• শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

  • || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বীরগঞ্জে শকুন রক্ষায় বনবিভাগের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

প্রকাশিত: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

দেশে এখন বিলুপ্ত ও বিপন্ন প্রায় শকুন পাখি। বিলুপ্ত প্রায় এ পাখিটি রক্ষা ও বংশ বৃদ্ধির এবং প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় দিনাজপুরের বীরগঞ্জে সিংড়া জাতীয় উদ্যানে স্থাপন করা হয়েছে শকুন উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্র।

সামাজিক বন বিভাগ দিনাজপুর ও আইইউসিএন বাংলাদেশ যৌথভাবে এ কেন্দ্রে দিনাজপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে শকুন সংগ্রহ করে নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়। পরে অসুস্থ ও দুর্বল শকুনদের চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করার পর আবার প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এক সময় শকুন এ অঞ্চলে অনেক দেখা যেত কিন্তু কালের পরিক্রমায় আস্তে আস্তে পাখিটি প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ায় মানুষের দেখার আগ্রহটা অনেক বেশি। আর এ বিলুপ্ত প্রায় পাখিটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী দেখতে ভিড় জমান কেন্দ্রটিতে। 

উত্তরবঙ্গের একমাত্র শকুন উদ্ধার ও পরিচর‌্যাকেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে প্রায় ছয় বছর আগে। কেন্দ্রটি চালু করার পর থেকে এখানে প্রতি বছরে ১০ থেকে ১৫টি শকুন উদ্ধার করে আনা হতো। তবে এবার ২১টি শকুন বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উদ্ধার করে এ কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। 

সিংড়া জাতীয় উদ্যানের শকুন পরিচর্যার দায়িত্বে থাকা বেলাল হোসেন জানান, দিনাজপুরসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অসুস্থ অবস্থায় ২১টি শকুন সংগ্রহ করা হয়। তাদের পরিচর‌্যাশেষে সুস্থ করে আবার প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হবে। বর্তমানে ২১টি শকুনকে দৈনিক প্রায় ছয় কেজি ব্রয়লার মুরগির মাংস খেতে দেওয়া হয়। এছাড়া পানি, খাবার স্যালাইন, ভিটামিন ও ওষুধ দেওয়া হয়। পরিচর্যার সুবিধার জন্য একটি পানির হাউস নির্মাণ করা হয়েছে। পানির হাউসটি এক সপ্তাহ পরপর চুন দিয়ে পরিষ্কার করা হয়।

সিংড়া জাতীয় উদ্যানের বিট কর্মকর্তা হরিপদ দেবনাথ জানান, হিমালয়ের পাদদেশে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড় জেলা অবস্থিত। এ কারণে এই এলাকায় এখনো কিছু শকুন দেখা যায়। অনেক সময় এগুলো অতিথি হয়ে আসে। এই শকুনগুলো অনেক দূর থেকে আমাদের দেশে আসার ফলে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। পাশাপাশি খাদ্যের অভাবে তারা মাটিতে পড়ে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে এ কেন্দ্রে প্রায় ৪ মাস রেখে ছেড়ে দেয়া হয়।

তিনি জানান, গত বছরে ১৩টি শকুন উদ্ধার করে পরিচর‌্যাশেষে সুস্থ অবস্থায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এবার সংরক্ষণে থাকা ২১টি শকুন নিবিড় পরিচর‌্যাশেষে তাদের সুস্থ করে মার্চ শেষে অথবা এপ্রিলের শুরুতে আবার প্রকৃতিতে ছেড়ে দেয়া হবে। 

এ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক শকুন সুস্থ অবস্থায় প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এই এলাকার মানুষ যদি সচেতন হয় এবং সহযোগিতা করেন তাহলে তাদের উদ্ধার করে পুনর্বাসন কেন্দ্রের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদান করার মাধ্যমে তাদের বিলুপ্তি থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশে প্রায় আড়াইশ' প্রজাতির শকুনের অস্তিত্ব রয়েছে বলে এক জরিপে দেখা যায়।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –