• মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ৫ ১৪৩০

  • || ০৮ রমজান ১৪৪৫

তীব্র শীতে নাকাল পঞ্চগড়-ঠাকুরগাঁও-কুড়িগ্রামের মানুষ

প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারি ২০২১  

দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে শীত জেঁকে বসায় বিপাকে পড়েছে নানা শ্রেণি-পেশার খেটে খাওয়া মানুষ। প্রতিদিনের মতো শনিবার সকালেও ছিল হিমেল হাওয়া ও তীব্র কুয়াশা। গত কয়েকদিন স্বল্প সময়ের জন্য রোদ উঠলেও শনিবার সারাদিনে দেখা মেলেনি সূর্যের। কমেছে দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্যও।

শনিবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে, শুক্রবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একইদিন বিকেলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ঠাকুরগাঁওয়ে মাঘ মাসের শুরু থেকেই জেঁকে বসেছে শীত। ঠাণ্ডায় দৈনন্দিন কাজকর্ম করতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। ঘন কুয়াশায় চারপাশ ঢেকে যাওয়ায় ঘর থেকে বের হওয়াই মুশকিল হয়ে পড়ে খেটে খাওয়া মানুষের জন্য। যানবাহনগুলোকে চলাচল করতে হয় হেডলাইট জ্বালিয়ে। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কুয়াশা ভেদ করে সূর্য উঁকি দিলেও শনিবার দুপুর পর্যন্ত প্রকৃতি ছিল কুয়াশায় ঢাকা।

সরেজমিনে সদর উপজেলার দেওগাঁও, ভাতগাঁও, বরুণাগাঁও ও নারগুন এলাকায় দেখা যায়, ঘন কুয়াশায় রাস্তায় লোকজনের চলাচল নেই। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় টিকে থাকতে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছেন অনেকেই। চট দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে গবাদিপশুর শরীর।

ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক কে.এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, শীতার্ত মানুষের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও শীতবস্ত্র বিতরণ করছে।

অতিরিক্ত শীতের কারণে পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই। বিশেষ করে শিশু-বৃদ্ধরা সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। অনেককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, বাকিদের বহির্বিভাগে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে পাঠানো হচ্ছে।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের ডা. মনোয়ারুল ইসলাম জানান, কয়েকদিনে সর্দি-কাশি ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। শনিবার বিকেল পর্যন্ত ২৫ শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শীতে শিশুদের গরম কাপড়ে ঢেকে রাখতে হবে, বাইরে বের হতে দেয়া যবে না, বাসি খাবার খাওয়ানো যাবে না।

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. রাকিবুল ইসলাম জানান, শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে শুক্র ও শনিবার সকালে কয়েকজন বয়স্ক মানুষ হাসপাতালে এসেছেন। এছাড়া ১১০ শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ জানান, পঞ্চগড় জেলার ওপর দিয়ে উত্তরের হিমেল বাতাস বয়ে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। আগামী দুই-তিনদিন এই আবহাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে।

কুড়িগ্রামে মৃদু শৈত্যপ্রবাহে চরম দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। ঘন কুয়াশার সঙ্গে প্রচণ্ড হিমেল হওয়া শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দিয়েছে। গত চারদিন জেলায় সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। নিম্ন আয়ের মানুষ খড়কুটায় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগে।

স্থানীয় কৃষি অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক সুবল চন্দ্র জানান, ঘন কুয়াশা থাকায় সূর্য উত্তাপ ছড়াতে পারছে না। শনিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –