• রোববার ০৫ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২২ ১৪৩১

  • || ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

লাভের আশায় আগাম ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন ফুলবাড়ীর কৃষকেরা

প্রকাশিত: ১ নভেম্বর ২০২৩  

যেকোনো ফসল মৌসুমের আগে চাহিদা ও দাম দুটোই বেশি থাকে। ভুট্টার আগাম কোনো জাত না থাকলেও কে কার আগে ফসল উৎপাদন করতে পারে এখন চলছে সেই প্রতিযোগিতা। দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ভালো দামের আশায় হিড়িক পড়েছে আগাম ভুট্টা চাষের। সাধারণত ডিসেম্বরে ভুট্টা বীজ বপন করা হলেও এবার আগাম ভুট্টার বীজ বপন করছেন এই এলাকার কৃষকেরা।

উপজেলার শিবনগর, আলাদিপুর, এলুয়াড়ী, খয়েরবাড়ী, বেতদিঘী, দৌলতপুর, কাজিহালসহ বিভিন্ন এলাকায় আগাম ভুট্টার চাষ দেখা গেছে। কাক ডাকা ভোর থেকে চাষিরা লাঙল, কোদাল, বালতি, সুতলি নিয়ে রওনা হচ্ছেন জমিতে। দিন ছোট হওয়ায় খুব সকাল থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভুট্টা বীজ বপন করছেন তাঁরা।

শিবনগর ইউনিয়নে দেখা গেছে, একজন সুতলি দিয়ে দেড় হাত পরপর জমিতে দাগ দিচ্ছেন। দুজন দাগ দেওয়া জমিতে ছোট লাঙল টানছেন। আর ৪-৫ জন ভুট্টার বীজ বপন করছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ বপন করা বীজ মাটি দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন। এক একর জমিতে ভুট্টার বীজ বপন করতে ৮ থেকে ১০ জনই যথেষ্ট বলছেন কৃষকেরা। 

উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের পুরোনো বন্দর এলাকার মামুনুর রশীদ জানান, এবার চার একর জমিতে আগাম ভুট্টা বপন করেছেন। আগাম ভুট্টা চাষে রোগ বালাই কম হয়। আগাম ভুট্টার বিশেষ চাহিদা থাকায় দাম ভালো পাওয়া যায়। আবহাওয়া ঠিক থাকলে অন্যান্য ভুট্টার চেয়ে অন্তত দু মাস আগে এই ভুট্টা ঘরে উঠবে। 

নুরপুর গ্রামের কৃষক বাবু মিয়া বলেন, ‘অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আগে ভুট্টা চাষ করেছি। আগাম জাতের ধান কাটার পর সেই জমিতে আগাম ভুট্টা চাষ করছি। এখনো আমন ধান কাটা শুরু হয়নি বলে সস্তায় শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে। ভুট্টা বপনে মহিলা শ্রমিক তিন শ টাকা আর পুরুষ শ্রমিক চার শ টাকাতেই পাওয়া যাচ্ছে। সব দিক বিবেচনায় আগাম ভুট্টা অনেক লাভজনক হওয়ায় দিন দিন এর চাষাবাদ বাড়ছে।’ 

দাদপুর মালিপাড়া এলাকার কৃষক হাফিজুর রহমান ও শাহীন আলম জানান, কয়েক বছর থেকে দেখা যাচ্ছে আগাম ভুট্টার দাম অনেক বেশি থাকে। পরে তা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। আগাম বাজার ধরতেই কৃষকদের মধ্যে একটা অদৃশ্য প্রতিযোগিতা চলছে। 

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ভুট্টা রবি মৌসুমের ফসল। রবি মৌসুমে ভুট্টা দু বার চাষ করা যায়। আগাম পর্যায়ে ১৫ অক্টোবর থেকে নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত। দ্বিতীয় পর্যায়ে নভেম্বরের শেষ দিক থেকে ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার আগাম ভুট্টা বেশি চাষ হচ্ছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, ‘কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় উপজেলায় ভুট্টার চাষ ব্যাপক হারে বাড়ছে। এ বছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ৭৯৮ হেক্টর এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৪৪ হাজার ২৪৭ মেট্রিকটন। আশা করছি এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।’

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –