• মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

খানসামায় মাঠ ভরা সবুজ ধানের শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

প্রকাশিত: ৩ অক্টোবর ২০২৩  

 
মাঠজুড়ে শুধু সবুজ আর সবুজ ধানের চারা। যেদিকেই চোখ যায় শুধু সবুজের সমাহার। ফসলের মাঠ যেন সবুজ চাদরে ঢাকা। দিনাজপুরের খানসামায় রোপা আমন ধান ক্ষেতে সবুজের সমারোহ। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে নজর কাড়ছে আমন ক্ষেত। চারিদিকে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। কৃষকের আগামীর সোনালী স্বপ্ন লুকিয়ে আছে সবুজ ধান ক্ষেতের মাঝে। শরতের রোদ-বৃষ্টির খেলায় সবুজের আভা ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে।

মাঠে মাঠে হাওয়ায় দুলছে আমন ধানের সবুজপাতা, আর আনন্দে দুলছে কৃষকদের মন। কৃষকের মনে উঁকি দিচ্ছে এক ভিন্ন আমেজ। সবুজ ঘেরা রোপা আমনের মাঠ দেখে বারবার ফিরে তাকায় কৃষক, থমকে দাঁড়ায় পথিক।

এবার বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই বৃষ্টি না হওয়ায় রোপা আমন লাগাতে কৃষকদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। আষাঢ় মাসের মাঝামাঝিতে আমন ধান চাষ করার নিয়ম থাকলেও বৃষ্টি না হওয়ায় তা পারেননি কৃষকরা। ধান রোপন নিয়ে কৃষক পড়ে বিপাকে। দেরীতে বৃষ্টি হলেও ইতিমধ্যে আমন রোপন লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এমনকি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ বেশি হয়েছে।

খানসামা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ১৩ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে চাষাবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ৭৬০হেক্টর জমিতে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, আমন ধানের ক্ষেত প্রকৃতির খেয়ালে গাঢ় সবুজ রঙ ধারণ করেছে। সবুজে ঘেরা রোপা আমনের মাঠে কৃষক ব্যস্ত সময় পার করছেন। ধানগাছ ভাল রাখতে ও ধানের উৎপাদন বাড়াতে কৃষকরা ক্ষেতের ঘাস পরিষ্কার, সার ও বালাইনাশক ঔষধ প্রয়োগ ও পার্চিংসহ সার্বক্ষণিক পরিচর্যা করছেন। মাঝে মধ্যে হচ্ছে বৃষ্টি, আমন আবাদের জন্য আবহাওয়া রয়েছে অনুকূলে। তাই ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে কৃষকরা।

ধানের চারাগুলো থেকে কয়েকদিন পর বের হবে থোর। আর কিছুদিন পরই কৃষকদের আমন ক্ষেতে বের হবে মৌ মৌ গন্ধ। এর পরই সকলের নজর কাড়বে সোনালি ধান। সোনালী স্বপ্নে সোনালী ধানে ভরে উঠবে কৃষকের শুন্য গোলা। গৃহীনির মুখে ফুটবে হাঁসি।উপজেলার আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের ছাতিয়ান গড় গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক,শাহজালাল ও আব্দুল মতিনসহ কয়েকজন কৃষকের সাথে বললে তারা সকালের সময়কে জানায়, এবার ভরা বর্ষায় বৃষ্টি না থাকায় সেচ দিয়ে জমি চাষাবাদ করতে হয়েছে। জ্বালানি তেল, সার, বীজ ও কীটনাশকের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বিঘা প্রতি আমন আবাদে খরচ হয়েছে আগের তুলনায় প্রায় এক থেকে দেড় হাজার টাকা বেশি। যদি ভাল ফসল হয় তবেই এসব পুষিয়ে নিতে পারবো।

বেলাল ইসলাম নামে অপর আরেক কৃষক জানান,পোকামাকড় কিংবা আগাছা জনিত কারণে যাতে ফসল নষ্ট না হয় সে কারণে সব সময় নজরদারি করছি। সময় মতো জমিতে ধান রোপন ও সার সহ বিভিন্ন কীটনাশক প্রয়োগ করতে পেরেছি বলে ধান গাছ দ্রুত বেড়ে উঠেছে। মাঠে এসে জমির দিকে তাকালে মন খুশিতে ভরে উঠে।

গোয়ালডিহি ইউনিয়নের কৃষক ওবাইদুর রহমান বলেন, কয়েকদিনেই হামার ফসলের মাঠ অনেক সুন্দর হইছে। চারদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ দেখা যাচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ইতিমধ্যে উপজেলায় শতভাগ রোপা আমন রোপণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে রোপা আমন ধানের ক্ষেত সবুজে ভরে উঠেছে। কৃষি অফিস থেকে আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছি। মাঠপর্যায়ে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাগণ কৃষকদের সময়মত পরামর্শ দেওয়ায় আমন ক্ষেতে গত বছরের থেকে এবার রোগবালাই কম। তাই এবারও আমরা ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছি।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –