দিনাজপুরে ‘চকলেট বিক্রেতা’ নারী ৭ বছরেই কোটিপতি!
প্রকাশিত: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০
আলাদীনের আশ্চর্যের প্রদীপ পেয়েও সাত বছরে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হওয়ার বাস্তব গল্প হয়তো নেই। কিন্তু সুদের ব্যবসা করেই কোটিপতি বনে গেছেন অজোপাড়া গাঁয়ের ‘চকলেট বিক্রেতা’ নারী নাজমা খাতুন। ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, চক্রবৃদ্ধি সুদ আর প্রতারণার মাধ্যমেই কোটি কোটি টাকা, জমি ও বাড়ি করেছেন নাজমা। এদিকে মেয়ের এতো সম্পত্তির ব্যাপারে অবগত নন খোদ নাজমার বাবাও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দিনাজপুরের পার্বতীপুরে নাজমা খাতুনের বিরুদ্ধে চক্রবৃদ্ধি সুদের ব্যবসা করার অভিযোগ উঠেছে। তার কাছ থেকে সুদে টাকা নেয়ার সময় রাখা অনেক জমির কাগজ দিয়ে নানা প্রতারণাও করেন তিনি। অসংখ্য মানুষ তার সুদের ফাঁদে পড়ে হয়েছেন সর্বস্বান্ত। এর মধ্যে রয়েছেন ২০ শিক্ষক। এ নিয়ে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেই বেরিয়ে আসে নাজমা সম্পর্কে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। তালাকপ্রাপ্তা নাজমা অল্প দিনেই কীভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে তা এক রহস্য। শুধুমাত্র ভুক্তভোগী বা স্থানীয়রাই নাজমা সম্পর্কে অবগত রয়েছেন। এমনকি নাজমার বাবাও মেয়ের সম্পত্তির ব্যাপারে জানেন না বলে জানান।
নাজমা খাতুনের বাবা স্কুল শিক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, উপজেলার মোমিনপুর ইউপির যশাই সৈয়দপুর গ্রামের নুর ইসলামের সঙ্গে নাজমার বিয়ে দেই। তাদের ঘরে দুই ছেলে জন্মগ্রহণ করে। অভাব ও স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না থাকায় সংসার টেকেনি। পরে দুই ছেলেহ সে আমার বাড়িতে চলে আসে। অভাবের তাড়নায় কিছুদিন চকলেট বিক্রি করেছে। পরে ব্র্যাক পরিচালিত স্কুল পাঠাগার পরিচালনা করেছিল নাজমা।
সুদের টাকা খাটানো সম্পর্কে শিক্ষক জয়নাল আবেদীন আরো বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। তবে এখন মেয়ের অনেক টাকা, জমি ও বাড়ি আছে।
স্থানীয়রা জানান, ২০১৩ সাল থেকে সুদের ব্যবসা শুরু করেন নাজমা খাতুন। সাত বছরে প্রায় তিন কোটি টাকার আবাদি জমি ও বাড়ি করেছেন তিনি। আর সুদে লগ্নি রয়েছে আরো প্রায় দেড় কোটি টাকা। স্বল্প সময়ে এতো বিপুল পরিমাণ অর্থবিত্তের মালিক নাজমা খাতুন অপ্রতিরোধ্য গতিতে তার সুদের ব্যবসা পরিচালনা করছেন। সঙ্গে রয়েছে তার প্রতারণা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী মোফাজ্জল হোসেন নামে একজন শিক্ষক নাজমার বিরুদ্ধে দিনাজপুর আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পার্বতীপুর মডেল থানার ওসি তদন্ত মো. সোহেল রানা দায়ের করা মামলা তদন্ত করছেন। শুধু মোফাজ্জল নয়, মো. বেলাল হোসেন, হারুনর রশিদ, আব্দুল বাকি, আনিসুর রহমান,গিয়াস উদ্দিন, দেলোয়ার হোসেন সাইদী, মো. এনামুল হক, আবদুল জলিলসহ ১৯ জন সরকারি প্রাথমিক, হাইস্কুল ও মাদরাসার শিক্ষক নাজমা খাতুন ও তার সিন্ডিকেট সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছেন।
যেভাবে নাজমার ফাঁদে পড়েন ২০ শিক্ষক
গত ২৪ জুন পার্বতীপুরের ইউএনও বরাবারে যৌথ স্বাক্ষরে অভিযোগ করেন নাজমার সুদের ফাঁদে পড়া ভুক্তভোগী ২০ শিক্ষক।
অভিযোগপত্রের তথ্যানুযায়ী, সোনালী ব্যাংক হুগলীপাড়া শাখায় ভুক্তভোগী সব শিক্ষকের সঞ্চয়ী হিসাব খোলা রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে আর্থিক অনটনের কারণে ঋণ সুবিধা নিতে গেলে নাজমা খাতুন ও তার চক্রের সঙ্গে দেখা মেলে তাদের। সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার কথা বলে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয় তারা। এ সময় চেক বইয়ে স্বাক্ষরযুক্ত ফাঁকা পাতাসহ জমির মূল দলিল, স্বর্ণালংকার নেয়া হয়। পরবর্তীতে ছলচাতুরী ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে প্রদত্ত ঋণের ৫ থেকে ১০ গুণ বা তারও বেশি মুনাফা হাতিয়ে নেয় নাজমাসহ তার চক্র। তারপরও জামানতকৃত কাগজ ফেরত না দিয়েই বাড়তি টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে চেক ও ফাঁকা স্ট্যাম্প দিয়ে মিথ্যা মামলার ভয় দেখায় তারা।
নাজমা ও তার চক্রের ভাড়াটিয়া লোক আনিসুর রহমান, আল মামুন, মোতাহার হোসেন, অমেজুল হক, খালেদা বেগম বাদী হয়ে লাখ লাখ টাকার চেক জালিয়াতির মামলা, উকিল নোটিশ, এমনকি জমি বিক্রির ভূয়া বায়নামা তৈরি করে। এভাবে উপজেলার বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, কর্মচারী ও মানুষকে অবৈধভাবে নিঃস্ব করে কোটি কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন নাজম খাতুন। এমনকি তার অসাধু কাজে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য ও পার্বতীপুর সোনালী ব্যাংক হুগলীপাড়া শাখার কতিপয় কর্মকর্তা, কর্মচারীর যোগসাজস রয়েছে।
যেসব আলামতসহ আটক হন নাজমা
গত ২৪ মার্চ পার্বতীপুর বাসটার্মিনাল সংলগ্ন সুদের ব্যবসার অফিস থেকে নাজমাকে আটক করেন ইউএনও মোছা. শাহনাজ মিথুন মুন্নি। এ সময় তার কাছ থেকে অবৈধভাবে ঋণদানের ফর্ম, বিভিন্ন ব্যক্তির স্বাক্ষর করা বিভিন্ন ব্যাংকের ফাঁকা চেকের পাতা, স্বাক্ষর করা ফাঁকা ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প, সোনালী ব্যাংক হুগলীপাড়া শাখার তিনটি সিল, ৫নং চন্ডিপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বরের একটি করে সিলসহ গুরুত্বপূর্র্ণ ৩৫টি প্রামাণিক বস্তু উদ্ধার করা হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে নাজমাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
নাজমা সম্পর্কে সাবেক স্বামীর বক্তব্য
নাজমার সাবেক স্বামী নুর ইসলাম স্ত্রী সম্পর্কে কোনো ইতিবাচক মন্তব্য করেননি। তালাক দেয়ার পেছনে নাজমার বেপরোয়া চলাফেরা থেকে সৃষ্ট সমস্যাই দায়ী বলে দাবি তার।
নুর ইসলাম বলেন, নাজমার চলাফেরায় বেপরোয়া ভাব ছিল। তাই তাকে বাধা প্রদান করি। এতে তার সঙ্গে আমার বনিবনা হচ্ছিল না। উভয়ের কল্যাণের জন্য বিচ্ছেদ হয়।
স্ত্রীর ব্যাপারে জানতেই চাইলে তিনি বলেন, বিচ্ছেদের পর নাজমা তার বাবার স্কুলের সামনে চকলেট বিক্রি করত। পরে স্কুলের ব্র্যাক পরিচালিত পাঠাগারে চাকুরি করতো বলে শুনেছি। এখন সে অনেক টাকা, জমি ও কয়েকটি বাড়ির মালিক। তবে এসব কীভাবে হয়েছে তা জানি না।
রাজাবাসর মুন্সিপাড়া গ্রামের ভুক্তভোগী মোশারফ হোসেন মুন্সি বলেন, নাজমা খাতুন বর্তমানে জমি, বাড়ি, স্থাবর, অস্থাবরসহ কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার মালিক। তার কাছ থেকে যারা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ নিয়েছে তারা পাঁচ থেকে ছয় গুণ টাকা পরিশোধ করেও গচ্ছিত রাখা কাগজ ফেরত পাননি। এসব কাগজ অন্যায়ভাবে ব্যবহার করে সে ঋণ গ্রহিতাদের ভয়ভীতি, মামলা মোকদ্দমা ও সন্ত্রাসীদের দিয়ে চাপ প্রয়োগ করে জোরপূর্বক জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়।
অভিযোগের ব্যাপারে নাজমা খাতুনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। পরে অনেক বার মোবাইলে কল দিলে তিনি সাড়া দেননি। ফলে সাতে বছরের মধ্যে এতো জমি, বাড়ির অর্থের উৎস সম্পর্কে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সোনালী ব্যাংক হুগলীপাড়া শাখায় কর্মরত অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে শাখার ম্যানেজার প্রদীপ কুমার রায় বলেন, নাজমার বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনেছি। আমি নতুন ম্যানেজার হিসেবে এ শাখায় যোগদান করেছি। অভিযোগগুলো সত্য বা মিথ্যা কিন তা জানি না।
অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ দায়রা জজ আ ব ম আবু সাঈদ বলেন, ক্ষতিগ্রস্তরা আইনের আশ্রয় নিলে প্রতিকার পাবেন।
পার্বতীপুরের ইউএনও শাহানাজ মিথুন মুন্নী বলেন, প্রশাসনের অভিযানে নাজমা বেগমকে আটক করা হয়েছিল। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা পরিশোধ করলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –- মুড়ি খেলে কি ওজন কমে?
- গাজায় শিশুহত্যা চলছে, কোথায় বিশ্বমানবতা- প্রধানমন্ত্রী
- অক্টোবরে পায়রা বন্দরের প্রথম টার্মিনাল উদ্বোধন
- ঈদ সামনে রেখে চাঙ্গা অর্থনীতি
- জন্মদিন উদযাপিত: বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়
- প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস আজ
- বৃষ্টির আভাস, কমবে তাপমাত্রা
- পণ্য মজুতের দায়ে তিন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা সাড়ে ৩ লাখ
- ২৩ নাবিককে মুক্ত করতে বিশেষ অভিযানের প্রস্তাব, বিশেষজ্ঞদের ‘না’
- ল্যাপটপে কুলিং সিস্টেম কেন জরুরি?
- মিষ্টি না খেয়েও বাড়ছে ব্লাড সুগার? জেনে নিন কারণ
- ইতিহাসের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে ব্রাজিল
- গাজীপুরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আরো একজনের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ১১
- ইইউতে জিএসপি সুবিধা বাড়াতে আয়ারল্যান্ডের সমর্থন চান প্রধানমন্ত্রী
- সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পর ঢাকা-উত্তরবঙ্গ ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
- সেহেরিতে খেতে পারেন যেসব খাবার
- সৌম্যর কনকাশন নিয়ে শ্রীলংকার সন্দেহ
- জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে অরুন্ধতী
- কাজের অজুহাতে রোজা ভাঙা যাবে?
- বিএনপির কাজই ষড়যন্ত্র করা: রেলমন্ত্রী
- গাজা যুদ্ধে ক্ষুধাকে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল: ইইউ
- আগামী পাঁচ বছর দেশ পাহারা দেবো: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কোনো ব্যবসা চলতে দেওয়া যাবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেসের কাছে ডিজিটাল অগ্রগতি তুলে ধরেছেন পলক
- দুপুরের মধ্যে ৪ অঞ্চলে ধেয়ে আসছে ঝড়-বৃষ্টি
- আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করা অসম্ভব: প্রধানমন্ত্রী
- হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু
- হিলিতে পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকা
- দুই ইউপি চেয়ারম্যানসহ ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপির ১৩ নেতা আটক
- ফুুলবাড়ীতে বাল্যবিবাহ,যৌতুক ও ইভটিজিং প্রতিরোধে মতবিনিময় সভা
- রংপুর বিভাগে মাদক বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না
- নতুন বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারে আনছেন ইলন মাস্ক
- ধুলামুক্ত রাস্তা চায় হিলিবাসী
- ইসলামে মাতৃভাষার গুরুত্ব ও কর্তব্য
- ‘রমজানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিকারীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে’
- বঙ্গবন্ধুর তর্জনীর ইশারায় মুক্তিপাগল মানুষ জেগে উঠেছিল: মেয়র আতিক
- ভারত থেকে ১৩ দিনে ২৮৫ টন সজনে ডাঁটা আমদানি
- দিনাজপুরে ১০ দিনব্যাপী নারী উদ্যোক্তা মেলা
- জানা গেলো ঈদে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির তারিখ
- জনবান্ধব ভূমি সংস্কারে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার: ভূমিমন্ত্রী
- ভুটানকে ৬-০ গোলে হারালো বাংলাদেশের মেয়েরা
- হিলি রেল স্টেশন পরিদর্শনে রেলওয়ের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল
- এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি চট্টগ্রামের চিনির গুদামের আগুন
- ৭১ লাখ যুবককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে অধিদফতর: ক্রীড়ামন্ত্রী
- কাজের অজুহাতে রোজা ভাঙা যাবে?
- বীরগঞ্জে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নিবন্ধন কার্যক্রম উদ্বোধন
- চ্যাম্পিয়ন শিরোপা যাদের উৎসর্গ করলেন তামিম
- খাস জমি ইজারা দেওয়ার বিষয়ে জিরো টলারেন্স: ভূমিমন্ত্রী
- সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতল রংপুর
- সৌম্যর কনকাশন নিয়ে শ্রীলংকার সন্দেহ