• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সর্বশেষ:
ছয়দিনের সফরে ব্যাংককে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী গরমে ‘অতি উচ্চ ঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা: বেরোবি কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী ৩১ হাজার ৯৪৬ জন বাংলাদেশ-ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী কাতারের আমিরের সফরে যা পেল বাংলাদেশ

দিনাজপুরে গড়ে প্রতিদিন ৪৪ জন করোনায় আক্রান্ত

প্রকাশিত: ১ সেপ্টেম্বর ২০২০  

দিনাজপুরে আগস্টের শুরুতে করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করলেও শেষে এসে তা আবার কমতে শুরু করেছে। এই জেলায় করোনা শনাক্তের সাড়ে ৪ মাসে ৩ হাজার ৭৭ জন আক্রান্ত রোগীর মধ্যে শুধুমাত্র আগস্ট মাসেই আক্রান্ত হয়েছে ১ হাজার ৩৭৪ জন। আর মৃত ৬২ জনের মধ্যে ২৭ জন মারা গেছে এই মাসেই। এ মাসে ১ দিনে সর্বচ্চো আক্রান্ত ছিল ১৭ আগস্ট ৯৪ জন। সর্বোচ্চ চারজন মৃত্যুবরণ করেছে ২৯ আগস্ট।

এ মাসে গড়ে প্রতিদিন ৪৪ দশমিক ৩২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই সংক্রমণ রোধ করতে দিনাজপুরে প্রশাসনের উদ্যোগে চলছে শতভাগ বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারের বিশেষ কার্যক্রম। 

অপরদিকে বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে দিনাজপুর জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি ও স্বাস্থ্য বিভাগ নতুন করে দুটি ইউনিট চালু ও দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালের ৫০ শয্যা করোনা ইউনিটকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

দিনাজপুরে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। ঈদের আগে দিনাজপুরে গড়ে প্রতিদিন ২১ জন আক্রন্ত হলেও ঈদের পর থেকে গড়ে প্রতিদিন ৪৪ দশমিক ৩২ জন আক্রান্ত হচ্ছেন। পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা শহরসহ উপজেলা পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন প্রশাসন। মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে সহযোগিতার জন্য মাঠে নেমেছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। চলছে সচেতনতামূলক কার্যক্রম যেখানে বলা হচ্ছে মাস্ক ব্যবহার করলে করোনাভাইরাস সংক্রমণে ঝুঁকি কমে যায়। কিন্তু এরপরেও মাস্ক ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব নেই অধিকাংশ মানুষের। হিসেব অনুযায়ী প্রায় ৪০ ভাগ মানুষই মাস্ক ব্যবহার করছে না, বা করলেও সঠিকভাবে সেটি ব্যবহার হচ্ছে না। 

দিনাজপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে গত ৭ আগস্ট সকাল থেকে বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারের কার্যক্রমে জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ও উপজেলা পর্যাযে অভিযান শুরু করে প্রশাসনের কর্মকর্তারা। যেখানেই যারা মাস্ক ব্যবহার করছেন না তাদেরকে মাস্ক ব্যবহারে বাধ্য করা হচ্ছে এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রমও চালানো হয়। আর মাস্ক ব্যবহার না করায় পরের দিন ৮ আগস্ট থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা শুরু করেছে প্রশাসন। প্রশাসনকে সহযোগিতায় মাঠে কাজ করছেন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এর আগে গত ৬ আগষ্ট করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় বাধ্যতামূলক মাস্ক ব্যবহারের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিদ্ধান্ত মোতাবেক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে প্রশাসন। 

সোমাবার দুপুরে শহরের বাহাদুরবাজার মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে আসা প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ মাস্ক ব্যবহার করছেন না। আর প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ মাস্ক ব্যবহার করলেও তারা সঠিকভাবে মাস্ক ব্যবহার করছেন না। 

মাস্ক ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুর জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম বলেন, মানুষ যাতে করে করোনায় সংক্রমিত না হয় সে জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ মাস্ক ব্যবহারের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। শতভাগ মাস্ক ব্যবহারের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। এ ছাড়াও জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে কমিটি গঠন করা হয়েছে, যাতে করে সকল মানুষ মাস্ক ব্যবহার করে। আমরা আশা করছি আগামী দিনগুলোতে সচেতনতার মাধ্যমে সকলে মাস্ক ব্যবহার করবে। আর শতভাগ মানুষ মাস্ক ব্যবহার করলে করোনার যে সংক্রমণ তা অনেকাংশে হ্রাস পাবে।

দিনাজপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্রমতে, এযাবৎ (৩০ আগস্ট পর্যন্ত) দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলায় মোট ৩ হাজার ৭৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন ৬৩ জন। এ ছাড়াও আক্রান্ত রোগীর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৫৭৯ জন এবং বর্তমানে রোগীর সংখ্যা ৪৩৫ জন।

সিভিল সার্জন জানান, দিনাজপুরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ১৪ এপ্রিল। এরপর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও ঈদের পর করোনা আক্রান্ত আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যায়। পরে সচেতনতামূলক ব্যাপক কার্যক্রম অব্যাহত রাখায় বর্তমানে রোগী কমতে শুরু করেছে।  

রোগী বাড়তে থাকায় দিনাজপুর জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি ও স্বাস্থ্য বিভাগ নতুন করে দুটি ইউনিট চালু ও দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালের ৫০ শয্যা করোনা ইউনিটকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন দুটি ইউনিটের মধ্যে সদর উপজেলার গোসাইপুর ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৯০টি ও দিনাজপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসাপাতালে ৩৫টি শয্যা প্রস্তুত করা হবে।

দিনাজপুর জেলার সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল কুদ্দুছ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –