৮ পিস। এছাড়াও ওষুধসহ বিভিন্ন ফেব্রিকস পণ্য রয়েছে যেগুলোর হিসাব এখনও করা হচ্ছে।

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আমদানিকারককে আসামি করে থানায় মামলা করা হয়েছে। তাদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান ওসি।

গত রোববার (৯ মে) বিকেলে হিলি স্থলবন্দরের সামনের সড়ক থেকে ট্রাক দুটি আটক করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর-এ আলম।

এ সময় সেখানে উপজেলা চেয়ারম্যান ও আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন-উর-রশীদ, হাকিমপুর থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ, এনএসআইয়ের হিলি অফিসের সহকারী পরিচালক তজিমুল হক মানিক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

ওই চালানের কাগজপত্র যাচাই করে তারা দেখতে পান, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হরিশংকরপুরের এসএস ইন্টারন্যাশনাল নামের রফতানিকারকের কাছ থেকে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের এসএন ট্রেডিং কোম্পানি নামের আমদানিকারক ৬৮০ বস্তায় ১৭টন তালমিছরি আমদানি করেন। এর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন হিলির সিপি রোডের জেস ইন্টারন্যাশনাল। যার শুল্ক বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৫৮১ টাকা। যদিও ট্রাক দুটিতে ১৭ টন তালমিছরির পরিবর্তে অল্প কিছু তালমিছরি পাওয়া যায়। বাঁকি সব বিভিন্ন ধরনের ফেব্রিকস রয়েছে।

রোববার বিকেলে স্থানীয় সোনালী ব্যাংকে তাল মিছরির রাজস্ব পরিশোধ করে বন্দরের ওয়্যারহাউজ পানামা পোর্ট থেকে বাংলাদেশি দুইটি ট্রাকের মাধ্যমে ভারতীয় কাপড়গুলো ঢাকায় পাচার করা হচ্ছিল। এ সময় ট্রাক দুটি আটক করা হয় এবং এরপর থেকেই সেগুলো খালাস করে পণ্য আলাদা করা হয়।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন-উর-রশীদ বলেন, এভাবে পণ্য নিয়ে আসলে একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয় তেমিনভাবে বন্দরের ও ব্যবসায়ীদের দুর্নাম হয়। এই ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাক তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবি করেছে বন্দরের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে।

তিনি বলেন, কাস্টমসের সহযোগিতা ছাড়া কোনোভাবেই ঘোষণার বাইরে ভারত থেকে পণ্য আমদানি করা সম্ভব নয়। এই ঘটনা তাদের জানার মধ্যে। এভাবে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য পাচার করে আনা সরকারের লাখ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকি হয়েছে। একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ করে আসছে। এসব জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া দরকার?

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের প্রাপ্ত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি কাগজপত্রে যে মালামাল প্রদর্শন করা হচ্ছে এটি ছাড়াও শুল্ক প্রদান ব্যতীত কিছু অবৈধ মালামাল ট্রাকে বহন করা হচ্ছে। এমন সংবাদে রোববার বিকেলে বন্দর থেকে বের হওয়ার পর (ঢাকা মেট্রো-ট ১৫-৪৭৬১) ও (ঢাকা মেট্রো-ট ১৫-৫৯৭০) নম্বর সম্বলিত দুটি আটক করা হয়।

ট্রাক দুটিকে আটক করে পুলিশের মাধ্যমে নিয়মিত মামলা দায়েরের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি কাস্টমসের কারো এ বিষয়ে কোন গাফিলতি আছে কি-না বা কেউ এর সাথে জড়িত আছে কি-না সে বিষয়টি দেখা হচ্ছে। যদি কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

হিলি স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের উপ-কমিশনার সাইদুল আলম বলেন, ঘটনার দিন ষ্টেশনে ছিলাম না। ট্রাকের সব মালামাল দেখা সম্ভব না। ১০ শতাংশ কিংবা ১৫ শতাংশ দেখা হয়। তবে ঘোষণার বাইরে অন্য মালামাল নিয়ে আসার এই ঘটনায় রাজস্ব ফাকির যে পায়তারা করা হচ্ছিল তার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তিনি বলেন, এর গত ২ সপ্তাহ আগেও এই ধরনের একটি ঘটনা রয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান তিনি।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –