• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২১ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বাবার লাশ ভেসে চলে গেছে ভারতে, দেড় মাসেও ফিরে পায়নি ছেলে

প্রকাশিত: ১৬ অক্টোবর ২০২৩  

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ঘনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা অবিনাশ চন্দ্র দাস (৭০)। গত ৩১ আগস্ট সকালে বাড়ির পাশে আত্রাই নদীতে ঝিনুক কুড়াতে গিয়ে পানিতে তলিয়ে যান অবিনাশ। এসময় স্থানীয়রা অনেক চেষ্টা করেও তাকে খুঁজে পাননি।

নিহতের স্বজনরা চিরিরবন্দর ফায়ার সার্ভিসকে অবগত করলে পরেরদিন রংপুর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের একটি ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে এসে খোঁজাখুঁজি করেও নিহতের মরদেহ পায়নি। দুইদিন পরে মৃতের স্বজনেরা ভারতে থাকা তাদের আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে জানতে পারেন নদীর পানিতে লাশ ভেসে ভারতীয় আমইল এলাকায় চলে গেছে। সেখানে স্থানীয়রা মরদেহটি উদ্ধার করেছে। পরে ওই মরদেহে একটি ছবি নিহতের স্বজনদের কাছে পাঠালে ওই ছবি দেখেই স্বজনেরা অবিনাশকে শনাক্ত করেন।

নিহতের ছেলে জোগেন চন্দ্র দাস বলেন, দেড় মাস ধরে বাবার মরদেহের জন্য ঘুরতেছি। বড়গ্রাম, মনিপুর, মোহনপুর সব ক্যাম্পেই যোগাযোগ করেছি। সবাই বিষয়টি জানেন। কয়েকবার বিএসএফ-এর সঙ্গে বৈঠকও করেছেন তারা। কিন্তু কোনো সমাধান হয় নেই। ভারতে আমাদের আত্মীয়রা আছেন তারা ছবি পাঠিয়েছেন। বাবার গলায় তুলশির মালা, কোমরে পৈতা সবই আছে। মরদেহের শ্রাদ্ধ করতে না পারলে দুর্গাপূজা করতে পারব না। কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ দ্রুত আমার বাবার মরদেহ ফিরেয়ে দেওয়া হোক।

নিহতরে মেয়ে তুলসি চন্দ্র দাস বলেন, আমার বাবার যদি হাড্ডি দুইখানও থাকে তাও নিয়ে আসি দেন। এতদিন ধরি ঘুরেছি কেউ কোনো খোঁজ দিবার পারোছে না।

স্থানীয় ভিয়াইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক শাহ বলেন, আমার ইউনিয়নের এক লোক আত্রাই নদীতে ঝিনুক কুড়াতে গিয়ে নদীর পানিতে ডুবে মারা যায়। নদীতে তার মরদেহ অনেক খোঁজাখুঁজির পরও পাওয়া যায়নি। পরে জানা গেছে মরদেহ ভেসে ভারতে চলে গেছে। আমরা স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্পে যোগাযোগ করি। পরে তার বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করে। বিজিবি ক্যাম্প হতে আমাদের জানায় মরদেহটি বাংলাদেশের এটি শনাক্ত করা হলেও মরদেহটি যে ওই পরিবারের তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তাই বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।

এ বিষয়ে দিনাজপুর ২৯ বিজিবি সেক্টরের আওতাধীন বড় গ্রাম ক্যাম্পের দায়িত্বরত কর্মকর্তা সুবেদার সফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তারা অবগত আছেন। কয়েকবার বিএসএফ এর সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছেন। খুব দ্রুতই বিষয়টির সুরাহা করার চেষ্টা চলছে।

চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম শরীফুল হক বলেন, মরদেহ যেহেতু ভাসতে ভাসতে ভারতীয় সীমান্তের অভ্যন্তরে চলে গেছে। একটু সময় লাগতেছে। বিজিবির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। তারাও চেষ্টা করছেন। খুব কম সময়ের মধ্যে একটা সুরাহা হয়তো হয়ে যাবে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –