• শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

  • || ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫

আম- লিচুর মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে বেরোবি ক্যাম্পাস

প্রকাশিত: ৩১ মার্চ ২০২৪  

সময় এখন বসন্ত। প্রতিটি গাছের শাখায় শাখায় নতুন ফুল। সেই ফুলে মুকুলের সমাহার। বিশেষ করে আম-লিচুর গাছগুলোতে মুকুল যেন প্রকৃতিকে অপরূপ করে তুলেছে। পল্লীকবি জসীমউদ্দিনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতার পঙক্তিগুলো বাস্তবে রূপ নিতে বাকি মাত্র কয়েক মাস। তবে মিষ্টি ঘ্রাণ বইতে শুরু করেছে এখনই। আমের পাশাপাশি গাছে লিচুর মুকুলে মুকুলে ভরে গেছে। এ দৃশ্য দেখা যাবে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ক্যাম্পাসে। 

ঋতুরাজ বসন্তে যেন সবুজ পাতার ফাঁকে এখন আমের সোনালি মুকুলের ছড়াছড়ি। ক্যাম্পাসের চারপাশ জুড়েই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ। বসন্তের বাতাসে সবুজ পাতার ফাঁকে দোল খায় মুকুল। চারদিকে মুকুলের সুবাস ছড়িয়ে পড়েছে। দৃশ্যটি যে কাউকেই কাছে টানবে। দুরন্ত শৈশবে কাঁচা-পাকা আম পাড়ার আনন্দ অনেকেরই স্মৃতিতে চির অমর।

কাঁচা অথবা পাকা আম, সবারই নজর কারে। আম তো পরে' আগে আমের মুকুল। গাছের ডালে হিমেল হাওয়ায় দুলছে আমের মুকুল। এবারের আম-লিচু গাছের মুখরিত ও তাক লাগানো মুকুলের দিকে তাকালে মনে করা যেতেই পারে যে, চলতি মৌসুমে লিচু ও আমের বাম্পার ফলন হবে বলে মনে করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কারো পছন্দ কাঁচামিঠা আম আবার কারো পছন্দ রসালো আম। 

সরজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শহিদ মুখতার ইলাহি হল, ডরমিটরির সামনে, সেন্ট্রাল মসজিদের পাশে বোটানিক্যাল গার্ডেনে, মেয়েদের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলসহ ক্যাম্পাসের অ্যাকাডেমিক ভবনগুলোর চারপাশে আম-লিচু গাছে আগাম মুকুল শোভা পাচ্ছে। আমের মুকুলে এখন মৌমাছির গুঞ্জন।

মৌমাছির গুনগুন সুরও কেড়ে নেয় অনেক প্রকৃতি প্রেমীর মন। মুকুলের মিষ্টি ঘ্রাণ যেন জাদুর মতো কাছে টানছে তাদের। এরই মধ্যে বসন্তের আগুনরাঙা গাঁদা ফুলের সঙ্গে সৌরভ ছড়াচ্ছে আম-লিচুর মুকুল। বসন্তের ফাগুন আর মুকুল যেন একই সুতোয় গাঁথা। গাছের প্রতিটি শাখা-প্রশাখায় তাই চলছে ভ্রমরের সুর ব্যঞ্জনা। মুকুলগুলো দেখতেও সোনালী।

দেখা যায়, অনেক আম গাছে মুকুলের দেখা মিলছে। যে দিকে তাকানো যায় শুধু আমের মুকুলের আভা। ভারে নুয়ে পরার উপক্রম গাছগুলো। সমারোহ মিলেছে প্রকৃতি সাজে। সারিবদ্ধ গাছে ভরপুর আমের মুকুল যেন সভা ছড়াচ্ছে নিজস্ব মহিমায়। বাতাসে মিশেছে মৌ-মৌ গন্ধ, যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা জানান দেয় আমের মুকুল। বনফুল থেকে মৌমাছি দল গুনগুন করে ভিড়তে আরম্ভ করে মুকুলে।

ক্যাম্পাসে যেসব গাছ আছে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হাড়িভাঙ্গা, গৌরমতি, বারিফর, ন্যাংড়া, আম্রপলি, ফজলি, গোপালভোগ, মোহনভোগ, সিন্দুরী, আশ্বিনাসহ নানা প্রকার গুটিআম।

এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অনুভূতি জানতে চাইলে তারা বলেন, আমের মুকুল দেখে মনে হচ্ছে গতবারের তুলনায় এবার আম ও লিচুর ফলনটা ভালো হবে। প্রকৃতির বৈরী আবহাওয়া না থাকলে ক্যাম্পাসের আম-লিচু খেতে পারবো সবাই। 

পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জেরিন আক্তার বলেন, আমাদের হলের সামনে আম ও লিচুর ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসের চারদিকে। যখনই আম ও লিচুর গাছের পাশদিয়ে হেঁটে যাই, তখন মনে হয় কবে লিচু ও আম বড় হবে, আর কবে খাব? গতবার ক্যাম্পাসের আম দিয়ে আচার তৈরি করেছিলাম। এবার বেশি করে আচার তৈরি করার প্ল্যান আছে।

আম ও লিচুর ফলন এবার কেমন হতে পারে এ বিষয়ে রংপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক রিয়াজ উদ্দীন জানান, আবহাওয়া এখন পর্যন্ত আম ও লিচু চাষিদের অনুকূলে রয়েছে। চাষিরা নিজ নিজ আম ও লিচু বাগানের পরিচর্যা করছেন। এ বছর প্রচুর পরিমাণে আম ও লিচুর ফুল এসেছে। যদি কোনো বড় ধরনের দুর্যোগ না হয় তাহলে আম ও লিচুর ক্ষতি হওয়ার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –