• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ঘোড়াঘাটে অসহায়কে ঘর উপহার দিলেন এমপি শিবলী সাদিক

প্রকাশিত: ৩ অক্টোবর ২০২০  

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছে বৃদ্ধা মোছা. মল্লিকা বেগম (৭০)। উপজেলার একটি মাটির ঘরে তার বসবাস। অসহায় ওই বৃদ্ধাকে দেখাশোনা করার জন্য বাড়িতে কেউ নেই বললেই চলে। মেয়েকে বিয়ে দেয়ার পর কোনো মতে চলে তার সংসার। চলমান টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে সেই মাটির ঘরটিও ভেঙে যায়। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক ওই বৃদ্ধাকে একটি টিনের ঘর উপহার দিয়েছেন।

ঘর পেয়ে আবেগ আপ্লুত মল্লিকা বলেন, বৃষ্টির পানিতে মাথা গোঁজার ঠাঁই ঘরটি ভেঙে গেলেও আল্লাহর রহমত সরে যায়নি। আমাদের এমপি চারদিনের মধ্যেই ঘর তৈরি করে দিয়েছেন। আল্লাহ উনার মঙ্গল করুন।

শুধু মল্লিকা নয়, ঘোড়াঘাট উপজেলার ১০ জন অসহায় ও চলমান বন্যায় মানবেতর জীবনযাপন করা মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নিজ অর্থায়নে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ঘোড়াঘাট ওসমানপুর, কলেজপাড়া গ্রাম, আজাদ মোড়, বাসস্ট্যান্ড, লালমাটি, শ্যামপুরসহ বেশ কিছু স্থানে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় জলাবদ্ধতায় সৃষ্টি হয়। এতে ওই এলাকাগুলো অনেক অসহায় পরিবার গৃহহারা হয়ে পড়েন। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ে ১০টি পরিবার।

শুক্রবার (২ অক্টোবর) দুপুরে ঘোড়াঘাট নয়াপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নতুন টিন দিয়ে ঘেরা এক রুম বিশিষ্ট একচালা টিনের ছাউনির ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে আছেন বৃদ্ধা আঞ্জুয়ারা বেগম। কথা হয় তার সঙ্গে।

নতুন ঘর পেয়ে তিনি বলেন, বৃষ্টির পানিতে মাটির ঘরটি পড়ে ভেঙে গেছে। পরে এমপি এসে আমাকে একটা টিনের ঘর করে দিয়েছে। আল্লাহ তাকে হায়াত দিন।

জানা গেছে, প্রথমে ওই উপজেলার তিনটি গ্রাম থেকে খুঁজে খুঁজে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতাজনিত কারণে বাড়িঘর ভেঙে যাওয়া পরিবারের তালিকা তৈরি করেন ঘোড়াঘাট পৌরসভার মেয়র আব্দুস সাত্তার মিলন এবং উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে সেই তালিকা অনুযায়ী ব্যক্তিগত অর্থায়নে এক রুম বিশিষ্ট টিনশেড ঘর তৈরি করে এসব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে উপহার দিয়েছেন এমপি শিবলী সাদিক।

নতুন ঘর পাওয়া পরিবারগুলো হচ্ছে- পৌর এলাকার কলেজপাড়া গ্রামের আবুল কালামের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেগম (৬৫), মৃত অমেন্দ্রনাথের স্ত্রী শান্তি রানী (৬০), মৃত শফিউল ইসলামের স্ত্রী মালেকা বেগম (৬২), মৃত আব্দুল হাকিমের স্ত্রী মল্লিকা বেগম (৭০), মৃত ডেভিড সরেনের স্ত্রী ইভা হেমরম (৫০), হবিবর রহমানের স্ত্রী আছিয়া বেগম (৫৫), নয়াপাড়া গ্রামের মৃত কছিম উদ্দীনের ছেলে ফকর উদ্দীন (৬০),ফফিজ উদ্দীনের ছেলে জয়দুল (৪০), মৃত সাইফুল ইসলামের ছেলে কাশেম (৪৩) ও পালশা বিলপাড়া গ্রামের মৃত ফারাজ উদ্দীনের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দীক (৭০)।

পৌর মেয়র আব্দুস সাত্তার মিলন বলেন, জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজ নিতে এমপি ঘোড়াঘাটে এসেছিলেন। সেই সময় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করতে এবং তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করতে কঠোর নির্দেশনা দিয়ে গিয়েছেন। এ ছাড়াও তাৎক্ষণিক ব্যক্তিগত তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন।

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমিসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থেকে কয়েকজন শ্রমিকের সহযোগিতায় ঘরগুলো তৈরি করেছি। এমপির কড়া নির্দেশনা ছিল, যাতে করে ঘরগুলো দ্রুত সময়ে মজবুতভাবে নির্মাণ করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে উপহার দেয়া যায়।

জানতে চাইলে দিনাজপুর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক বলেন, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো হলো প্রকৃত জনসেবা। করোনাকালে এই চার উপজেলার প্রায় ৭০ হাজার মানুষের মাঝে নিজ তহবিল থেকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছি। চলমান বন্যায় এই চার উপজেলার কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –