• সোমবার ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ||

  • বৈশাখ ১৬ ১৪৩১

  • || ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

থমকে আছে মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ, মরিচা ধরেছে রডেও

প্রকাশিত: ৩ মার্চ ২০২৪  

বিশুদ্ধ ইসলাম প্রচারের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার ভাবনা থেকে সারাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামি সংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণ উদ্যোগ নেয় সরকার। এরই মধ্যে নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে প্রায় অর্ধেক মসজিদের। ২০১৯ সালের ১১ জুন যথারীতি টেন্ডারও আহ্বান করে গাইবান্ধা গণপূর্ত অধিদফতর। কিন্তু গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পৌরসভায় ভূমি মালিকের সঙ্গে কথা না বলেই নির্মাণকাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। ফলে বাজার দর ও অধিগ্রহণ দরের মধ্যে পার্থক্য থাকায় বেঁকে বসেন তারা। বন্ধ হয়ে যায় কাজ। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় মরিচা ধরছে পড়ে থাকা লোহায়।

জানা যায়, পৌরসভার পূর্ব বাইপাস সড়কের উত্তর পাশে পুরোনো মসজিদে দানকৃত সাড়ে পাঁচ শতাংশ জমির সঙ্গে আরো ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে তাতে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র করার সিদ্ধান্ত নেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে ২০১৯ সালের ১১ জুন যথারীতি টেন্ডারও আহ্বান করে গাইবান্ধা গণপূর্ত অধিদফতর। ফলে মরিচা ধরছে পড়ে থাকা লোহায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার ধারে টাঙানো সাইনবোর্ডটি থেকে খসে পড়েছে মসজিদ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্যাদি। টিন দিয়ে ঘেরা বাউন্ডারির ভেতরে পড়ে রয়েছে মসজিদ নির্মাণে ব্যবহার হবে এমন বেশ কয়েকটন লোহা। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় মরিচা ধরেছে তাতে। মসজিদের পিলার তৈরিতে খনন করা হয়েছে দক্ষিণ দিকে। তাতে দেখা যায় বেশ কয়েকটি পিলার তৈরির উদ্যোগও নেয়া হয়েছিল। তারপর হঠাৎ করেই স্থগিত হয়ে যায় নির্মাণ কাজ। দেখা যায় অধিগ্রহণের জন্য নির্ধারিত জায়গার পশ্চিম পাশে এখনও রয়েছে লাল মিয়ার বাড়ি এবং উত্তর-পশ্চিম পাশে টিন দিয়ে বেড়া দেওয়া খোকন ও তার ভাইদের জমি।

জমির মালিক খোকন বলেন, আমরা মালিক হওয়ার পরেও না জানিয়ে খনন শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। শুধু তাই নয়, আমাদের জমিতে দোকান ও বাড়ি রয়েছে। যেখানে প্রতি শতক জমির বাজার দাম কয়েক লাখ টাকা, সেখানে দাম ধরা হয়েছে মাত্র ৭৫ হাজার টাকা। মসজিদ হোক সেটা আমরাও চাই। কিন্তু ক্ষতি করে নয়।

সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ আলী ও আসর উদ্দিন মুন্সী বলেন, তাড়াতাড়ি করতে গিয়ে জমির টাকা না দিয়েই কাজ শুরু করেছে ঠিকাদার। অনেকের টাকাই পরিশোধ হয়েছে। তবে এখনো দুই-তিনজনের টাকা বাকি আছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে দায়িত্বে থাকা গার্ড ও গণপূর্ত অধিদফতর গাইবান্ধায় বিভিন্নভাবে ফোন নম্বর সংগ্রহের চেষ্টা করেও তা পাওয়া যায়নি।

গণপূর্ত অধিদফতর গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম রফিকুল হাসান বলেন, আবার টেন্ডার করা হবে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, মডেল মসজিদের জন্য নির্ধারিত জায়গাটি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অধিগ্রহণ করা জমির ক্ষতিপূরণের টাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এলও শাখা থেকে প্রদান করা হয়। যোগাযোগ করলে সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে বিধি অনুযায়ী তারা টাকা পাবেন।

স্থানীয় এমপি ইঞ্জিনিয়ার নাহিদ নিগার জানান, আমিও সরেজমিনে গিয়েছি। দেখেছি মডেল মসজিদের কাজ আসলেই আটকে রয়েছে। আমি ঢাকা গিয়ে মন্ত্রীর কাছে কাজ আটকে থাকার বিষয়টি খোলাসা করব। আশা করছি খুব দ্রুতই কাজ শুরু হবে।

এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা কাটিয়ে দেশের অন্যান্য মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মতো এলাকার মানুষ যাতে নামাজের পাশাপাশি ইসলামি জ্ঞানের চর্চা করতে পারেন।

– দিনাজপুর দর্পণ নিউজ ডেস্ক –