• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ২০ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

দিনাজপুরে সুস্থ হয়ে আকাশে ডানা মেললো আট শকুন 

প্রকাশিত: ৪ এপ্রিল ২০২৪  

দেশে সাতটি জাতের শকুন রয়েছে। তবে কালের পরিক্রমায় এখন বিলুুপ্ত ও বিপন্ন প্রায় শকুন পাখি। বিলুপ্ত প্রায় এই পাখিটি রক্ষা ও বংশ বৃদ্ধি এবং প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় দিনাজপুরের বীরগঞ্জে সিংড়া জাতীয় উদ্যানে স্থাপন করা হয়েছে শকুন উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্র। সামাজিক বন বিভাগ দিনাজপুর ও আইইউসিএন বাংলাদেশ যৌথ ভাবে এই কেন্দ্রে দিনাজপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে শকুন সংগ্রহ করে নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়। পরে অসুস্থ্য ও দুর্বল শকুনদের চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ্য করার পর আবার প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হয়।

২০১২সালে উত্তরবঙ্গের একমাত্র শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছে এবং ২০১৪ সাল হতে আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস উৎযাপন করা হয়। কেন্দ্রটি চালু করার পর থেকে এখানে প্রতি বছরে ১০ থেকে ১৫টি শকুন উদ্ধার করে আনা হতো। তবে ২০২৩ সালের নভেম্বর হতে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন এলাকা হতে ৮টিতে শকুন পরিচর্যা কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়।

তাদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে সুস্থ্য করে তোলার পর ৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় আনুষ্ঠানিক ভাবে ৮টি শকুনকে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগ মোঃ বশিরুল আল মামুন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও রেঞ্জের ফরেস্ট রেঞ্জার মিসেস তাসলিমা খাতুন, সিংড়া শালবন জাতীয় উদ্যানের বিট কর্মকর্তা গয়া প্রসাদ পাল, আইইউসিএন বাংলাদেশ সিনিয়র প্রোগ্রামার সহকারি সাকিব আহমেদ, কাজী জেনিফার আজমেরী।

এ ব্যাপারে আইইউসিএন বাংলাদেশ সিনিয়র প্রোগ্রামার সহকারি সাকিব আহমেদ বলেন, ২০১২সালে উত্তরবঙ্গের একমাত্র শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্রটি স্থাপন করার পর এ পর্যন্ত মোট ১৫৬টি শকুনকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে সুস্থ্য করার পর আবার প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হয়। গত  বছর অবমুক্ত করা শকুনের মধ্যে ৩টি শকুনকে স্যাটালাইট ট্যাকিং এর আওতায় আনা হয়েছিল। বর্তমানে তিব্বত, চায়না এবং নেপালে তারা অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। এবার ৮টি শকুনের মধ্যে ৩টি শকুনকে স্যাটালাইট ট্যাকিং এর আওতায় আনা হয়েছে। যা থেকে আমরা তাদের অবস্থান নিশ্চিত হতে পারবো।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগ মোঃ বশিরুল আল মামুন বলেন, হিমালয়ের পাদদেশে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড় জেলা অবস্থিত। এ কারণে এই এলাকায় এখনো কিছু শকুন দেখা যায়। অনেক সময় এগুলো অতিথি হয়ে আসে। এই শকুন গুলো অনেক দূর থেকে আমাদের দেশে আসার ফলে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। পাশাপাশি খাদ্যের অভাবে তারা মাটিতে পড়ে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে এই কেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা সেবা দিয়ে সুস্থ্য করে তোলার পর আবার প্রকৃতিতে ছেড়ে দেয়া হয়।

এ পর্যন্ত ১৫৬টি শকুন সুস্থ্য অবস্থায় প্রকৃতিতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এ এলাকার মানুষ যদি সচেতন হয় এবং সহযোগীতা করে তাহলে উদ্ধারকৃত শকুন পুনর্বাসন কেন্দ্রের মাধ্যমে চিকিৎসা প্রদান করার মাধ্যমে তাদের বিলুপ্তি থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –