• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

দিনাজপুরে গরুর ল্যাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব

প্রকাশিত: ১ সেপ্টেম্বর ২০২২  

দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলায় গবাদিপশু গরুর ল্যাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ফুলবাড়ী, খানসামা, বোচাগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলায় গরুর লাম্পি স্কিন রোগ দেখা দেওয়ায় বিপাকে খামারী ও প্রান্তিক কৃষকরা। কয়েক খামারি এ রোগে অসুস্থ হওয়ায় কম দামেই গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

ভাইরাসজনিত এ রোগের প্রকোপ থেকে গবাদিপশুকে বাঁচাতে গরুকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন প্রাণসিম্পদ বিভাগ। 

প্রাণী সম্পদ বিভাগ বলছে, এটি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। খামারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কারন নেই। কিছু নিয়মকানুন মেনে চললেই এ রোগ নিরাময় সম্ভব হবে এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন পরামর্শ খামারীদের দেওয়া হচ্ছে। আবার তারা উপজেলা পশু সম্পদ দপ্তরে (পশু হাসপাতালে) আনলে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। 

খামারি আজিজুল ইসলাম ও গৌতম মহন্ত বলেন, লাম্পি ষ্কিন রোগে (এলএসডি) আক্রান্ত গরু প্রথম দিকে কিছুই খেতে চায় না। শরীরে জ্বর আসে। দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে নাক-মুখ দিয়ে লালা বের হয়। পা ফুলে যায়। এরপর সারা শরীরে দেখা দেয় প্রচুর গুটি বা চাকা। এতে লোম উঠে যায় এবং ক্ষতের সৃষ্টি হয়। আর এই ক্ষত শরীরের চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। 

বাসুদেবপুর গ্রামের আজিজুল ইসলামের দুইটি গরু লাম্পি ষ্কিন রোগে (এলএসডি) আক্রান্ত। এছাড়াও নূরপুর গ্রামের আছির উদ্দিনের তিনটি ও গৌতম কুমার মহন্তের একটি গরু লাম্পি ষ্কিন রোগে(এলএসডি) আক্রান্ত হয়েছে। এ অবস্থা জেলার সব উপজেলায় কমবেশী এ রোগে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। ফুলবাড়ী উপজেলার দাদপুর গ্রামের স্বদেশ মহন্তের ল্যাম্পি ষ্কিন রোগের আক্রান্ত হয়ে ৮ আগস্ট ব্রাহামা জাতের ১২০ কেজি ওজনের একটি আড়িয়া গরুর মৃত্যু হয়েছে। 

বাসুদেবপুর গ্রামের গবাদিপশুর মালিক সামসুল হক বলেন, তার ১২টি গরুর মধ্যে ল্যাম্পি স্কিন রোগে (এলএসডি) পাঁচটি আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত গরুর মধ্যে তিনটি গরুকে পৃথকভাবে মশারির নিচে রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছে। তবে বর্তমানে আক্রান্ত গরুগুলো কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠছে।

অনেক খামারী স্থানীয় পশু চিকিৎসার সঙ্গে সম্পৃক্তদের পরামর্শে স্থানীয় বাজার থেকে ইঞ্জেকশনসহ এন্টিবায়োটিক ও প্যারাসিটামল ট্যাবলেট কিনে এনে আক্রান্ত গরুগুলোকে খাওয়াচ্ছেন। আবার একই সঙ্গে কাঁচা হলুদের রস, খাবার সোডা ও করপুর মিশিয়ে গরুর শরীরে মালিস করছেন বলে জানায়। 

এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রবিউল ইসলাম জানান, এটি ভাইরাস জনিত সিজিনাল চর্ম রোগ। এই রোগ মশা-মাছির মাধ্যমে ছাড়ায়। কোনো গবাদি পশু এ রোগে আক্রান্ত হলে তাকে আলাদাভাবে মশারির নিচে রাখতে হবে। আক্রান্ত গবাদিপশুকে চিকিৎসা প্রদানসহ পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আর এ রোগটি জেলার সর্বত্রই দেখা দিয়েছে। এটি আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। রোগ নিরাময়যোগ্য। এ নিয়ে খামারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। 

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –